বহরমপুরে একটি আলোচনাসভায় বাংলাদেশের চলচ্চিত্র নির্মাতা শাহরিয়ার কবির।
কিছু দিন আগে, ভারতীয় হাইকমিশনের উদ্যোগে দিল্লিতে প্রদর্শিত হয়েছিল ছবিটি। লখনউ এবং কলকাতাতেও সরকারি উদ্যোগেই দেখানো হয়েছে ছবিটি। বাংলাদেশের পরিচিত তথ্যচিত্র নির্মাতা তথা বিশিষ্ঠ মানবাধিকার কর্মী শাহরিয়ার কবীরের সেই স্বল্প দৈর্ঘের ‘মিথাইজ ড্রিম’-এর প্রদর্শন থমকে গেল বহরমপুরে। বুধবার বিকেলে বহরমপুরে গোরাবাজার আইসিআই এর সভাগৃহে শাহরিয়ার কবীরের উপস্থিতিতে ওই ছবি দেখানো বন্ধ করে দেয় জেলা পুলিশ। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে আয়োজকদের বলা হয়, আপাতত ওই ছবি দেখানো যাবে না। মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার অজিত সিংহ যাদব বলেন, ‘‘বিদেশি ওই তথ্যচিত্র এ দেশে দেখানোর শংসাপত্র দেখাতে পারেননি উদ্যোক্তারা।’’ তবে জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা বলেন, ‘‘এ ব্যাপারে আমার কিছুই জানা নেই।’’ এখন প্রশ্ন, তা হলে দিল্লি-কলকাতায় সে ছবি দেখানো হল কী করে? এ ব্যাপারে জেলা পুলিশের কাছে কোনও সদুত্তর মেলেনি।
এ দিনের আলোচনাসভার প্রধান বক্তা ছিলেন শাহরিয়ার। প্রথমে তথ্যচিত্র প্রদর্শন, তার পরেই আলোচনা করার কথা ছিল তাঁর। বুধবার বিকেলে আইসিআইএর সভাগৃহে এসে তিনি জানতে পারেন, পুলিশের পক্ষ থেকে তথ্যচিত্র প্রদর্শন বন্ধ করতে বলা হয়েছে। ঘটনায় ক্ষুদ্ধ শাহরিয়ার উদ্যোক্তাদের বলেন, ‘কলকাতায় একাধিকবার দেখানো তথ্যচিত্র পুলিশ কেন দেখাতে দেবে না?’’ শেষ পর্যন্ত পুলিশের নির্দেশ মতো তথ্যচিত্র প্রদর্শন ছাড়াই আলোচনা সভা হয়েছে। এ দিন ওই সভায় উপস্থিত আইনজীবী পার্থপ্রতিম বিশ্বাস বলেন, ‘‘আশা নিয়ে তথ্যচিত্র দেখতে এসেছিলাম। কিন্তু প্রশাসনিক হস্তক্ষেপে নিষিদ্ধ নয় এমন তথ্যচিত্র প্রদর্শন হল না। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে এটা কাম্য নয়।’’ এ দিনের আলোচনা সভায় শাহরিয়ার বলেন, ‘‘পৃথিবী জুড়ে ধর্মের নামে উন্মাদনা চলছে। মৌলবাদ সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে একজোট হতে হবে। মানবতা ও ধর্মনিরপেক্ষতা পৃথিবীজুড়ে সহ্কটের মুখে। এই সঙ্কট থেকে মুক্তি পেতে বিভিন্ন দেশে আমরা কাজ করছি। সম্প্রতি তুরস্কে এরকম মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। পাকিস্থানেও আগেই মঞ্চ হয়েছে। ভারতে একইভাবে ধর্মনিরপেক্ষ এবং মানবতাবাদীরা জোটবদ্ধ হচ্ছেন।’’
শাহরিয়ার সভায় বলেন, ‘‘ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ধর্মহিন নয় তা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান উপলদ্ধি করেছিলেন। তিনি মনে করেছিলেন ধর্মকে বাদ দেওয়া যাবে না। কিন্তু ধর্মকে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত করা যাবে না। ধর্মকে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত করলে হিংসা বিদ্বেষ জন্ম নেবে। এখনও ধর্মের নামে রাজনীতি আছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy