অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
দলের প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য তৃণমূলের ভোট প্রক্রিয়ার শুরুতেই অশান্তি বেধেছিল কোচবিহারে। বাক্স ভেঙে ব্যালট ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। তা নিয়ে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হুঁশিয়ারির পর বুধবার শান্তিপূর্ণ ভাবেই হল ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া। বিশাল পুলিশবাহিনী দিয়ে নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলে ভোট করানো হয়েছে বলে দাবি শাসক তৃণমূলের। এ প্রসঙ্গে তৃণমূল মুখপাত্র পার্থপ্রতিম রায় বলেন, ‘‘ভোট পর্ব নির্বিঘ্নে এবং সুষ্ঠু ভাবেই সম্পন্ন হয়েছে। প্রথম বার যে হেতু, তাই গোসানিমারিতে কিছু ভুলভ্রান্তি হয়েছিল। কারণ, মানুষের মধ্যে উত্তেজনা বেশি ছিল। সেখানে পুনরায় নির্বাচন হয়েছে।’’
মঙ্গলবার, প্রথম দিন দলের প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়ার দিনহাটার সাহেবগঞ্জ, সিতাইয়ের গোসানিমারি, ও মাথাভাঙায় গোলমাল হয়েছে। তা নিয়ে ওই দিনই শীতলখুচি থেকে অভিষেক বলেছিলেন, ‘‘আমার সভা শেষ করার পরে, সভাস্থলে কিছু মানুষ অতি উৎসাহিত হয়ে ভোট দিতে গিয়ে ব্যালট বাক্স প্রায় ভেঙে ফেলেছেন। বিশৃঙ্খলা বরদাস্ত করব না। এই কারণেই তৃণমূলের নবজোয়ার শুরু করেছি আমরা।’’ তখনই অভিষেক জানিয়েছিলেন, বুধবার আবার গোসানিমারির মাঠে ভোট হবে। সকাল ১০টা থেকে ৫টা পর্যন্ত। তার দায়িত্ব দিয়েছিলেন সিতাইয়ের বিধায়ক জগদীশচন্দ্র বসুনিয়ার উপর। সেই মতো বুধবার সেখানে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। তবে কিছুটা দেরিতে, বেলা ১২টা নাগাদ।
তৃণমূল সূত্রে খবর, দিনহাটা থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী দিয়ে ভোট করানো হয়েছে। ভোট শান্তিপূর্ণই হয়েছে। জগদীশ জানান, তিনিই ভোটদাতাদের হাতে ব্যালট পেপার তুলে দিয়েছেন। স্বতঃস্ফূর্ত ভাবেই সকলে ভোট দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘খুব ভাল ভোট হয়েছে। কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। পুলিশ রয়েছে। পুলিশ খুব ভাল কাজ করেছে।’’ বুধবার জনজোয়ার কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে তিনটি সভা করেন অভিষেক। তিনটি সভা হয় যথাক্রমে কোচবিহার-১ ব্লকের হোমিয়োপ্যাথি কলেজ গ্রাউন্ড, কোচবিহার-২ ব্লকের খাগড়াবাড়ি প্রাথমিক স্কুলের মাঠ এবং তুফানগঞ্জের ফুটবল মাঠে। সভার পর সেখানেও প্রার্থী বাছাইয়ের ভোটগ্রহণ হয়। শাসকদল সূত্রে জানা গিয়েছে, সেখানেও শান্তিপূর্ণ ভাবে কড়া পুলিশি নিরাপত্তায় ভোট হয়েছে। তৃণমূলের এক জেলা নেতা বলেন, ‘‘গতকালের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে আজ ভোট করানো হয়েছে। ভোটগ্রহণের সময় যথেষ্ট পরিমাণে পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মেনে দ্বিতীয় দিনে শান্তিতে সুষ্ঠু ভাবেই ভোট হয়েছে।’’
মঙ্গলবার সাহেবগঞ্জ এবং গোসানিমারিতে অভিষেক সভাস্থল ছেড়ে যাওয়ার পরেই ভোট ঘিরে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। গোসানিমারিতে দলের দুই শিবিরের মধ্যে হাতাহাতিতে ব্যালট বাক্স ভাঙা হয় বলেও অভিযোগ উঠেছে। তৃণমূল সূত্রের দাবি, জেলায় তৃণমূলের একাধিক গোষ্ঠী রয়েছে। সবাই নিজের পছন্দের প্রার্থীর নামে ভোট দেওয়ার জন্য সক্রিয় হয়ে ওঠেন। তাতেই গন্ডগোল ছড়ায়। অভিষেক শান্তিপূর্ণ ভোটের আবেদন করে যাওয়া সত্ত্বেও মাথাভাঙায় উত্তেজনা ছড়ায় ভোটগ্রহণকে কেন্দ্র করে। এক জনের মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। এই অশান্তি নিয়ে শাসক দলকে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না বিরোধীরা। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘‘তৃণমূলের হাতে গণতন্ত্র সুরক্ষিত নয়। দলের লোকেরা ব্যালট ছিঁড়ে তা প্রমাণ করে দিয়েছেন।’’ সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীরও কটাক্ষ, ‘‘দলের প্রার্থী বাছাইয়ের নামে ভোট লুটের মহড়া দেওয়া হচ্ছে!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy