গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে মঙ্গলবার নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছে ‘পশ্চিমবঙ্গের ছাত্র সমাজ’। কোনও সংগঠন নয়, তাঁরা সমাজের প্রতিনিধি— এই মর্মেই নিজেদের পরিচয় দিয়েছেন নবান্ন অভিযানের ডাক নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করা তিন ছাত্র। সেখানে তাঁরা শুধু এটুকুই জানান যে, মঙ্গলবার কলকাতার কলেজ স্কোয়্যার এবং হাওড়ার সাঁতরাগাছিতে দুপুর ১টায় হবে জমায়েত। এর পরে নবান্নের উদ্দেশে যাবে জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে দু’টি পৃথক মিছিল। সেই মিছিলে কত লোক হবে, কোন পথ ধরে মিছিল এগোবে সে ব্যাপারে কোনও ইঙ্গিতই এখনও পর্যন্ত মেলেনি। ফলে অন্ধকারেই পুলিশ। কোনও নির্দিষ্ট সংগঠনের ডাক না থাকায় পুলিশ যে বেশ বিড়ম্বনায় তা জানিয়ে হাওড়া পুলিশ কমিশনারেটের পক্ষে শনিবার একটি নোটিস পাঠানো হয়েছে। শুক্রবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক বৈঠক করা তিন জনের কাছেই সেই নোটিস পৌঁছেছে।
শুক্রবারের সাংবাদিক বৈঠকে হাজির ছিলেন প্রবীর দাস, সায়ন লাহিড়ী এবং শুভঙ্কর হালদার নামে তিন ছাত্র। পুলিশের নোটিসে তিন জনেরই নাম রয়েছে। সেখানে পুলিশ মূলত সাতটি প্রশ্নের উত্তর চেয়েছে। পুলিশও যে বড় জমায়েত হতে পারে বলে অনুমান করছে সেটাও উল্লেখ রয়েছে সেই নোটিসে। পুলিশ জানিয়েছে, সাংবাদিক বৈঠকের বক্তব্য অনুযায়ী তারা এটা জানতে পেরেছে যে, রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে বহু মানুষ মঙ্গলবার মিছিলে যোগ দিতে আসবেন। জানতে চাওয়া হয়েছে, কোন এলাকায় কার নেতৃত্বে জমায়েত হবে? মোট কত মানুষের জমায়েত হতে পারে? কোথা থেকে কোন পথ ধরে মিছিল নবান্নে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা? কেমন ভাবে এবং কত ক্ষণ ধরে এই কর্মসূচি চলবে? এরই সঙ্গে যোগদানকারীদের তালিকা এবং কার সঙ্গে যোগাযোগ করা যাবে তা-ও জানতে চেয়েছে পুলিশ। আগে থাকতে যাতে পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা যায় তার জন্য কত গাড়ি সেই দিন জমায়েতের জন্য আসতে পারে তা-ও জানতে চেয়েছে তারা।
অতীতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নবান্ন অভিযানে যে সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল সেটাও নোটিসে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে জানানো হয়েছে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকা রাজ্যের প্রধান সচিবালয় নবান্ন এলাকায় সব সময়েই ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতার ১৬৩ (ফৌজদারি কার্যবিধির ১৪৪) ধারা বলবৎ থাকে। সেই সঙ্গে মঙ্গলবার কর্মসূচিতে যাঁরা যোগ দেবেন তাঁরা যাতে আইন মেনে চলেন এবং শান্তি বজায় রাখেন সেই আর্জিও জানিয়ে রেখেছে পুলিশ।
এই নোটিস পাওয়ার কথা স্বীকার করে আয়োজকদের অন্যতম শুভঙ্কর বলেন, ‘‘আমাকে অনেক বার হাওড়া কমিশনারেটের তরফে ফোন করা হয়েছে। পুলিশ কমিশনার প্রবীণ ত্রিপাঠী স্বয়ং ফোনে কথা বলেছেন। আমি জানিয়ে দিয়েছি যে, আলোচনা করে আমরা খুব তাড়াতাড়ি পুলিশকে সবটা জানিয়ে দেব।’’ একই সঙ্গে শুভঙ্কর বলেন, ‘‘তবে আমরা সবটা বলতে পারব না। কত মানুষের জমায়েত হবে, কত গাড়ি আসবে সেটা তো আমাদেরও জানা নেই। সমাজমাধ্যমে যে রকম সাড়া পাচ্ছি তাতে প্রচুর মানুষ আসবেন যে, সেটা বুঝতে পারছি কিন্তু পুলিশকে সংখ্যা বলতে পারব না।’’
শুক্রবার হওয়া সাংবাদিক বৈঠকেও কোন পথে নবান্নের দিকে মিছিল যাবে তা শুভঙ্কররা গোপন রেখেছিলেন। তবে সোমবারের মধ্যেই নিজেরা আলোচনা করে পুলিশকে চিঠির উত্তর দেওয়া হবে বলে জানান শুভঙ্কর। একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘আমরা আগেই বলেছি আমাদের কোনও সংগঠন নেই। এটা ছাত্র সমাজের ডাকে সাধারণ মানুষের মিছিল। কোনও রাজনৈতিক দলের যোগদান থাকবে না। কেউ আসতে চাইলে দলীয় পতাকা ছাড়া আসতে পারেন। ফলে পুলিশের সব প্রশ্নের উত্তর আমাদের কাছে নেই।’’ পুলিশ বাধা দিলে কী করবেন? শুভঙ্কর বলেন, ‘‘বাধা নয়, আমরা পুলিশের কাছে সাহায্য চাইব। তারাই যেন আমাদের নবান্নে পৌঁছতে সাহায্য করে। কোন পথে যেতে হবে সেটা তারাই বরং বলে দিক। আমরা কোনও অশান্তি চাই না। পুলিশও যেন আমাদের উপরে দমনপীড়ন মূলক আচরণ না করে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy