(বাঁ দিকে) উস্তিতে নিহত বিজেপি নেতা পৃথ্বীরাজ নস্কর। ঘটনাস্থলে পুলিশি তৎপরতা (ডান দিকে)। — নিজস্ব চিত্র।
পার্টি অফিসে প্রেমিকার সঙ্গে ‘জোরজবরদস্তি’। ঠেকাতে গিয়ে বিজেপি নেতা পৃথ্বীরাজ নস্করের যৌনাঙ্গে ব্লেড চালিয়ে দিয়েছিলেন প্রেমিকা। পরে সেখান থেকে পালানোর সময় পার্টি অফিসের দরজাও বাইরে থেকে বন্ধ করে দিয়েছিলেন। দক্ষিণ ২৪ পরগনার উস্তিতে পদ্মনেতা খুনের ঘটনায় ধৃত সেই প্রেমিকাকে জেরা করে এমনই তথ্য মিলেছে বলে খবর পুলিশ সূত্রে। তার ভিত্তিতে তদন্তকারীদের অনুমান, অতিরিক্ত রক্তপাতের জেরে পার্টি অফিসের ভিতরেই প্রাণ হারান মথুরাপুর লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপির সোশ্যাল মিডিয়া ইনচার্জ পৃথ্বীরাজ।
চার দিন নিখোঁজ থাকার পর শুক্রবার রাতে পৃথ্বীরাজের দেহ উদ্ধার হয় পার্টি অফিস থেকে। প্রাথমিক ভাবে তৃণমূলের বিরুদ্ধেই দলীয় নেতাকে খুনের অভিযোগ তুলেছিল বিজেপি। শাসকদলের অবশ্য দাবি ছিল, গোষ্ঠীকোন্দলের জেরে খুন হয়েছেন পৃথ্বীরাজ। এর পরেই শনিবার সুজাতা পোদ্দার নামে এক যুবতীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি, বিজেপি নেতাকে খুনের কথা কবুলও করেছেন সুজাতা। যদিও তিনি পদ্মশিবিরের সঙ্গে যুক্ত কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
রবিবার সুজাতাকে ডায়মন্ড হারবার এসিজেএম আদালতে হাজির করিয়েছিল পুলিশ। বিচারক ধৃতের সাত দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। পুলিশ সূত্রে খবর, সুজাতা জেরায় জানিয়েছেন, তাঁর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল পৃথ্বীরাজের। ছ’বছর ধরে তাঁরা প্রেম করেছেন। সম্প্রতি পৃথ্বীরাজ একাধিক মহিলার সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ায় তাঁদের সম্পর্কের অবনতি হয়। তার মধ্যেই সোমবার রাতে সুজাতাকে পার্টি অফিসে ডাকেন পৃথ্বীরাজ। সুজাতাও যান। তার পরেই ওই ঘটনা ঘটে।
তদন্তকারীদের সূত্রে খবর, সুজাতার বক্তব্য, পার্টি অফিসের ভিতরে তাঁর সঙ্গে জোর করে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করেছিলেন পৃথ্বীরাজ। বাধা দিতে গিয়ে পাশে টেবিলে পড়ে থাকা ব্লেড দিয়ে পৃথ্বীরাজের যৌনাঙ্গে এলোপাথাড়ি আঘাত করেন তিনি। তাতে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন বিজেপি নেতা। এর পরেই সেখান থেকে সুজাতা পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় বাইরে থেকে বন্ধ করে দেন পার্টি অফিস। ফলে ভিতরেই আটকে পড়েন পৃথ্বীরাজ।
কয়েক বছর আগেই বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন পৃথ্বীরাজ। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, পৃথ্বীরাজের কাছে সব সময় তিনটি ফোন থাকত। রবিবার তাঁর বাড়িতে ভাইফোঁটার অনুষ্ঠান ছিল। বোনেদের কাছ থেকে ফোঁটা নিয়েছিলেন তিনি। তার পর সোমবার রাতে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। আর ফেরেননি। তাঁর তিনটি ফোনেই বাড়ি থেকে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু ফোন বেজে যায়। পরিবারের অভিযোগ, ফোনটি কখনও চালু থাকছিল, কখনও তা বন্ধ করে রাখা হচ্ছিল।
দু’দিন নিখোঁজ থাকার পর বৃহস্পতিবার উস্তি থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেছিল পৃথ্বীরাজের পরিবার। তার পর শুক্রবার রাতে পরিবারের সদস্যেরা জানতে পারেন, দলীয় কার্যালয়ের ভিতরে তাঁর দেহ পড়ে আছে। পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। তালা ভেঙে উদ্ধার করা হয় দেহ। ময়নাতদন্তের জন্য তা পাঠানো হয়েছে । পুলিশ সূত্রে খবর, ডায়মন্ড হারবার পুলিশ মর্গে পরিবারের উপস্থিতিতেই বিজেপি নেতার দেহের ময়নাতদন্ত হয়েছে। ভিডিয়োগ্রাফিও করা হয়েছে ময়নাতদন্তের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy