ভোল বদলে বাঁচার চেষ্টা জলে, পুলিশের জালে রাজকুমার মাইতি। ছবি— সংগৃহীত।
চুল, দাড়ি, গোঁফ কামিয়ে মুখের ভোল বদলে ফেলে পালিয়েও শেষ রক্ষা হল না। পুলিশের জালে ধরা পড়ে গেলেন দুই বিজেপি কর্মী রাজকুমার মাইতি ও বিকাশ ঘোষ। বিজেপির নবান্ন অভিযানের দিন অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার দেবজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে রাস্তায় ফেলে লাঠি দিয়ে পেটানোর যে ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছিল, তাতে চিহ্নিত হয়েছিলেন এই দু’জনও।
পুলিশ সূত্রে খবর, দমদমের বাসিন্দা রাজকুমার পেশায় শিক্ষক। ঘটনার পর চুল, দাড়ি, গোঁফ কামিয়ে পূর্ব মেদিনীপুরে পালিয়ে যান। কিন্তু তত ক্ষণে তাঁর পুলিশ পেটানোর ভিডিয়ো চার দিকে ছড়িয়ে পড়েছে। সেই ছবি ধরে খোঁজ করতেই লালবাজার জানতে পারে, ওই ব্যক্তি দমদমের বাসিন্দা। সেখানে গিয়ে খোঁজখবর নিলে জানা যায়, তাঁর আদি বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুরে। এগরা থেকে গ্রেফতার করা হয় রাজকুমারকে।
একই ভাবে সে দিন পুলিশ পেটানোর ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছিল বিকাশ ঘোষকেও। তিনি দক্ষিণ কলকাতার বাসিন্দা। পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে নিজের মাথা মুড়িয়ে ফেলেন। কামিয়ে ফেলেন দাড়িও। তার পর পালিয়ে যান দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলিতে। কিন্তু এ ক্ষেত্রেও শেষরক্ষা হল না। কুলতলি থেকে বিকাশকে গ্রেফতার করে আনে কলকাতা পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্তরা এই ঘটনা ঘটানোর পরই বুঝতে পারেন বড়সড় গোলমালে পড়ে গিয়েছেন। কারণ, টেলিভিশন থেকে শুরু করে নেটমাধ্যম— সেই ভিডিয়ো ঘুরতে শুরু করেছে সর্বত্র। তাই পুলিশের থাবা এড়াতে ভোল বদলে ফেলেন তাঁরা। তার পর বাড়ি ছেড়ে চম্পট। যদিও শেষ পর্যন্ত পুলিশের হাত এড়াতে পারলেন না।
লালবাজার সূত্রে খবর, কলকাতা পুলিশ এলাকায় দায়ের হওয়া ছ’টি মামলায় প্রায় ৫০ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। পুলিশ আধিকারিককে মারধর এবং পুলিশের গাড়ি জ্বালানোর ঘটনায় ইতিমধ্যেই ২৩ জনকে গ্রেফতার করেছে লালবাজার।
মঙ্গলবার বিজেপির নবান্ন অভিযান ঘিরে রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে কলকাতা ও হাওড়ার কিছু এলাকা। মধ্য কলকাতায় এমজি রোড ও রবীন্দ্র সরণির ক্রসিংয়ের কাছে বিজেপির পতাকাধারীদের হাতে আক্রান্ত হন এসি দেবজিৎ চট্টোপাধ্যায়। বিজেপির অভিযানে যোগ দিতে আসা লোকজনকে পুলিশের একটি গাড়িকে ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দিতেও দেখা যায়। এই দুটি ঘটনার ভিডিয়োই ছড়িয়ে পড়ে চার দিকে। লালবাজার সূত্রে খবর, সেই ভিডিয়ো দেখে অনেকেই স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে পুলিশকে অভিযুক্তদের সম্পর্কে পুলিশকে তথ্য দিয়েছেন। পাশাপাশি, পুলিশ নিজের সোর্স ব্যবহার করেও অভিযুক্তদের চিহ্নিত করার কাজ প্রায় শেষ করে এনেছে বলে জানা গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy