Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Rabindranath Bhattacharjee

‘আমরা স্যরের অনুগামী’, মাস্টারমশাইয়ের সমর্থনে এ বার পোস্টার সিঙ্গুর জুড়ে

দলে থেকেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়বেন বলে এর আগে জানিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ। কিন্তু এই পোস্টারের ঘটনা ফের তাঁর তৃণমূল ছাড়ার জল্পনা উস্কে দিয়েছে।

এমন পোস্টারই চোখে পড়েছে সিঙ্গুর জুড়ে। —নিজস্ব চিত্র।

এমন পোস্টারই চোখে পড়েছে সিঙ্গুর জুড়ে। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সিঙ্গুর শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২০ ২০:০২
Share: Save:

শুভেন্দু অধিকারী, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। সিঙ্গুরের বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ এলাকায় ‘মাস্টারমশাই’ হিসেবেই পরিচিত। তাঁর নামেই এ বার পোস্টার পড়ল হুগলির সিঙ্গুরে। ব্লক সভাপতি নিয়োগ ঘিরে সম্প্রতি তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে বিরোধ বেধেছিল তাঁর। তার পরেই পোস্টারে ছেয়ে গেল গোটা এলাকা। তবে ‘দাদা’র পরিবর্তে তাতে লেখা ‘আমরা স্যরের অনুগামী’।

দলে থেকেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়বেন বলে এর আগে জানিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ। কিন্তু এই পোস্টারের ঘটনা ফের তাঁর তৃণমূল ছাড়ার জল্পনা উস্কে দিয়েছে। তবে তাতে কর্ণপাত করতে নারাজ বর্ষীয়ান এই রাজনীতিক। বরং তাঁর বক্তব্য, অনুগামী থাকা মোটেই দোষের নয়।

সোমবার সিঙ্গুরের আনন্দনগর গ্ৰাম পঞ্চায়েতের সামনে, আনন্দনগরে তৃণমূলের পার্টি অফিসের সামনে এবং সংলগ্ন রাস্তা ছেয়ে গিয়েছে রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে পোস্টারে। এমনকি আনন্দনগর তৃণমূল-কংগ্রেস কমিটির ফেসবুক পেজেও এই ব্যানার পোস্ট করা হয়েছে। তাতেই নতুন করে সিঙ্গুরে তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসে গিয়েছে।

আরও পড়ুন: অমর্ত্যকে নিয়ে সঙ্ঘাতের জের? বিশ্বভারতীকে দেওয়া রাস্তা ফিরিয়ে নিলেন মমতা​

অবশ্য বেশ কিছু দিন ধরেই তৃণমূলের অভ্যন্তরে বিরোধের কথা সামনে আসছিল, যার নেপথ্যে ছিল ব্লক সভাপতি নিয়োগ ঘিরে দ্বন্দ্ব। সম্প্রতি রবীন্দ্রনাথের অনুগামী মহাদেব দাসকে সরিয়ে সিঙ্গুরের ব্লক সভাপতি করা হয় হরিপালের বিধায়ক বেচারাম মান্নার ঘনিষ্ঠ গোবিন্দ ধাড়াকে। এরই বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান রবীন্দ্রনাথ। গোবিন্দর নামে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ থাকায়, তাঁকে ওই পদে মেনে নেওয়া সম্ভব নয় বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। এমনকি প্রয়োজনে দল ছাড়তে দ্বিধাও করবেন না বলে জানিয়ে দেন।

বিড়ম্বনা এড়াতে সেই সময় আসরে নামতে হয় খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে কথা বলে তখনকার মতো বিষয়টি মিটিয়ে ফেললেও, ২৩ ডিসেম্বর গোবিন্দর হাতে নিয়োগপত্র ধরানো হয়। তাতেই ফের বেঁকে বসেন রবীন্দ্রনাথ। সাংবাদিক বৈঠক ডেকে অভিযোগ করেন, বিধায়ক হওয়া সত্ত্বেও দলের কোনও সিদ্ধান্তই তাঁকে জানিয়ে নেওয়া হয় না। দলে থেকেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

কিন্তু তখন থেকেই তৃণমূলে রবীন্দ্রনাথের ভবিষ্যৎ নিয়ে কাটাছেঁড়া শুরু হয়। তাঁর অনুগামীরা বলতে শুরু করেন, দলে ক্রমশ কোণঠাসা হয়ে পড়ছেন ‘মাস্টারমশাই’। বেচারাম হরিপালের বিধায়ক হলেও, সিঙ্গুরের নিয়ন্ত্রণ তাঁরই হাতে। শেষমেশ হয়তো দল ছেড়ে দিতে হতে পারে রবীন্দ্রনাথকে। তাই জায়গায় জায়গায় পোস্টার টাঙিয়ে ওই অনুগামীরা দলের কাছে রবীন্দ্রনাথের প্রতি নিজেদের আনুগত্যের কথাই পৌঁছে দিতে চেয়েছেন বলে মত রাজনৈতিক মহলের একাংশের।

আরও পড়ুন: কিসান রেলের ‘ছদ্মনামে’ বঙ্গে ‘ভোট এক্সপ্রেস’-এর উদ্বোধন মোদীর​

অনুগামীদের এই পদক্ষেপকে সমর্থন জানিয়েছেন রবীন্দ্রনাথ। তাঁর বক্তব্য, ‘‘বেচারাম তাঁর এলাকায় গিয়ে দলের কাজ দেখলে ভাল হবে।’’ তবে সিঙ্গুরে তৃণমূলের এই টানাপড়েনে তাঁদেরই সুবিধা হবে বলে মত অনুগামী ব্যানার নিয়ে স্থানীয় বিজেপি নেতা সঞ্জয় পান্ডের। তিনি বলেন, ‘‘রবীনবাবু বা বেচারামের যতই অনুগামী থাকুক না কেন, তৃণমূল না বিজেপি, কাকে সমর্থন করবেন, সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন সিঙ্গুরবাসী।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy