Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Crime

থানা থেকে চুরি এক এক করে ১৮টি বন্দুক! ঝাড়গ্রামে ধৃত এসআই

জেলা পুলিশ চার জনকে গ্রেফতার করেছে। এ দিন তাঁদের আদালতে তোলা হলে, বিচারক সকলকে পাঁচ দিনের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। 

ধৃত এএসআই। —নিজস্ব চিত্র।

ধৃত এএসআই। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদাদাতা
জামবনি শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০২০ ১৫:৫৪
Share: Save:

একের পর এক আগ্নেয়াস্ত্র চুরি যাচ্ছিল থানার মালখানা থেকে। প্রথমে কেউ বুঝতে পারছিলেন না কী ভাবে চুরি হয়ে যাচ্ছে সে সব। শেষে ধরা পড়ল সর্ষের মধ্যেই ভূত! খোদ পুলিশ অফিসারই থানা থেকে সরাচ্ছিলেন একের পর এক আগ্নেয়াস্ত্র!

ঝাড়গ্রামের লালগড় থানা থেকে ১৮টি এ রকম আগ্নেয়াস্ত্র চুরির অভিযোগে জামবনি থানার সাব ইনস্পেক্টর তারাপদ টুডুকে বুধবার গ্রেফতার করে ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশ। তারাপদের সঙ্গে গ্রেফতার করা হয়েছে আরও তিন জনকে। তাঁরা যদিও পুলিশ কর্মী নন। জেলা পুলিশের এক আধিকারিকের দাবি, বড় একটি অস্ত্রপাচার চক্র এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত।

জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে জামবনি থানায় কর্মরত তারাপদ আগে লালগড় থানায় কর্মরত ছিলেন। থানার মালখানার দায়িত্বেই ছিলেন তিনি। জেলা পুলিশের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, তারাপদ ৬ জুলাই ২০১৮ থেকে ২৭ জুন ২০১৯ পর্যন্ত লালগড় থানার মালখানার দায়িত্বে ছিলেন। পুলিশ সূত্রে খবর, ২০০৮ থেকে পরবর্তী প্রায় চার বছর লালগড় থানা এলাকায় মাওবাদীদের হাত ধরে প্রচুর অস্ত্র ঢুকেছিল। সেই সময় থেকেই বিভিন্ন সময়ে পুলিশ অনেক আগ্নেয়াস্ত্র বাজেয়াপ্ত করেছিল। সেই সমস্ত বাজেয়াপ্ত অস্ত্র নিয়ে এখনও মামলা চলছে আদালতে। ফলে, উদ্ধার হওয়া আগ্নেয়াস্ত্রগুলি রাখা ছিল থানারই মালখানাতে।

আরও পড়ুন: ‘মসজিদে অস্ত্র মজুত হচ্ছে’, বিধায়কের মন্তব্যে ভিন্ন প্রতিক্রিয়া বিজেপি মুখপাত্রের​

আরও পড়ুন: সিএএ-তে স্থগিতাদেশ দিল না সুপ্রিম কোর্ট, গঠিত হবে সাংবিধানিক বেঞ্চ​

তারাপদ নিজেই মালখানার দায়িত্বে থাকায়, বাজেয়াপ্ত অস্ত্রের হিসাবও রাখতেন তিনি। তাই ধীরে ধীরে অস্ত্র পাচার হয়ে যাওয়ার পরও কেউ জানতে পারেননি। তবে তারাপদ জামবনিতে বদলি হওয়ার পর থানার মালখানার হিসেব দেখতে গিয়েই প্রকাশ্যে আসে অন্তত ১৮ টি বাজেয়াপ্ত আগ্নেয়াস্ত্রর হদিশ নেই মালখানাতে। তারাপদ বদলি হওয়ার পর মালখানার দায়িত্ব পান বিশ্বজিৎ পাঁজা। তিনি বিষয়টি থানার ওসি অরিন্দম ভট্টাচার্যকে জানান। জেলা পুলিশের কর্তাদেরও বিষয়টি জানানো হয়।

এর পরই গোটা ঘটনার তদন্তের জন্য জেলা পুলিশের একটি বিশেষ দল গঠন করা হয়। তদন্তে ধীরে ধীরে প্রকাশ্যে আসে তারাপদের ভূমিকা। জানা যায়, গোটা পরিকল্পনায় শামিল ছিল ওই থানারই এক এনভিএফ কর্মী লক্ষীরাম রাণা। ওই দু’জনে অস্ত্র থানা থেকে চুরি করে পৌঁছে দিত দিলীপ সেনাপতি এবং সুধাংশু সেনাপতি নামে দুই ব্যক্তির কাছে। বিনপুরের মুরকুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা দিলীপের বাবা সুধাংশু। জেলা পুলিশ সূত্রে খবর, প্রাথমিক তদন্তের পর মঙ্গলবার তারাপদ এবং তাঁর তিন সঙ্গীর বিরুদ্ধে এফআইআর করেন অরিন্দম ভট্টাচার্য।

জেলা পুলিশ চার জনকেই গ্রেফতার করেছে। এ দিন তাঁদের আদালতে তোলা হলে, বিচারক সকলকে পাঁচ দিনের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। তদন্তকারীরা ইঙ্গিত দিয়েছেন, হেফাজতে নিয়ে তাঁরা তারাপদর পুরুলিয়ার বাড়িতে তল্লাশি চালাবেন। ওই অস্ত্র কাদের কাছে পৌঁছেছে তা জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। তাঁদের অনুমান তারাপদ ছাড়াও আরও অনেকে যুক্ত রয়েছেন এই চক্রে।

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Theft Jamboni Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy