Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪
summer

শুকিয়েছে জলাশয়, ময়ূরের ‘সান স্ট্রোক’

চুঁচুড়ার এক পশু চিকিৎসক জানান, অত্যধিক গরমের কারণে মানুষের মতো পশু-পাখির শরীরেও তাপ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা লোপ পায়। শরীরে জলের অভাব এই অবস্থাকে আরও ত্বরান্বিত করে।

peacock.

গ্রামবাসীরা চান, গরমের হাত থেকে ময়ূরদের বাঁচাতে উদ্যোগী হোক জেলা প্রশাসন। প্রতীকী ছবি।

সুদীপ দাস
পোলবা শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২৩ ০৭:০২
Share: Save:

এলাকার খাল-বিল, পুকুর শুকিয়ে কাঠ। প্রবল গরমে একের পর এক ময়ূর অসুস্থ হয়ে পড়ছে তাদের ‘মুক্তাঞ্চল’ হুগলির রাজহাটে। স্থানীয় পশু চিকিৎসকদের দাবি, ‘সান স্ট্রোকে’ আক্রান্ত হচ্ছে তারা। ঝিমিয়ে মাটিতে পড়ে যাচ্ছে। গ্রামবাসীরা চান, গরমের হাত থেকে ময়ূরদের বাঁচাতে উদ্যোগী হোক জেলা প্রশাসন। শীঘ্রই ব্যবস্থা না নিলে রাজহাট থেকে চিরতরে ময়ূর হারিয়ে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন পরিবেশপ্রেমীরা।

দীর্ঘদিন ধরে পোলবা-দাদাপুর ব্লকের রাজহাট পঞ্চায়েতের গান্ধীগ্রাম, নন্দীপুর-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় দেশের জাতীয় পাখির অবাধ বিচরণ। বাম আমল থেকে শুরু করে বর্তমান সরকারের আমলেও এখানকার ময়ূর সংরক্ষণ নিয়ে নেতা-মন্ত্রীরা ভূরি ভূরি আশ্বাস দিলেও কাজের কাজ কিছু হয়নি বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। গান্ধীগ্রামের কয়েকটি পরিবারের প্রচেষ্টায় আজও কয়েকশো ময়ূর টিকে রয়েছে এই অঞ্চলে। বহু মানুষ শুধু ময়ূর দেখবেন বলেই দূর-দূরান্ত থেকে রাজহাটে আসেন।

কিন্তু গরম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কয়েক দিন ধরে একের পর এক ময়ূর অসুস্থ হয়ে পড়ছে বলে গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন। তাঁরাই মূলত শুশ্রূষা করছেন। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, রাজহাটে ময়ূরের অসুস্থ হয়ে পড়ার কথা তাঁরা কেউ জানেন না। খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।

চুঁচুড়ার এক পশু চিকিৎসক জানান, অত্যধিক গরমের কারণে মানুষের মতো পশু-পাখির শরীরেও তাপ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা লোপ পায়। শরীরে জলের অভাব এই অবস্থাকে আরও ত্বরান্বিত করে। যার ফলে ‘হিট স্ট্রোক’ বা ‘সান স্ট্রোক’ হয়।

গান্ধীগ্রামের কল্যা পরিবার ‘সান স্ট্রোকে’ আক্রান্ত হওয়া দু’টি ময়ূরকে সুস্থ করে ছেড়ে দিয়েছেন। এখনও একটি ময়ূরের চিকিৎসা চলছে ওই বাড়িতে। পরিবারের সদস্য মন্দিরা কল্যার আক্ষেপ, ‘‘গরমে আমরা তা-ও জল খেয়ে, পাখা চালিয়ে বাঁচছি। কিন্তু ময়ূরগুলোর যে কী অবস্থা হচ্ছে!’’ স্বেচ্ছায় সেখানে চিকিৎসা করতে আসা স্থানীয় এক পশু চিকিৎসক বলেন, ‘‘সান স্ট্রোকেই আক্রান্ত হচ্ছে ময়ূরগুলি।’’

ব্যান্ডেলের পরিবেশপ্রেমী চন্দন ক্লেমেন্ট সিংহ জানান, একে রাজহাটে গাছ কমছে। তার উপরে এ বার জলাশয় শুকিয়েছে। ময়ূরদের সঙ্কট বাড়ছে। তাঁর মতে, ‘‘এই মুহূর্তে ওই এলাকার মানুষদের উচিত, বনাঞ্চলের ভিতরে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে জলের ব্যবস্থা করে রাখা।’’

রাজহাটের বাসিন্দা রাজেন্দ্রনাথ কল্যা বলেন, ‘‘ময়ূর রক্ষায় আমরা অনেক কিছুই করেছি। কিন্তু এই প্রথম বার এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ থেকেই জলাশয়গুলি শুকিয়ে গেল। এই পরিস্থিতিতে চোখের সামনে পাখিগুলি অসুস্থ হয়ে পড়ছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

summer Peacock
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE