Advertisement
৩০ অক্টোবর ২০২৪
হুগলির পুলিশ অফিসারকে নোটিস

সাংসদের নামে পোস্টার, আটক গাড়ি, ধৃত চালক

চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘‘ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। কিছু সূত্র মিলেছে। সব সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

আটক: এই গাড়িতে চেপেই পোস্টার লাগানো হয় বলে অভিযোগ। ছবি: দীপঙ্কর দে

আটক: এই গাড়িতে চেপেই পোস্টার লাগানো হয় বলে অভিযোগ। ছবি: দীপঙ্কর দে

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেওড়াফুলি শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০১৯ ০০:৪০
Share: Save:

তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে ‘কাটমানি’ সংক্রান্ত পোস্টার পড়ার ঘটনায় নাম জাড়াল এক পুলিশ অফিসারের। কারণ দর্শানোর নোটিস ধরানো হল সংশ্লিষ্ট ওই অফিসারকে। ঘটনার নেপথ্যে শাসক দলের গোষ্ঠীকোন্দলের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না চন্দননগর কমিশনারেটের আধিকারিকরা।

সোমবার গভীর রাতে ‘পুলিশ’ স্টিকার সাঁটা একটি বোলেরো গাড়িতে চেপে কয়েক জন শ্রীরামপুর, শেওড়াফুলি স্টেশন-সহ বিভিন্ন জাযগায় সাংসদের নামে পোস্টার লাগায় বলে অভিযোগ। তাতে লাল কালিতে সাংসদের বিরুদ্ধে ‘কাটমানি’ নেওয়ার অভিযোগের পাশাপাশি অশ্লীল কথাও লেখা ছিল। কমিশনারেট সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার চুঁচুড়ার খাদিনা মোড় থেকে গাড়িটিকে আটক করা হয়েছে। তার চালক অমিয় খামরুইকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতের বাড়ি মগরার শ্বেতপুরে। গাড়ির মালিকও ওই এলাকায় থাকেন। হুগলি জেলা (গ্রামীণ) পুলিশের সাব-ইনস্পেক্টর সমীর সরকার দীর্ঘদিন ধরেই ভাড়া করা ওই গাড়িতে চাপেন।

চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘‘ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। কিছু সূত্র মিলেছে। সব সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ সমীরবাবু বিভিন্ন থানায় ওসি পদে থেকেছেন। এখন তিনি কামারকুণ্ডুতে গ্রামীণ জেলা পুলিশের ডিআইবি বিভাগে আছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘ওই রাতে আমার এক পরিচিতকে ছাড়তে গাড়িটি শ্রীরামপুর স্টেশনে গিয়েছিল। সিসিটিভিতে গাড়ির ছবি আসতেই পারে। তার জন্য কেন আমার গাড়ি আটক করা হল এবং চালককে ধরা হল, বুঝতে পারছি না। গাড়ি ছাড়া সরকারি কাজ করতে আমার অসুবিধা হচ্ছে।’’

সমীরবাবু যাই বলুন, চন্দননগর কমিশনারেট সূত্রের খবর, তদন্তে নেমে শ্রীরামপুর স্টেশন চত্বরের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে এক ব্যাক্তিকে পুলিশ আটক করে। ওই ব্যক্তি পুলিশকে জানান, রাতে স্টেশনের শৌচালয়ে যাওয়ার সময় তিনি দেখেন, পুলিশের গাড়ি থেকে নেমে কয়েক জন পোস্টার সাঁটছে। এর পরেই সিটিটিভি-র ফুটেজ খতিয়ে দেখে ওই গাড়িটিকে চিহ্নিত করা হয়। ধৃত গাড়িচালককে জেরা করতেই পুলিশের চোখ কপালে ওঠে। কমিশনারেটের একটি সূত্রের খবর, পুলিশ অফিসার বাদেও ঘটনার নেপথ্যে শাসক দলের এক বিধায়ক, এক পুর-কাউন্সিলর এবং আরও একটি নাম উঠে আসছে। সংশ্লিষ্ট পুলিশ অফিসারও যে শাসক দলের অনেকের ঘনিষ্ঠ, তা জেলার পদস্থ পুলিশকর্তাদেরও অনেকেই জানিয়েছেন।

কমিশনারেটের এক কর্তা বলেন, ‘‘তবে ঘটনার পিছনে যে বড় মাথা রয়েছে। ‘পুলিশ’ স্টিকার সাঁটা গাড়িতে শ্রীরামপুরের মতো জায়গায় সাংসদের নামে পোস্টার সাঁটার সাহস দেখানো বড় মাথার ইন্ধন ছাড়া অসম্ভব।’’ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যের পরে বিভিন্ন জায়গায় ‘কাটমানি’র টাকা ফেরত চেয়ে আন্দোলনে নামে বিজেপি। পোস্টার সাঁটা হয়। পুলিশের একাংশের বক্তব্য, এ ক্ষেত্রেও বিষয়টিও বিজেপি সমর্থকদের দিকে ঘুরে যাবে, পোস্টার সাঁটার নেপথ্যে থাকা লোকেরা এমনটা ভেবেছিলেন কি না—তা জানার চেষ্টা হচ্ছে।

বিষয়টি নিয়ে সাংসদ কল্যাণবাবু বলেন, ‘‘আগেই বলেছিলাম, যাঁরা অভিযোগ করছেন, সৎ সাহস থাকলে সামনে এসে বলুন। পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখতে হবে। তাই, এ ব্যাপারে যা বলার পুলিশই বলতে পারবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Sheoraphuli Serampore Poster Cut Money
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE