Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪

বর্জ্য নিয়ে সচেতনতায় পড়ুয়াদের যুক্ত করছে পর্ষদ

পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র জানিয়েছেন, পুজোর পরেই চালু করা হবে নতুন এই প্রকল্প। এর জন্য প্রতিটি জেলায় ১০টি করে স্কুল বেছে নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি স্কুলে দু’টি করে বর্জ্য জমা করার পাত্র রাখা হবে।

 যত্রতত্র: বিকিকিনির পরে প্লাস্টিক ছড়িয়ে রাস্তা জুড়ে। সোমবার রাতে, নিউ মার্কেট এলাকায়। ছবি: রণজিৎ নন্দী

যত্রতত্র: বিকিকিনির পরে প্লাস্টিক ছড়িয়ে রাস্তা জুড়ে। সোমবার রাতে, নিউ মার্কেট এলাকায়। ছবি: রণজিৎ নন্দী

কুন্তক চট্টোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০১৯ ০৩:৪২
Share: Save:

বর্জ্য নিয়ে সচেতনতার প্রসারে এ বার দোরে দোরে পৌঁছতে চাইছে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। তবে নিজেরা নয়, স্কুলপড়ুয়াদের মাধ্যমে এই কাজ করতে চাইছে তারা।

পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র জানিয়েছেন, পুজোর পরেই চালু করা হবে নতুন এই প্রকল্প। এর জন্য প্রতিটি জেলায় ১০টি করে স্কুল বেছে নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি স্কুলে দু’টি করে বর্জ্য জমা করার পাত্র রাখা হবে। একটি প্লাস্টিক বর্জ্যের এবং অন্যটি বৈদ্যুতিন বর্জ্যের। পড়ুয়াদের একটি করে থলে দেওয়া হবে। তাতে ভরতে হবে বাড়িতে জমা হওয়া প্লাস্টিক ও বৈদ্যুতিন বর্জ্য। সেই থলে স্কুলে এনে বর্জ্যের পাত্রে জমা করতে হবে। পর্ষদের তালিকাভুক্ত যে সব সংস্থা বর্জ্য পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে তোলা বা ‘রিসাইক্লিং’-এর কাজ করে, তারা ওই বর্জ্য সংগ্রহ করবে।

পর্ষদ সূত্রের খবর, পড়ুয়ারা যাতে এ কাজে উৎসাহ পায়, তার জন্য কিছু ভাবা হবে। মূলত প্লাস্টিক বর্জ্যের ভার কমানোই এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য। পর্ষদের এক শীর্ষ কর্তার মতে, প্লাস্টিক পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব নয়। কারণ, বিস্কুটের প্যাকেট থেকে মশলার প্যাকেট, দৈনন্দিন বেশির ভাগ প্যাকেটই প্লাস্টিকের তৈরি। এক বার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকই (মূলত ক্যারিব্যাগ এবং বিভিন্ন প্যাকেট) বিশ্বের সব থেকে বড় বিপদ। তাই প্লাস্টিক পুরোপুরি বন্ধ করা না গেলেও তার পুনর্ব্যবহার করতে হবে। কিন্তু নাগরিকদের অনেকেই এই পুনর্ব্যবহারের বিষয়ে আগ্রহী নন। বহু ক্ষেত্রেই সব জঞ্জালের সঙ্গে মিশিয়ে পুরসভার গাড়িতে ফেলা হয় এই বর্জ্যও। তাই স্কুলপড়ুয়াদের মাধ্যমে বর্জ্য আলাদা করা এবং প্লাস্টিক পুনর্ব্যবহারের বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করা হচ্ছে।

পর্ষদের মতে, বৈদ্যুতিন বর্জ্যের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। এই বর্জ্যও সাধারণ বর্জ্যে মিশিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অথচ, এই সব যন্ত্র ও যন্ত্রাংশে সিসা-সহ একাধিক ক্ষতিকারক রাসায়নিক ও ধাতু থাকে। সেগুলি অনেক সময়ে খোলা জায়গায় বর্জ্যের কারবারিদের কাছেও বিক্রি করা হচ্ছে। সেগুলিকে নিয়ম মেনে নষ্ট বা পুনর্ব্যবহারযোগ্য করা না হলে দূষণের আশঙ্কাও থাকছে। বৈদ্যুতিন পণ্যের ব্যবহার যে ভাবে বাড়ছে, তাতে প্লাস্টিকের মতো এ নিয়েও সচেতনতা গড়ে তোলা জরুরি।

স্কুলপড়ুয়াদের সচেতন করতে পারলে প্লাস্টিক পরিহারের কাজ যে অনেকটাই সহজ হবে, তা বুঝতে পারছে কর্পোরেট দুনিয়াও। বিভিন্ন সংস্থার সামাজিক দায়বদ্ধতার প্রকল্পে যুক্ত হচ্ছে প্লাস্টিক বর্জনের রূপরেখা। আর সে ক্ষেত্রেও বেশির ভাগ প্রকল্পে শরিক হয়ে উঠছে পড়ুয়ারাই।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE