পরীক্ষা দিয়ে বেরোচ্ছেন অর্ণব। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
ফ্রেঞ্চকাট দাড়ি। পেতে আঁচড়ানো চুল। পরনে হাল্কা গেরুয়া শার্ট আর কালচে-ছাই রঙের প্যান্ট। পায়ে স্নিকার্স। কাঁধে ঝোলা ব্যাগ। সকাল ৮টায় প্রিজন ভ্যান থেকে নামলেন বছর আটত্রিশের রোগা-পাতলা এক যুবক। পুলিশি ঘেরাটোপে ভিক্টোরিয়া ইনস্টিটিউশনে ঢুকলেন তিনি।
রবিবার, ছুটির সকালে ওই যুবককে এ ভেবে ইনস্টিটিউশন-চত্বরে হাজির হতে দেখে কানাঘুষো শুরু হয়ে যায় অন্য পরীক্ষার্থী-অভিভাবকদের মধ্যে। অচিরেই জানা যায়, প্রেসিডেন্সি সেন্ট্রাল জেল থেকে ‘স্টেট এলিজিবিলিটি টেস্ট’ (সেট) দিতে এসেছেন অর্ণব দাম। একদা মাওবাদীদের বাংলা-ঝাড়খণ্ড-ওড়িশা আঞ্চলিক কমিটির সম্পাদক। রাজনীতিতে পরিচিত বিক্রম নামে।
ভিক্টোরিয়া ইনস্টিটিউশনের অর্থনীতি বিভাগের ১৬ নম্বর ঘরে চেয়ারে বসে টেবিলে অর্ণব ‘সেট’ দিলেন রীতিমতো পুলিশ-ব্যূহে। ওই ঘরে ছিল তিন-চার জন পুলিশ। জনা পাঁচেক পুলিশ ঘরের বাইরে। মূল ফটকেও ইনস্টিটিউশনের রক্ষীদের সঙ্গে ছিলেন কিছু পুলিশকর্মী।
প্রথমার্ধের পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরে জল চেয়েছিলেন অর্ণব। তাঁকে জল দেওয়া হয়। ‘‘অর্ণব দাম আলাদা ঘরে বসেছিলেন। অন্যদের মতোই পরীক্ষা দিয়েছেন। তাঁর ঘরে পুলিশও ছিল,’’ বলেন ইনস্টিটিউশনের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষা অপর্ণা পাল। দ্বিতীয়ার্ধে গুঁজে লিখেছেন খড়্গপুর আইআইটি-র মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পাঠ অসমাপ্ত রেখে অতি বাম রাজনীতিতে নাম লেখানো অর্ণব। ‘সেট ২০১৮’-র কো-অর্ডিনেটর সীমন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে উত্তরপত্র দিয়ে কেন্দ্র ছাড়েন তিনি। পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে বেরোনোর মুখে অর্ণব বললেন, ‘‘পরীক্ষা ভাল হয়েছে। জেল থেকে এই ধরনের পরীক্ষা দেওয়া একটা ব্যাপার। পরীক্ষায় বসার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারকে ধন্যবাদ।’’ সোনারপুরের সুভাষগ্রামের অর্ণব বলেন, ‘‘রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তির জন্য আপনাদের (সংবাদমাধ্যম) মাধ্যমে সরকারের কাছে আর্জি জানাচ্ছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy