হাওড়ায় হুগলির চণ্ডীতলা থানার আইসি জয়ন্ত পালের গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় ‘রহস্যময়ী’র ভূমিকা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। পুলিশ সূত্রে খবর, তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, জয়ন্তের সঙ্গে ওই যুবতীর আগে থেকেই পরিচয় ছিল। কিন্তু ঠিক কী ঘটেছিল সে দিন, কেনই বা গুলি চলল, সেই সব প্রশ্নের এখনও সঠিক উত্তর মিলছে না। আইসির বয়ানে অনেক অসঙ্গতি রয়েছে বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা। অন্য দিকে, জয়ন্ত তাঁর পূর্বপরিচিত নন বলেই দাবি করেছে যুবতীর পরিবার।
বুধবার গভীর রাতে মধ্য হাওড়ার নেতাজি সুভাষ রোডের পাশে গৌড়ীয় মঠের কাছে একটি নির্জন গলিতে গুলিবিদ্ধ হন জয়ন্ত। প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে পুলিশ সূত্রের দাবি, আইসি নিজেই সঙ্গে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে বাঁ হাতে গুলি চালিয়েছিলেন। পরে তাঁকে হাওড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। জয়ন্তকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছিলেন তাঁর সঙ্গেই থাকা এক যুবতী এবং আরও তিন জন।
গুলি চলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন হাওড়া সিটি পুলিশের আধিকারিকেরা। ঘটনাস্থল থেকে একটি গুলির খোল উদ্ধার হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, কার্তুজ মিললেও রিভলভার মেলেনি। ফলে গুলি সার্ভিস রিভলভার না অন্য কোনও আগ্নেয়াস্ত্র থেকে চালানো হয়েছে, তা স্পষ্ট নয়। উদ্ধার হওয়া গুলির খোলটি ফরেন্সিকে পাঠানো হবে। তা থেকেই বোঝা যাবে, গুলি সার্ভিস রিভলভার থেকে চালানো হয়েছিল না কি অন্য আগ্নেয়াস্ত্র থেকে।
ঘটনার দিন জয়ন্তের সঙ্গে থাকা ওই যুবতীর নাম-পরিচয় জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। পুলিশ সূত্রে খবর, যুবতী হাওড়ার সাঁকরাইল এলাকার বাসিন্দা। তাঁর সঙ্গে সমাজমাধ্যমে আলাপ হয়েছিল জয়ন্তের। এলাকার অনেকের দাবি, ওই পুলিশ অফিসার এবং তাঁর সঙ্গিনীকে প্রায়ই মঠের উল্টো দিকে একটি বহুতলের ফ্ল্যাটে আসতে দেখা যেত। কিন্তু এই দাবির সত্যতা যাচাই করছে পুলিশ।
শুক্রবার ওই যুবতীর বাড়ি গিয়ে জানা গেল, তিনি বাড়িতে নেই। যুবতীর মা জানান, তাঁর মেয়ে একটি বিউটি প্রোডাক্ট তৈরির কাজ করেন। বিউটি পার্লার করার ইচ্ছে তাঁর। পরিবারের দাবি, ঘটনার দিন এক বন্ধুর বাড়ি থেকে ফিরছিলেন যুবতী। তাঁর সঙ্গে আরও তিন জন ছিলেন। বন্ধুর বাড়ি থেকে ফেরার সময় গাড়িতে উঠতে গিয়ে দেখেন, গাড়ির সামনে ওই পুলিশ অফিসার রাস্তায় পড়ে রয়েছেন। রক্তাক্ত অবস্থায় ওই অফিসারকে পড়ে থাকতে দেখে যুবতী ও তাঁর বন্ধুরাই হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন। তাঁর মেয়ে নির্দোষ বলেই দাবি করেছেন যুবতীর মা।