কোন কোন ভুল করলে ধরা পড়ে খুনি— পাড়ার চায়ের দোকানের আড্ডায় বন্ধুদের কাছে খুঁটিয়ে জানতে চেয়েছিল যুবক। খুনের শাস্তি কী হতে পারে তা নিয়েও নানা মুনির নানা মত শুনেছিল মন দিয়ে। উত্তর ২৪ পরগনার গোপালনগরে এক প্রৌঢ় খুনের তদন্তে নেমে পুলিশের হাতে সূত্র বলতে এসেছিল এটুকুই। তবে বন্ধুদের গুলতানির সেই সূত্র ধরেই কিনারা হয়েছে খুনের। ধরা পড়েছে মূল অভিযুক্ত সুশীল সাঁতরা।
গত ১৮ মে রাতে বনগাঁর গোপালনগরের পোলতা গ্রামে বাড়ি ফেরার পথে খুন হন জয়দেব সরকার (৫০) নামে এক ব্যবসায়ী। ধারালো অস্ত্র্র দিয়ে কোপানো হয়েছিল তাঁকে। বনগাঁ হাসপাতালের ডাক্তারেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
জেলা পুলিশ সূত্রের খবর, তদন্তে নেমে হোঁচট খান অফিসারেরা। একে অন্ধকারের মধ্যে খুন, তায় কোনও প্রত্যক্ষদর্শী নেই। খুনে ব্যবহৃত অস্ত্র লোপাট। এমনকী, ঘটনাস্থলে খুনি এমন কোনও চিহ্ন রেখে যায়নি, যার সূত্রে তদন্তে এক চুলও এগনো যায়। উত্তর ২৪ পরগনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘কিনারা করতে বেগ পাচ্ছিলাম।’’
আচমকা স্থানীয় সূত্রে (সুশীলের বন্ধুবান্ধবদের কাছ থেকে) পুলিশের কানে আসে, এলাকার চায়ের দোকানে খুন নিয়ে এক জিজ্ঞাসু যুবকের গল্প। ভাস্করবাবুর কথায়, ‘‘যুবক চায়ের দোকানে বসে অনেক ক্ষণ ধরে খুন-ধরা পড়া-শাস্তি— এ সব নিয়ে অনেক কথা বলেছে জেনে সন্দেহ হয় আমাদের।’’
শুরু হয় খোঁজ। জানা যায়, বছর আঠাশের সুশীলের বাড়ি পোলতা গ্রাম লাগোয়া এলাকাতেই। সে পেশায় ট্রাকের খালাসি। সেই ট্রাকের চালকের সঙ্গে যোগাযোগ করে পুলিশ জানতে পারে, ১৮ মে, খুনের দিন ট্রাকটি সারানোর দরকার ছিল। চালক সে জন্য সুশীলকে ফোন করে গোপালনগরের একটি গ্যারাজে ডেকেছিলেন। কিন্তু সে দিন তো বটেই সুশীল তার পরে আর কোনও দিনই কাজে যায়নি। বাড়িতে গিয়ে সুশীলকে না পেয়ে তল্লাশির মাত্রা বাড়ায় পুলিশ। শেষ পর্যন্ত মোবাইলের ‘টাওয়ার লোকেশন’ দেখে নদিয়ার চাকদহ থেকে ধরা হয় তাকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy