এই লাল বাইক নিয়েই ঘুরে বেড়াত কামরুজ্জামান সরকার।—নিজস্ব চিত্র।
ধোপদুরস্ত পোশাক, মাথায় হেলমেট দেখে সন্দেহ হওয়ার জায়গা ছিল না। কিন্তু হিসেব বদলে দিল সিসিটিভি ফুটেজের ছবিটা!
গুঁজে পরা সাদা চেক শার্ট-প্যান্ট, পালিশ করা কালো জুতো, ঘড়ি, লাল হেলমেট, লাল বাইক, তাতে ঝোলানো নাইলনের ব্যাগ, সবটাই হুবহু মিলে গিয়েছিল। তাতেই ধরা পড়ে গেল কালনা, মেমারি, মন্তেশ্বর, পাণ্ডুয়ায় বাড়িতে একা থাকা পাঁচ মহিলাকে খুন, ১৫ মহিলাকে খুনের চেষ্টায় অভিযুক্ত যুবক।
রবিবার বিকেলে কালনার সাধপুকুরের কাছে ওই যুবককে ধরে ফেলেন এক সিভিক পুলিশ। সঙ্গে সঙ্গে বুলবুলিতলা ফাঁড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। সেখানে কিছুক্ষণ জেরা করার পরে আনা হয় কালনা থানায়। পুলিশের দাবি, ধৃত কামরুজ্জামান সরকার জেরায় স্বীকার করছে, সে-ই খুন করেছে একের পর এক মহিলাকে। তবে কেন, তা এখনও জানা যায়নি। পুলিশের একাংশের দাবি, প্রেমে ধাক্কা খেয়ে প্রতিশোধ নিতেই পরপর হামলা।
এ ভাবেই চেনের দু’প্রান্তে বাঁধা ছিল রবার টিউব।—নিজস্ব চিত্র।
আরও পড়ুন: পরপর খুন মহিলা, গ্রেফতার ১
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কামরুজ্জামানের আদি বাড়ি মুর্শিদাবাদ। তবে বছর পনেরো ধরে পূর্বস্থলী ১ ব্লকের গোয়ালপাড়ার কাছে সুজননগরে থাকত সে। ওখানেই শ্বশুরবাড়ি। বছর দেড়েক আগে এলাকায় জমি কিনে বাড়িও করেছে সে। বাড়িতে বাবা-মা, স্ত্রী, ভাই-বোন, তিন ছেলেমেয়ে রয়েছেন বলেও জেরায় জানিয়েছে ধৃত।
পুলিশের অনুমান, এ দিনও পড়ন্ত বিকেলে কোথাও অঘটন ঘটাতে যাচ্ছিল সে। সঙ্গে থাকা ব্যাগে মিলেছে লোহার শাবল, লোহার চেন। চেনের দু’প্রান্তে বাঁধা ছিল রবার টিউব। পুলিশের দাবি, গোড়ার দিকে দু’একটি ঘটনায় লোহার চেন ঘটনাস্থলেই ফেলে আসছিল দুষ্কৃতী। তবে মাস দুয়েক আগে মেমারির বরা ও সাতগেছিয়ায় বাড়িতে একা থাকা দুই মহিলা খুন হন। তাঁদের মাথায় আঘাতের চিহ্ন পায় পুলিশ। তার পর থেকে সব ঘটনাতেই ‘শিকার’-এর মাথায় চোটের সন্ধান মিলেছে।
খুনের আগে যৌন নির্যাতন চালানো হত বলেও পুলিশের অনুমান। পুলিশের একাংশের দাবি, মাথায় লোহার রড দিয়ে আঘাত করে চেন দিয়ে আটকে রাখা হত। হাত থেকে চেন যাতে পিছলে না যায়, সে জন্য লাগানো ছিল রবারের টিউব। এ দিন কালনা থানায় জেরা পর্বে আসেন মন্তেশ্বর, মেমারি, পাণ্ডুয়া-সহ পাঁচ থানার ওসিরা। যাঁরা হামলায় বেঁচে গিয়েছিলেন শনাক্তকরণের জন্য আনা হয়েছিল তাঁদের এক জনকেও।
ধৃত কামরুজ্জামান।—নিজস্ব চিত্র।
আরও পড়ুন: আটটি ট্রাঙ্ককেও মিলল না সারদার লাল ডায়েরি-পেন ড্রাইভ, এ বার ‘সিট’ সদস্য দিলীপকে সিবিআই জেরা
ধৃতের প্রতিবেশীদেরও দাবি, সব সময়েই জামা-প্যান্ট গুঁজে পরত ওই ব্যক্তি। হাতে ঘড়ি, দামি সিগারেট, পালিশ করা জুতো পরত। তবে কী কাজ করত তা জানেন না কেউ। তাকে শুধু সেজেগুজে মোটরবাইক নিয়ে সকালে বেরিয়ে যেতে দেখতেন বাসিন্দারা। মাঝেমধ্যে সমুদ্রগড় স্টেশন লাগোয়া বাজার এলাকা আড্ডা মারতে দেখা গিয়েছে তাকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy