Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

দাড়িভিটে পুলিশ গুলি চালায়নি, দাবি ডিজি-র

দাড়িভিট হাইস্কুলের গোলমালের সময়ে কে বা কারা গুলি চালিয়েছে, তা নিয়ে সিআইডি তদন্ত চলছে।

ইসলামপুর স্কুলে গুলিতে নিহত ছাত্র রাজেশ সরকার। —ফাইল চিত্র

ইসলামপুর স্কুলে গুলিতে নিহত ছাত্র রাজেশ সরকার। —ফাইল চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০১৮ ০৪:৫৬
Share: Save:

দাড়িভিট হাইস্কুলের গোলমালের সময়ে কে বা কারা গুলি চালিয়েছে, তা নিয়ে সিআইডি তদন্ত চলছে। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার ইসলামপুরে পুলিশ-প্রশাসনের অফিসারদের সঙ্গে বৈঠকে রাজ্য পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্র জানিয়ে দিলেন, দাড়িভিটে পুলিশ গুলি চালায়নি। ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের নিরাপত্তা উপদেষ্টা সুরজিৎ কর পুরকায়স্থ। ডিজি বলেন, ‘‘পুলিশ গুলি চালায়নি। কে গুলি চালিয়েছে, তা সিআইডি তদন্ত করে দেখছে। এখনই এর বেশি কিছু বলা যাবে না।’’

ডিজি-র এই বক্তব্যে অসন্তুষ্ট রাজেশ সরকার ও তাপস বর্মণের গ্রাম দাড়িভিট। দুই পরিবারের কয়েক জন মনে করেন, তদন্ত এখনও চলছে, এর মধ্যে পুলিশকে সন্দেহের বাইরে রাখলেন ডিজি। তাতেই বোঝা যাচ্ছে সিআইডি তদন্ত কোন দিকে যেতে পারে। সিবিআই তদন্তের দাবিতে দুই মা তাই আন্দোলনের পথ থেকে সরতে নারাজ।

এ দিনই সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়ে হাইকোর্টে আলাদা দু’টি মামলা দায়ের করেছেন রাজেশের বাবা নীলকমল সরকার ও তাপসের বাবা বাদল বর্মণ। দু’জনেই মামলায় ছেলেদের মৃত্যুর জন্য পুলিশকে দায়ী করেছেন। তাঁদের আইনজীবী পার্থ ঘোষ জানান, মামলার আবেদনে তাঁর মক্কেলরা বলেছেন, রাজ্য সরকার সিআইডি-কে দিয়ে গুলি চালানোর তদন্ত করাচ্ছে। সিআইডি-র সেই তদন্তকারীরা রাজ্য পুলিশেরই কর্মী। নিহতদের অভিভাবকদের প্রশ্ন, এ ক্ষেত্রে জেলা পুলিশের বিরুদ্ধে সিআইডি নিরপেক্ষ তদন্ত কী ভাবে করবে? মামলায় এলাকার মন্ত্রী, বিধায়কের নামও জুড়ে দিয়েছেন অভিভাবকেরা। আগামী সপ্তাহে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর আদালতে এই মামলা দু’টির শুনানির সম্ভাবনা।

রাজেশ-তাপসের পরিবার থেকে আরও প্রশ্ন তোলা হয়েছে, পুলিশ যদি গুলি না-ই চালায়, তা হলে দুষ্কৃতীরা তাদের সামনে গুলি চালিয়ে পালিয়ে গেল কী ভাবে? এই ব্যর্থতার দায়ে কেন পুলিশের দায়িত্বপ্রাপ্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না?

দাড়িভিটের এই ক্ষোভের মধ্যে ইসলামপুর মহকুমাশাসকের দফতরে বসে শান্তিশৃঙ্খলা নিয়ে বৈঠক করেন ডিজি। হাজির ছিলেন জেলাশাসক অরবিন্দ কুমার এবং পুলিশ সুপার সুমিত কুমারও। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় এত গুলি-বোমা ব্যবহার বেড়ে যাওয়া নিয়ে প্রশ্ন ওঠে বৈঠকে। ডিজি প্রয়োজনে বিহারের পড়শি জেলার পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় বাড়ানোরও পরামর্শ দেন। দুপুরে তিনি জেলার প্রত্যেকটি থানার আইসি এবং ওসিদের নিয়ে বৈঠক করেন। তাঁর কথায়, ‘‘মনোবল হারাবেন না। সামনে দুর্গাপুজো। উৎসব যাতে শান্তিতে হয়, তা নিশ্চিত

করুন।’’ এ দিন ইসলামপুরে ছিলেন রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীও। তিনি বলেন, ‘‘সিআইডি তদন্ত শুরু করেছে। গুলির ঘটনার কোনও ফুটেজ নেই। তদন্তের পরই স্পষ্ট হবে বিষয়টি।’’ তাপস-রাজেশদের পরিবারকে বার্তা দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমি কেন, কেউই তাঁদের ছেলেদের ফিরিয়ে দিতে পারবে না। তবে ওঁদের সব রকম সহযোগিতা করা হবে। ওঁরা চাইলে সকলে মিলে পৌঁছে যাব।’’

অন্য বিষয়গুলি:

DGP Islampur School Firing Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE