Advertisement
০৭ জুলাই ২০২৪
Calcutta High Court

‘আইন মেনে কাজ করেননি বিচারক’! পুলিশ সুপারের আবেদনে সায় দিয়ে কেন বলল কলকাতা হাই কোর্ট?

ঘটনার সূত্রপাত একটি জামিন সংক্রান্ত মামলাকে কেন্দ্র করে। পুলিশের কাজে অসন্তুষ্ট হয়ে মালদহের চাঁচল আদালতের অতিরিক্ত দায়রা বিচারক জেলার পুলিশ সুপারকে তলব করেছিলেন।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

ভাস্কর মান্না
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০২৪ ১১:৫৫
Share: Save:

বার বার নিজের চেম্বারে তলব করেছেন বিচারক। কিন্তু হাজিরা না দিয়ে এ বার নিম্ন আদালতের সেই বিচারকের বিরুদ্ধেই হাই কোর্টের দ্বারস্থ হলেন পুলিশ সুপার!

মালদহের চাঁচল কোর্টের অতিরিক্ত দায়রা বিচারকের বিরুদ্ধে কলকাতা হাই কোর্টে আবেদন জানিয়েছিলেন মালদহের পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব। তাঁর অভিযোগ, এক্তিয়ার-বহির্ভূত ভাবে তলব করছেন বিচারক। প্রদীপের আইনজীবী সব্যসাচী বন্দ্যোপাধ্যায়ের আবেদনের সাড়া দিয়ে বুধবার বিচারপতি শুভ্রা ঘোষ চাঁচল আদালতের বিচারকের নির্দেশ খারিজ করে দেন। হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ— যে ভাবে পুলিশ সুপারকে ডেকে পাঠিয়েছেন বিচারক, তা তাঁর এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে না।

হাই কোর্ট সূত্রের খবর, ঘটনার সূত্রপাত একটি জামিন সংক্রান্ত মামলাকে কেন্দ্র করে। ওই মামলায় পুলিশের কাজে অসন্তুষ্ট হন চাঁচল কোর্টের অতিরিক্ত দায়রা বিচারক। তিনি জেলার পুলিশ সুপারকে তলব করেন বলে অভিযোগ। ওই বিচারক তিনটি নির্দেশে ১৪ মে, ২০ মে এবং ৪ জুন ডেকে পাঠিয়েছিলেন মালদহ জেলার পুলিশ সুপারকে।

১৪ মে পুলিশ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ‘পর্যবেক্ষণ’ করেন ওই বিচারক। তিনি নির্দেশ দেন, ২০ মে বিকেল সাড়ে ৪টায় পুলিশ সুপারকে চেম্বারে দেখা করতে হবে ওই মামলার বিষয়ে আলোচনা করার জন্য। কিন্তু সুপার না যাওয়ায় ২০ মে পরের শুনানিতে আবার ডেকে পাঠিয়ে ওই একই নির্দেশ দেয় আদালত। হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ, নিম্ন আদালতের ওই নির্দেশ আইনের চোখে ‘অজানা’। আদালতের কাছে স্পষ্ট নয়, কোন আইনে পুলিশ সুপারকে নিজের চেম্বারে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।

প্রত্যেক জেলায় জেলা বিচারক নিয়ে একটি নজরদারি কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটিতে পুলিশ সুপার-সহ জেলা প্রশাসন উচ্চপদস্থ আধিকারিকেরা রয়েছেন। ওই কমিটি বিভিন্ন প্রশাসনিক বিষয় নিয়ে নিয়মিত বৈঠক করে। বিচারপতি ঘোষের পর্যবেক্ষণ, অতিরিক্ত বিচারকের কোনও বক্তব্য থাকলে সেখানে জানাতে পারতেন। এ ভাবে পুলিশ সুপারকে তলব আদালত মোটেও ভাল চোখে দেখছে না।

নিম্ন আদালতের ওই তিনটি নির্দেশ বুধবার খারিজ করে দিয়েছে হাই কোর্ট। বিচারপতি ঘোষ রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছেন হাই কোর্টের ওই ‘অর্ডার কপি’ চাঁচল আদালতের সংশ্লিষ্ট বিচারককে পাঠিয়ে দেওয়ার জন্য। সেই সঙ্গে বিচারপতি ঘোষের মন্তব্য, ‘‘আদালত আশা করছে, ভবিষ্যতে নিম্ন আদালতের ওই বিচারক তাঁর কাছে বিচারাধীন মামলার ক্ষেত্রে আইনের পথ মেনেই কাজ করবেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE