Advertisement
২১ নভেম্বর ২০২৪
Kitchen Cleaning Tips

রান্নাঘরের কোন ৫ জিনিস থেকে সালমোনেল্লা ব্যাক্টেরিয়া ছড়াতে পারে? কী ভাবে পরিষ্কার রাখবেন?

রান্নাঘরের বেশ কিছু ব্যবহারের জিনিস ঠিকমতো পরিষ্কার না হওয়ায় তা হয়ে উঠছে রোগ-জীবাণুর আঁতুড়ঘর। এমন কয়েকটি জিনিস আছে যা নিয়মিত ব্যবহার করা হয় অথচ সে ভাবে পরিচ্ছন্ন রাখা হয় না। আর সেই সব জিনিস থেকেই ছড়াতে পারে সংক্রামক সব ব্যাক্টেরিয়া।

Here’s a look at 5 kitchen items that are harbouring killer bacteria

রান্নাঘরের কয়েকটি জিনিসেই সংক্রামক ব্যাক্টেরিয়া, ছত্রাকের জন্ম হয়। ছবি: ফ্রিপিক।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০২৪ ১২:০১
Share: Save:

করোনার সময়ে রান্নাঘর একটু বেশি সচেতন ভাবেই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার প্রবণতা বেড়ে গিয়েছিল। কিন্তু কোভিড- উদ্বেগ কমে যাওয়ার পরে সেই প্রবণতা কমে গিয়েছে অনেকটাই। বসার বা শোয়ার ঘর পরিচ্ছন্ন রাখার যে প্রচেষ্টা দেখা যায়, রান্নাঘরের ক্ষেত্রে ততটা নয়। ফলে রান্নাঘরের বেশ কিছু ব্যবহারের জিনিস ঠিকমতো পরিষ্কার না হওয়ায় তা হয়ে উঠছে রোগ-জীবাণুর আঁতুড়ঘর। এমন কয়েকটি জিনিস আছে, যা নিয়মিত ব্যবহার করা হয় অথচ সে ভাবে পরিচ্ছন্ন রাখা হয় না। আর সেই সব জিনিস থেকেই সালমোনেল্লা, ই.কোলাইয়ের মতো মারাত্মক সংক্রামক ব্যাক্টেরিয়া ছড়িয়ে পড়ছে। দীর্ঘ দিন রান্নাঘরের সেই সব অপরিচ্ছন্ন জিনিসপত্র ব্যবহার করতে থাকলে তা থেকে আন্ত্রিক ও পেটের গোলযোগ দেখা দিতে পারে। এমনকি খাবারে বিষক্রিয়া হওয়ার আশঙ্কাও থাকবে।

রান্নাঘরের কোন সাত জিনিস জীবাণুমুক্ত রাখবেন?

১) রান্নাঘরের তোয়ালে

সব রান্নাঘরেই হাত মোছার জন্য তোয়ালে রাখা হয়। সেটি রোজ পরিষ্কার করেন কি? বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় পুরনো কাপড়, অপরিষ্কার কিছু ছিঁড়ে তাই দিয়েই হাত মোছার কাপড় বানানো হয়। দীর্ঘ সময় ব্যবহারের ফলে তা তেল চিটচিটে হয়ে যায়। আর সেই তেলচিটে নোংরা, রংচটা রান্নাঘর পরিষ্কারের কাপড় বা তোয়ালেই দিনের পর দিন ব্যবহার করা হয়। ভিজে কাপড় বা তোয়ালেয় সবচেয়ে বেশি সালমোনেল্লা, ই.কোলাইয়ের মতো সংক্রামক ব্যাক্টেরিয়া জন্মায়। আর সেগুলি রান্না করা খাবারে ছড়িয়ে পড়লে বিষক্রিয়া হতে দেরি হবে না।

কী ভাবে পরিষ্কার করবেন? এক মাস অন্তর রান্নাঘরের কাপড় বা তোয়ালে বদলানো উচিত। প্রতি দিন ব্যবহারের পরে সেগুলি গরম জলে সাবান দিয়ে ফুটিয়ে নিতে হবে। কাচার পর রোদে ভাল করে শুকিয় নেওয়া দরকার।

২) ইলেকট্রনিক যন্ত্র

আধুনিক রান্নাঘরে মাইক্রোওয়েভ, ব্লেন্ডার কিংবা চিমনি অত্যন্ত জরুরি সব সামগ্রী। কিন্তু এই সামগ্রীগুলি নিয়মিত পরিষ্কার করাও জরুরি। বিশেষ করে যে মিক্সারে রোজ মশলা পেষা হচ্ছে বা যে জুসারে ফলের রস বানানো হচ্ছে, তা ভাল করে না ধুলে যে খাবারের কণা লেগে থাকবে তাতেই সংক্রামক ব্যাক্টেরিয়া, ছত্রাক জন্মাবে। পরে সেটি ফের ব্যবহার করার সময়ে সেই জীবাণু খাবারের মাধ্যমে পেটে গিয়ে সংক্রামক রোগ ছড়াবে।

কী ভাবে পরিষ্কার করবেন? উষ্ণ জলে তরল সাবান মিশিয়ে তা দিয়ে ভাল করে রোজ মিক্সার ও জুসারের বিভিন্ন অংশ পরিষ্কার করতে হবে। তার পর শুকনো কাপড় দিয়ে মুছে নিতে হবে।

৩) সব্জি কাটার ছুরি, বটি

বঁটি, চপার বা ছুরি দিয়ে সব্জি বা মাছ-মাংস কাটাকাটি করার সময়ে জীবাণু লেগে যেতে পারে। তাই এগুলিকে নিয়মিত জীবাণুমুক্ত রাখাই বাঞ্ছনীয়। মাছ-মাংস কাটার সময় প্রাণীদেহ থেকে ছড়িয়ে পড়া রোগজীবাণু লেগে যেতে পারে বটিতে। তা ছাড়া সব্জি কাটার তার থেকেও জীবাণু সংক্রমণ হতে পারে।

কী ভাবে পরিষ্কার করবেন? শাকসব্জি কাটার পরে ছুরি বা বটি ভাল করে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। ধুয়ে নেওয়ার পর সব সময়ে পরিষ্কার একটি কাপড় দিয়ে মুছে তার পর রাখুন।

৪) আনাজ কাটার বোর্ড

ছুরি দিয়ে সব্জি কাটার ক্ষেত্রে অনেকেই চপিং বোর্ড ব্যবহার করেন। এতে বেশ সুবিধা হয়। শুধু ফল কিংবা সব্জি নয়, মাছ বা মাংস কাটতেও চপিং বোর্ডের ব্যবহার হয় অনেক বাড়িতে। কিন্তু যে বোর্ডে মাছ-মাংস কাটা হয়, সেটায় শাকসব্জি কিংবা ফল কাটা একেবারেই উচিত নয়। কাঁচা মাছ কিংবা মাংস কাটার পরেও বোর্ডে লেগে থাকতে পারে জীবাণু। তাই ভাল করে ধুয়ে নেওয়া দরকার।

কী ভাবে পরিষ্কার করবেন? সপ্তাহে অন্তত এক দিন বোর্ডটি ভাল করে তেল মাখিয়ে পরিষ্কার করুন। কাঠের বোর্ড ব্যবহার করলে তবেই এই প্রক্রিয়াটি কাজে লাগবে। তেল লাগালে জীবাণু সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা থাকবে না। একটি বড় গামলায় জল, তরল সাবান ও নুন দিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন। তার পর এই মিশ্রণে বোর্ডটি মিনিট দশেক ভিজিয়ে রাখুন। হয়ে গেলে স্পঞ্জ দিয়ে ভাল করে ঘষে ঘষে পরিষ্কার করে নিন।

৫) রান্নাঘরের সিঙ্ক

রান্নাঘরের সিঙ্কে সবচেয়ে বেশি ময়লা জমে। সব্জি বা শাক-পাতা পরিষ্কার করা থেকে মাছ-মাংস ধোয়া, নোংরা বাসন মাজার কাজ সিঙ্কেই হয়। ফলে সেটি রোজ পরিষ্কার না করলে সেখান থেকেই সবচেয়ে বেশি রোগ-জীবাণু ছড়াতে পারে। কেবল বেসিনটি নয়, সিঙ্কের মুখ এবং তার চারপাশের জায়গাও পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।

কী ভাবে পরিষ্কার করবেন?

সিঙ্কের মুখে বেকিং সোডা ঢালুন। সোডার সমপরিমাণ ভিনিগার মিশিয়ে দিন। ভিনিগার দেওয়ার পর সিঙ্ক থেকে বুদ্‌বুদ বেরোনো শুরু হবে। তখন সিঙ্কের মুখ বন্ধ করে দিন ঢাকনা দিয়ে। ধীরে ধীরে পরিষ্কার করে হয়ে যাবে। সিঙ্কের মুখে জমে থাকা ময়লা পরিষ্কার করতে গরম জলের বিকল্প নেই। তবে গরম জলের সঙ্গে যদি এক চিমটে নুন মিশিয়ে নেওয়া যায় তা হলে আরও বেশি কার্যকর হবে। স্টিলের সিঙ্ক হলে স্ক্রাবারে ভিনিগার নিয়ে সিঙ্ক ভাল করে ঘষে নিন। ওই অবস্থায় রেখে দিন ঘণ্টাখানেক। তার পর বাসন মাজার তরল সাবান দিয়ে ভাল করে ধুয়ে নিলেই পরিষ্কার হয়ে যাবে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy