জেলাস্তরে ফের তৃণমূলের হয়ে কাজ শুরু করে দিল ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা আইপ্যাক। কিছুদিন আগেই তৃণমূল-আইপ্যাক সম্পর্ক বিচ্ছেদের জোর জল্পনা শুরু হয়েছিল। তাতে আগুনে ঘিয়ের কাজ করেছিল আইপ্যাকের অফিসিয়াল টুইটার হ্যান্ডল থেকে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে টুইটারে আনফলো করার ঘটনা। কিন্তু আনন্দবাজার অনলাইনে সেই খবর প্রকাশিত হওয়ার পরেই ফের মমতাকে টুইটারে ফলো করতে শুরু করে আইপ্যাক। যদিও, কোনওপক্ষই বিচ্ছেদ বা মনকষাকষির কথা কখনও প্রকাশ্যে স্বীকার করেনি।
ওই সময়েই জেলাস্তরে আইপ্যাকের প্রতিনিধিদের গতিবিধিও কমে গিয়েছিল। কিন্তু সম্প্রতি আবার তাঁরা স্বমহিমায় জেলাস্তরে কাজ শুরু করে দিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে নেতা-কর্মীদের কাছে একটি লিখিত বার্তাও পৌঁছে গিয়েছে আইপ্যাকের তরফে। বাংলা ও ইংরেজিতে পাঠানো হয়েছে বার্তাটি। তৃণমূলের প্রত্যেক সাংগঠনিক জেলায় একজন করে আইপ্যাকের প্রতিনিধি নিয়োগ করা হয়েছে। তাঁরাই মূলত বার্তাটি পৌঁছে দিয়েছেন নেতা-কর্মীদের মোবাইলে। ২০২০ সালের মার্চ মাসে ‘বাংলার গর্ব মমতা’ কর্মসূচির সময় প্রত্যেক বিধানসভা এলাকায় আইপ্যাকের উদ্যোগে নেতা-সাংবাদিক-আইপ্যাকের প্রতিনিধিদের নিয়ে হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ তৈরি করা হয়েছিল। সেই গ্রুপগুলি দীর্ঘদিন নিষ্ক্রিয় ছিল। এই কাজে সেই সব গ্রুপকেই কার্যকর করা হচ্ছে।
আইপ্যাকের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, জেলার অধিকাংশ সাংবাদিককে এক ছাতার নীচে রাখার জন্য এই গ্রুপটি তৈরি করা হয়েছে। গ্রুপকে আরও কার্যকর করে তুলতে এই কাজগুলি আমাদের করতে হবে। মোট তিনটি কৌশলের কথা উল্লেখ করা হয়েছে আইপ্যাকের ওই বার্তায়। ১) জেলাজুড়ে সর্বভারতীয় তৃণমূল সম্পর্কিত সমস্ত খবর ছড়িয়ে দিতে হবে। ২) সর্বভারতীয় তৃণমূল এবং জেলার সাংবাদিকদের মধ্যে একটি অবিচ্ছিন্ন সংযোগ স্থাপন করতে হবে।৩)জেলা জুড়ে সর্বভারতীয় তৃণমূলের প্রধান নেতাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ভাগ করে নিতে হবে। সেই বার্তার শেষাংশে আরও গ্রুপে সাংবাদিকদের যুক্ত করার কথা বলা হয়েছে। সঙ্গে জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির নাম দিয়ে প্রয়োজনে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
তবে এসবের মধ্যেই আবার পিকের সংস্থা আইপ্যাককে আক্রমণ করেছেন শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার বলেছিলেন, ‘‘প্রার্থীদের জেতাতে ময়দানে আইপ্যাককে দেখা যাচ্ছে না, আমাকেই খাটতে হচ্ছে।’’ সোমবার বললেন, ‘‘আইপ্যাকের জন্যই এত নির্দল হয়েছে।’’ তবে আইপ্যাক নিয়ে প্রশ্নের জবাবে কারও নাম না করে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সহসভাপতি পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘পরামর্শ যাঁর থেকেই নেওয়া হোক না কেন! যা করার দলই করবে।’’