Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Birbhum

পুজোর মধ্যে গরু সামলাতে নাকাল পুলিশ

গত কয়েক সপ্তাহে জেলায় শ’তিনেক গরু-মোষ ধরেছে রামপুরহাট ও সিউড়ি থানা। অভিযোগ, বিহার-ঝাড়খণ্ড হয়ে সেই গবাদি পশু মুর্শিদাবাদে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল।

রামপুরহাটে জাতীয় সড়কে উদ্ধার হওয়া গরু হাঁটিয়ে আনতে হচ্ছে  পুলিশকেই। ফাইল চিত্র

রামপুরহাটে জাতীয় সড়কে উদ্ধার হওয়া গরু হাঁটিয়ে আনতে হচ্ছে পুলিশকেই। ফাইল চিত্র

দয়াল সেনগুপ্ত 
সিউড়ি শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০২২ ০৫:৫০
Share: Save:

গরু পাচারের অভিযোগে ইতিমধ্যেই শিরোনামে বীরভূম জেলা। এই মামলায় সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। তার পরে পুলিশের একাধিক অভিযানে জেলায় উদ্ধার হয়েছে প্রচুর গরু-মোষ। পুজোর মধ্যে সেই গরু-মোষ রাখতে গিয়েই নাজেহাল জেলা পুলিশ।

গত কয়েক সপ্তাহে জেলায় শ’তিনেক গরু-মোষ ধরেছে রামপুরহাট ও সিউড়ি থানা। অভিযোগ, বিহার-ঝাড়খণ্ড হয়ে সেই গবাদি পশু মুর্শিদাবাদে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। বৈধ নথি না থাকায় পাচারের অভিযোগে পুলিশ গ্রেফতারও করেছে অনেককে। কিন্তু পুজোর মধ্যে আটক করা গরুর সামলানোর ঝক্কি সামলাতেই নাকাল পুলিশ। এক পুলিশকর্তার কথায়, ‘‘এমনিতেই পুজোর সময় জেলার আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য পুলিশকর্মীদের অত্যন্ত ব্যস্ত থাকতে হয়। পুজোর চারদিন সময় পাওয়া যায় না। তার উপরে উদ্ধার হওয়া গরু সামলানো আর এক সমস্যা।’’

জেলা পুলিশ সূত্রে খবর, উদ্ধার হওয়া গরু-মোষ খোঁয়াড়ে পৌঁছে দেওয়া, রক্ষণাবেক্ষণে নজরদারি, প্রাণী সম্পদ বিকাশ দফতরের চিকিৎসকদের দিয়ে নিয়মিত গরু-মোষের স্বাস্থ্য পরীক্ষা, কোনও গরু-মোষ মারা গেলে তার ময়নাতদন্ত করানো, আদালতের নির্দেশ পালন-সহ নানা কাজ রয়েছে। পুজোর মধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজ সামলে এই কাজের জন্য লোক কোথায়!

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, যে সরকারি খোঁয়াড়ে উদ্ধার হওয়া গরু রাখা হয়, সেগুলিতে যথাযথ পরিকাঠামো না থাকলে সমস্যা হয়। যাঁদের গরু পাচারকারী সন্দেহে ধরা হয়েছে, তাঁরা যদি উপযুক্ত নথি আদালতে পেশ করতে পারেন, সে ক্ষেত্রে গরু-মোষগুলিকে ‘রিলিজ’ করে দেওয়া হয়। কিন্তু তা না হলে সমস্যা বাড়ে। পরে আদালতের নির্দেশে হাঁক বা নিলাম করে সর্বোচ্চ দামে উদ্ধার হওয়া গরু-মোষ অন্যদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। যত দিন গরুগুলিকে রাখা হয়েছে, সেই খরচের টাকা বাদ দিয়ে বাকিটা সরকারি কোষাগারে জমা হয়। কিন্তু এখন সেই খরচের একটা অংশ পুলিশকেই বহন করতে হচ্ছে। কারণ যতদিন গরু, মোষগুলি খোঁয়াড়ে থাকছে, সেগুলির অলিখিত দায়িত্ব পুলিশের উপর বর্তায়। খোঁয়াড়ে আনার জন্য গরু মোষ নিয়ে আসাও ঝক্কির। এর আগে রামপুরহাটে জাতীয় সড়কে উদ্ধার হওয়া গরু লাঠি দিয়ে হাঁটিয়ে নিয়ে আসতে দেখা গিয়েছে পুলিশকে।

অনেক ক্ষেত্রে কেনাবেচার জন্যও গরু নিয়ে যাওয়া হয়। পাচারের সন্দেহে আটক হলেও পরে নথি দেখিয়ে গরু ছাড়িয়ে নিয়ে যান মালিক। সে ক্ষেত্রেও বেশ কয়েক দিনের হয়রানি হয় পুলিশের। সেপ্টেম্বরেই সিউড়িতে আটক হওয়া শতাধিক গরু মোষের ঠাঁই হয়েছিল সিউড়ি ১ বাতাসপুরে একটি সরকারি খোঁয়াড়ে। সেখানে উপযুক্ত জায়গাও ছিল না। তিন দিন সেখানে থাকার পর সিউড়ি আদালতে উপযুক্ত নথি দেখিয়ে সেগুলিকে নিয়ে যান মালিকেরা। ওই খোঁয়াড়ের দায়িত্বে থাকা গোলাম মহম্মদ খান বলেন, ‘‘খোঁয়াড়ে এত জায়গা নেই। তাই গরু মোষগুলিকে আশপাশের বাড়িতে রাখতে হয়েছিল। এত সংখ্যাক গরু মোষের খাবার জোটানোও খুব সমস্যার ছিল। সেটা অনেকাংশে মোষের মালিকরাই বহন করেছেন।’’

পুলিশ সূত্রে খবর, গরু পাচার রুখতে অভিযান নিয়মিত চলবে। সে ক্ষেত্রে আরও গরু-মোষ আটক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আবার উৎসবের মরসুমও চলবে কালীপুজো পর্যন্ত। তাই গরু-মোষ সামলানোর ঝক্কি যে বাড়বে, তা মানছেন পুলিশ কর্তারাই।

অন্য বিষয়গুলি:

Birbhum Cattle police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy