কোর্টের পথে জয়প্রকাশ চৌহান।ফাইল চিত্র।
গত সপ্তাহ পর্যন্ত টানা চল্লিশ দিনের জেরায় উঠে এসেছে চারটি নাম। সকলেই জমিকাণ্ডে ধৃত জয়প্রকাশ চৌহান ওরফে হিম্মতের ডান হাত-বাঁ হাত হিসেবে এলাকায় পরিচিত ছিলেন বলে পুলিশের দাবি।
অফিসারেরা জানাচ্ছেন, কেউ ছিলেন নথিপত্রে ‘মাস্টার’ হিসাবে পরিচিত। কেউ দেখতেন ‘ফান্ডিং’। একজন জমির খোঁজ ছাড়াও দলের যুবকদের সঙ্গে থাকতেন। আবার একজন ছিলেন হিম্মতের সর্বক্ষণের সঙ্গী। যদিও অগস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকেই হদিশ নেই ওই চারজনের। চম্পাসারি, প্রধাননগরের ওই বাসিন্দারা ২ জন বিহারে ও ২ জন শিলিগুড়ি মহকুমা লাগোয়া নেপালের দিকে থাকতে পারেন বলে খবর।
প্রধাননগর, চম্পাসারির ব্যবসায়ী, থেকে বাসিন্দাদের একাংশের বক্তব্য, ‘‘হিম্মতের গ্রেফতারের পরেও ওই চারজনকে এলাকায় দেখা গিয়েছিল। পুলিশ তখন আরও সক্রিয় হলে চারজনকেই পাওয়া যেত। জমি মামলার তদন্তে সুবিধেও হত।’’ পুলিশের অবশ্য যুক্তি, হিম্মতকে দু’দফায় হেফাজতে নিয়ে জেরার পরেই চারজনের সম্পর্কে তথ্য সামনে আসে। তখনই খোঁজ শুরু হলেও ততক্ষণে চারজনই গা ঢাকা দেয়।’’
শিলিগুড়ি কমিশনারেটের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘হিম্মতের সঙ্গে কাদের যোগাযোগ ছিল, কারা তাঁর হয়ে নিয়মিত বিভিন্ন কাজকর্ম করত তা জানা গিয়েছে। চারজনই পলাতক। বিহার সীমানা, নেপাল সীমান্ত-সহ বিভিন্ন এলাকায় পলাতকদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।’’
পুলিশ সূত্রের খবর, গত পাঁচ বছর ধরে হিম্মত চম্পাসারিতে রীতিমত দল তৈরি করে জমি কারবারে সক্রিয় হন। পুলিশ যে চারজনের খোঁজ পেয়েছে তার মধ্যে একজনের চম্পাসারি মেন রোড এলাকায় বিরাট স্টেশনারি দোকানও রয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে দোকানের পিছনের একটি ১০ কাঠার জমি দখলের অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি শহরেরই আর এক ব্যবসায়ী ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছেন। তেমনিই, আর একজন সঙ্গীর বিরুদ্ধে দিন দশেক আগেই এক সামরিক বাহিনীর জওয়ান জমি দখলের অভিযোগ করেছেন।
চম্পাসারির বাজারের দু’জন প্রবীণ ব্যবসায়ী জানান, ওই চারজনের মধ্যে তিনজনই বিহারের বাসিন্দা বলে সবাই জানে। এলাকায় জমি কেনাবেচার কারবার শুরুর পরেই এদের উত্থান। পরে হিম্মতের সঙ্গে এদের ঘোরাফেরা করতে দেখা যেত। বাসিন্দাদের দাবি, আরও আগেই এদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিতে হত পুলিশ-প্রশাসনের।
হিম্মতের মামলার তদন্তকারী অফিসারদের একজন জানান, ওই চারজনের মধ্যে একজন জমির নথিপত্র তৈরিতে পারদর্শী বলে জানা গিয়েছে। ভূমি দফতরের বিভিন্ন কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তিনি জমির রেজিস্ট্রি, নামবদল, গিফট ডিড, নামজারি-মত নানা কাজ করে দিতেন। ওই কাজ করতে গিয়ে তিনি বেআইনি ভাবে কোনও কিছু করেছেন তা দেখা হচ্ছে। এখন অবধি ধৃতদের হেফাজত থেকে পাওয়া নথিপত্র পরীক্ষা হচ্ছে। এলাকার তৃণমূল নেতা দিলীপ বর্মন বলেন, ‘‘দলের ছাতার তলায় থেকে অসামাজিক কাজ চলবে না। পুলিশ-প্রশাসনের উপর আমাদের ভরসা রয়েছে। নিশ্চয়ই ধাপে ধাপে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy