বৌমার বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। সেই সম্পর্কের কথা পুত্র জানতে পেরেছিলেন। তখন থেকেই অশান্তির সূত্রপাত। এমনই দাবি করলেন মুম্বইয়ের তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী মানব শর্মার বাবা। শুধু তা-ই নয়, তাঁর আরও অভিযোগ, বৌমা প্রেমিকের সঙ্গে সংসার পাতার জন্য বেশি আগ্রহী ছিলেন। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ঘর থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। মৃত্যুর আগে একটি ভিডিয়োও পোস্ট করেছিলেন সমাজমাধ্যমে। সেই ভিডিয়ো পুলিশের হাতে আসে। শুক্রবার মানবের বাবা পুত্রবধূ নিকিতা এবং পুত্রের শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ দায়ের করেছেন।
মানবের বাবা ভারতীয় বায়ুসেনার প্রাক্তন আধিকারিক। তিনি বলেন, ‘‘২০২৪ সালের ৩০ জানুয়ারি মানব এবং নিকিতার বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েক দিন পরই মানব এবং আমাদের বিরুদ্ধে নানা রকম মিথ্যা অভিযোগ তুলতে শুরু করে নিকিতা। এমনকি আমাদের জানায়, সে প্রেমিকের সঙ্গে থাকতে চায়।’’ মানবের বাবার আরও অভিযোগ, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি মুম্বই থেকে আগরায় ফিরে আসেন মানব এবং নিকিতা। স্ত্রীকে তাঁর বাপের বাড়িতে যখন ছাড়তে গিয়েছিলেন তাঁর পুত্র, তখন তাঁকে ধমকানো এবং শাসানো হয়। ২৪ ফেব্রুয়ারি মানবের দেহ উদ্ধার হয়।
যদিও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন নিকিতা। তাঁর পাল্টা দাবি, মানব প্রচুর মদ্যপান করতেন। এত আসক্ত ছিলেন যে, নেশার ঘোরে নিজের ক্ষতি করার চেষ্টা করতেন। নিকিতার দাবি, ‘‘বিয়ের আগের সম্পর্ককে অহেতুক টেনে আনা হচ্ছে। ওটা আমার অতীত। মানব এত মদ খেত যে, নেশার ঘোরে আত্মহত্যার চেষ্টা করত। আমি ওকে তিন বার বাঁচিয়েছি। শ্বশুরবাড়িতেও এই ঘটনা জানিয়েছিলাম। কিন্তু ওঁরা পাত্তাই দেননি।’’
তবে নিকিতার এই দাবিকে আবার নস্যাৎ করেছেন মানবের দিদি। এক সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানান, নিকিতার বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের কথা জানতে পেরে বিবাহবিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তাঁর ভাই। মানবের দিদির দাবি, এ বছরের জানুয়ারিতে নিকিতার বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের কথা জানতে পেরেছিলেন মানব। প্রিয়া নামে এক মহিলা মানবের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিকিতার অতীত সম্পর্কে জানান। তার পর থেকে দু’জনের সম্পর্কের তিক্ততা শুরু হয়। বিবাহবিচ্ছেদের জন্য রাজি হয়েছিলেন মানব। কিন্তু নিকিতা এবং তাঁর বাবা-মা মানবকে শাসান যে, বিচ্ছেদ নেওয়া যাবে না। এমনই অভিযোগ মানবের দিদির। আর তার পরই মানবের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়।
আগরার ডেপুটি পুলিশ কমিশনার সূরয রাই জানিয়েছেন, এক তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীর আত্মহত্যার ঘটনার কথা জানতে পেরেছেন তাঁরা। তাঁর বাবা নরেন্দ্র শর্মা পুত্রবধূ এবং তাঁর বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে মানবকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ দায়ের করেছেন। মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে।