প্রতীকী ছবি।
করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় রাজ্যে সংক্রমণের হার যখন ঊর্ধ্বমুখী, তখন চারটি পুর-নিগমের ভোট করা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্ক। এই পরিস্থিতির মধ্যে ভোট কী ভাবে সম্ভব, সেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে বিজেপি ও বামেরা। শাসক তৃণমূল কংগ্রেস আবার পাল্টা মনে করিয়ে দিচ্ছে, গত বছর করোনার দ্বিতীয় ঢেউ প্রবল আকার নেওয়ায় বিধানসভা ভোটের শেষ কয়েক দফা একসঙ্গে করার দাবি উঠলেও কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন তাতে কর্ণপাত করেনি। বিজেপিও তখন নীরব ছিল!
গঙ্গাসাগরে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফের করোনার ফের বাড়তি প্রকোপের প্রেক্ষিতে স্কুল-কলেজ বন্ধ-সহ কিছু বিধিনিষেধ জারির ভাবনার কথা বলার সঙ্গে সঙ্গেই বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার মন্তব্য করেছিলেন, পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হলে পুরভোটও তো পিছিয়ে দেওয়া উচিত। তার পরে বিজেপি অবশ্য সরাসরি ভোট পিছনোর দাবি রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে জানায়নি। রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলছেন, ‘‘কমিশন সিদ্ধান্ত নিক। এই পরিস্থিতির মধ্যে পুরভোট হলে এটা স্পষ্ট হবে, মানুষের জীবনের চেয়ে ভোটের মূল্য তৃণমূলের কাছে বেশি! আতঙ্কের পরিবেশে ভোট কোনও ভাবেই স্বতঃস্ফূর্ত হতে পারে না।’’
এই প্রেক্ষিতেই পাল্টা প্রশ্ন উঠছে বিধানসভা ভোটের সময়ের পরিস্থিতি নিয়ে। করোনার সংক্রমণ বিপুল গতিতে বাড়তে থাকায় ৮ দফার বিধানসভা ভোটের শেষ তিন দফা একসঙ্গে করার দাবিতে সরব হয়েছিল তৃণমূল, সিপিএম ও কংগ্রেস। বাম ও কংগ্রেসের দু’জন প্রার্থীর করোনায় মৃত্যু হওয়ায় দুই কেন্দ্রে ভোট স্থগিত হয়েছিল, তৃণমূলের এক প্রার্থীর মৃত্যু হয়েছিল ভোটের ফলপ্রকাশের আগেই। কলকাতায় ভোটের প্রচার বন্ধ করেছিলেন সিপিএমের কয়েক জন প্রার্থী। কিন্তু ভোট হয়েছিল ৮ দফাতেই। সেই প্রসঙ্গ টেনেই তৃণমূলের সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায়ের বক্তব্য, ‘‘সেই সময়ে রাজ্য জুড়ে ভয়ানক পরিস্থিতি সৃষ্টি হলেও বিজেপি তখন নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহদের এনে সভা করতে ব্যস্ত ছিল। তখন তাদের বাংলা দখলের স্বপ্ন ছিল! এখন চারটে পুরভোটের সময়ে কোভিডের কথা ওদের মনে পড়েছে!’’ তাঁর আরও মন্তব্য, ‘‘উত্তরপ্রদেশ, পঞ্জাবে জনসভাও তো বিধি মেনে হচ্ছে না! সেখানে আগে দাবি করুক ভোট পিছনোর।’’
শমীকের অবশ্য পাল্টা দাবি, ‘‘সেই সময়ে বিজেপির নীরব থাকার প্রশ্ন নয়। কমিশন ৮ দফায় বিধানসভা ভোট করেছিল বাংলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কারণে। ভোট-পরবর্তী সন্ত্রাসে ৪৬ জন মারা গিয়েছিলেন। এই ভাবে চলতে থাকলে বাংলায় ৮ কেন, ১৮ দফায় ভোট করতে হবে এবং তার পরেও তিন মাস কেন্দ্রীয় বাহিনী প্রয়োজন!’’
সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীও বুধবার বলেছেন, ‘‘নেতাজির জন্মদিন, জাতীয় ভোটার দিবস ও প্রজাতন্ত্র দিবসের মাঝে ২২ জানুয়ারি পুরভোট এবং ২৫ তারিখ গণনার সিদ্ধান্ত ঠিক হয়নি। এটা বামফ্রন্ট আগেই চিঠি দিয়ে জানিয়েছে। এখন যোগ হয়েছে কোভিড পরিস্থিতি। আমরা দলের সম্মেলন অনেকটা স্থগিত রাখছি। এর মধ্যে ভোট কি সম্ভব?’’ তাঁর আরও মন্তব্য, ‘‘সর্বদল বৈঠক না ডেকে তৃণমূলের সঙ্গে কথা বলে কমিশন সব ঠিক করে ফেলল! বোঝাই যাচ্ছে, এর মধ্যেও পুরভোট করে তৃণমূল
আসলে ভোট লুঠ করতে চায়।’’ প্রাক্তন বিধায়ক অসিত মিত্রের নেতৃত্বে কংগ্রেসের প্রতিনিধিদল এ দিন অবশ্য কমিশনে চিঠি দিয়ে প্রার্থী, দলের কর্মী-সমর্থক ও ভোটারদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছে। কোভিড-বিধি মানার কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেছেন অসিতবাবুরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy