সংসদ-কাণ্ডে ললিত ঝা-কে মূল মাথা বলে দাবি করেছে দিল্লি পুলিশ। —ফাইল চিত্র।
অধিবেশন চলাকালীন লোকসভায় ‘স্মোক বম্ব’ নিয়ে দু’জনের ঢুকে পড়ার ঘটনা নিয়ে বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেসের তরজা আরও বাড়ল। সংসদ-কাণ্ডে ললিত ঝা-কে মূল মাথা বলে দাবি করেছে দিল্লি পুলিশ। ললিতের সঙ্গে তৃণমূল নেতাদের ছবি দেখিয়ে বিজেপির দাবি, ধৃত ওই যুবক তৃণমূলের যুব সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত এবং বাংলায় শাসক দলের একাধিক নেতার ‘ঘনিষ্ঠ’। পাল্টা তৃণমূলের প্রশ্ন, অভিযুক্তেরা যদি তৃণমূলের সঙ্গেই যুক্ত হবে, তা হলে বিজেপি সাংসদ কেন তাঁদের সংসদে ঢোকার পাস দিলেন? ওই সাংসদ প্রতাপ সিমহাকে নিয়ে বিজেপি নেতারা কেন চুপ?
বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ও পশ্চিমবঙ্গের সহ-পর্যবেক্ষক অমিত মালবীয় আগেই সমাজমাধ্যমে ছবি পোস্ট করে দাবি করেছিলেন, অভিযুক্ত ললিত রাজ্যের শাসক দলের ঘনিষ্ঠ। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী শুক্রবার দাবি করেন, ‘‘অভিযুক্ত ললিত ঝা তৃণমূলের যুব সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিল। এখনও তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে তার ভাল যোগাযোগ আছে। বিধায়ক ও তৃণমূলের উত্তর কলকাতা সাংগঠনিক জেলার প্রাক্তন সভাপতি তাপস রায় এবং অন্য তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে তাঁর একাধিক ছবি সমাজমাধ্যমে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাই এই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূল এবং তাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কী যোগাযোগ আছে, খতিয়ে দেখা দরকার।’’ বিধায়ক তাপস অবশ্য আগেই তাঁর সঙ্গে ওই যুবকের যোগ অস্বীকার করে যে কোনও কেন্দ্রীয় সংস্থাকে দিয়ে তদন্তের পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়েছেন বিজেপির দিকে।
পাশাপাশিই শুভেন্দু এ দিন তাঁর এক্স হ্যান্ড্লে (পূর্বতন টুইটার) অভিযোগ করেছেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে যত্ন করে একটি বাস্তুতন্ত্র তৈরি করেছেন, যা শহুরে নকশালদের লালন করে, ‘টুকড়ে টুকড়ে গ্যাং’কে উৎসাহিত করে, অনুপ্রবেশকারীদের নিরাপদ পথ প্রদান করে। দুর্ভাগ্যবশত আমাদের রাজ্য জাতীয়তাবাদ-বিরোধী কার্যকলাপের আশ্রয়স্থল ও প্রজনন ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।” রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক ও সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ও ললিত-তৃণমূল যোগের অভিযোগে সরব হয়েছেন।
তৃণমূল পাল্টা বলছে, প্রথমত ধৃত যুবক বা দিল্লির ঘটনার সঙ্গে দলের কোনও যোগ নেই। আর তর্কের খাতিরে যদি তিনি তৃণমূলের কোনও নেতার পরিচিত হয়েও থাকেন, তা হলেও তাঁর সঙ্গীদের সংসদে ঢোকার জন্য পাস করিয়ে দেওয়ার দায় কি বিজেপি সাংসদ অস্বীকার করতে পারেন? ‘তৃণমূলের লোক’কে বিজেপি সাংসদ পাস দিলেনই বা কী ভাবে? এই বিতর্কে এ দিন রাজ্যের মন্ত্রী ও তৃণমূলের নেত্রী শশী পাঁজার বক্তব্য, “এই ঘটনায় আমাদের তিনটি স্পষ্ট দাবি আছে। যে সাংসদ এদের আমন্ত্রণপত্র দিয়েছেন, তাঁর সাংসদ-পদ খারিজ করতে হবে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বেসরকারি সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন অথচ সরকারি ভাবে বা সংসদে এসে এই নিয়ে কোনও বিবৃতি দিচ্ছেন না। প্রধানমন্ত্রী সংসদ ভবনে মন্ত্রিসভার বৈঠকে সভাপতিত্ব করেছেন বলে আমরা জানতে পেরেছি। তাঁকে এই নিয়ে লোকসভা ও রাজ্যসভায় বিবৃতি দিতে হবে।’’
রানিগঞ্জে কোলিয়ারি মজদুর সভার প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক বিবেক হোম চৌধুরীর স্মরণ-সভায় গিয়ে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম এ দিনই বলেছেন, ‘‘সংসদে ঢুকে পড়া ব্যক্তিরা যদি মুসলমান হতেন, তা হলে তাঁদের বাংলাদেশি, রোহিঙ্গা, আতঙ্কবাদী, এ সব তকমা লাগিয়ে দেওয়া হত। তাঁদের সংসদে ঢোকার অনুমতিপত্র দেওয়া সাংসদ বিজেপির না হয়ে কমিউনিস্ট বা অন্য বিরোধী দলের হলে তাঁকে দেশদ্রোহী ঘোষণা করে চিৎকার করা হত। বলা হত, সংসদ ভবনে মোদী ও অমিত শাহকে হত্যার ষড়যন্ত্র করে হামলাকারীরা ঢুকেছিল!” সেলিমের আরও বক্তব্য, ‘‘সংসদে যাঁরা গ্যাস নিয়ে ঢুকেছিলেন তাঁরাও, বেরোজগারির বিরুদ্ধে প্রতিবাদের কথাই বলছেন। তা হলে মোদীর বছরে দু’কোটি চাকরির প্রতিশ্রুতির কী হল?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy