বাসুদেব দাস বাউল। নিজস্ব চিত্র
আলুপোস্ত, পোস্তর বড়া দিয়ে মধ্যাহ্নভোজ সাজিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে আপ্যায়ণ করেছিলেন তিনি। শান্তিনিকেতনের সেই বাসুদেব দাস বাউলের নিজেরও পোস্ত বড় প্রিয়। কিন্তু আকাশছোঁয়া দামের জেরে পোস্ত খাওয়া প্রায় ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন তিনিই। বাসুদেব বলছেন, “যে হারে পোস্তর দাম বেড়েছে তাতে এখন পোস্ত কেনাই দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে।’’
ভোজ্য তেল ও রান্নার গ্যাসের আগুন দামে দিশাহারা আমজনতা। তাল মিলিয়ে দাম বেড়েছে পোস্তরও। গত বছর পর্যন্ত যে পোস্তর দাম কেজি প্রতি ১৩০০-১৪০০ টাকা ছিল, সেই পোস্ত এখন ২০০০ টাকায় গিয়ে পৌঁছেছে। ওই পোস্ত যদি প্যাকেটজাত হয় তাহলে প্রতি কেজির দাম ২৩০০ টাকারও বেশি এখন। রাঢ়বঙ্গের বাসিন্দাদের পাতে পোস্ত থাকাই রেওয়াজ। আলুপোস্ত, পটলপোস্ত, ঝিঙেপোস্ত থেকে পোস্তর বড়া, বা রুই পোস্ত— সবই রাঢ়বঙ্গের মানুষজন তৃপ্তি করে খান। কিন্তু পোস্তর অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি সেই অভ্যাস বদলাতে বাধ্য হয়েছেন বাসুদেব
দাস বাউলও।
বিধানসভা ভোটের আগে, গত বছর ডিসেম্বরে শান্তিনিকেতনের শ্যামবাটিতে বাসুদেবের বাড়িতে এসে মধ্যাহ্নভোজ সারেন অমিত শাহ। মাটির থালা বাটি, কলাপাতায় মিনিকিট চালের ভাত, মুগডাল, আলুপোস্ত, পোস্তর বড়া ও অন্য তরিতরকারি সাজিয়ে তাঁর জন্য আয়োজন করেছিলেন বাসুদেব। এখন বাসুদেবের পাতেই পোস্ত বাড়ন্ত। তিনি বলছেন, ‘‘আগে অন্তত সপ্তাহে তিন থেকে চার দিন পোস্তর পদ হতই। এখন কোনও মাসে এক দিন খেতে পারি, কোনও মাসে তাও পারি না।’’
বাসুদেব জানান, করোনা পরিস্থিতির কারণে দীর্ঘ দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে অনুষ্ঠান সবই এক প্রকার বন্ধ। এই পরিস্থিতিতে কোনও রকমে গান-বাজনা করে যে টুকু আয় হচ্ছে তাতেই কোনও রকমে সংসার চলছে। তাই পাত থেকে পোস্তর পদ প্রায় বিদায় নিতে চলেছে। তাঁর কথায়, ‘‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও যখন খেয়েছিলেন তখনও পোস্তর এত দাম ছিল না। দামের জন্য বাধ্য হয়ে পোস্তর পরিবর্তে অন্য পদের দিকেই ঝুঁকতে হচ্ছে।”
বোলপুরে একাধিক হোটেলের মেনু থেকেও পোস্তর পদ উধাও হয়ে গিয়েছে। কোনও হোটেল আবার দাম বাড়িয়ে দিয়েছে বাজার দরের সঙ্গে তাল মিলিয়ে। শান্তিনিকেতনের এক হোটেল ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘আগে সপ্তাহে সাত দিন মেনুতে আলুপোস্ত থাকত। কিন্তু পোস্তর দাম অস্বাভাবিক বাড়লেও আমরা খাবারের দাম সেই হারে বাড়াতে পারছি না। তাই সাত দিনের বদলে তিন-চার দিন রাখা
হচ্ছে পোস্ত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy