মঙ্গলবারের জনসভার জন্য তৈরি হচ্ছে মঞ্চ। কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট কলেজের মাঠে। নিজস্ব চিত্র
দুয়ারে কড়া নাড়ছে পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার আগে আগে তিনি আসছেন। ফলে কল্যাণী থেকে করিমপুর কোথাও কোনও রকম ত্রুটি রাখতে চাইছেন না তাঁর সেনারা।
আজ, সোমবার জেলায় আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথমে তিনি যাবেন মায়াপুর। মঠমন্দিরের কর্তাদের সঙ্গে কথা বলে আসবেন কৃষ্ণনগর। পাঁচটায় প্রশাসনিক বৈঠক। রাতে থাকবেন সার্কিট হাউসে।
মঙ্গলবার দুপুরে তিনি জনসভা করবেন কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট কলেজের মাঠে। সেখানে কিছু সরকারি প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করবেন তিনি। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মঞ্চ তৈরি করা হচ্ছে পাইন কাঠ দিয়ে। মাথার উপরে থাকছে বিরাট ছাউনি। বিরোধীদের দাবি, এই সফরকে ঘিরে এ বার খরচ আড়াই কোটি টাকারও বেশি। যদিও এই বিষয়ে মন্তব্য করতে চাননি জেলা প্রশাসনের কর্তারা।
মঙ্গলবারের সভাকে ভিড়ে উপচে দিতে জেলার বিভিন্ন প্রান্তের নেতা-কর্মীরা সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। এ দিন তাঁরা গোটা জেলা থেকে লক্ষাধিক লোক হাজির করতে চাইছেন কৃষ্ণনগর কলেজ মাঠে। জেলার এক নেতার কথায়, “ভোটের আগে কেউ ঝুঁকি নেবে না। সকলেই লোক এনে তাঁর শক্তির পরিচয় দিতে চাইবেন।” এই সভার জন্য প্রশাসনকে সামনে রেখে দলের তরফে জেলার প্রায় সমস্ত বাসই তুলে নেওয়া হচ্ছে। কৃষ্ণনগর, রানাঘাট ও কল্যাণী থেকে মোট সাতশো বাস তুলে নেওয়া হচ্ছে। আর মুর্শিদাবাদ ও উত্তর ২৪ পরগনা থেকে একশো করে বাস আসছে এই সভায়।
ফলে মঙ্গলবার যে গোটা জেলার মানুষকে নাকাল হতে হবে তা মেনে নিচ্ছেন প্রশাসনের কর্তাদের একাংশ। যদিও বিকল্প হিসাবে জেলায় সরকারি বাস বাড়ানো হচ্ছে বলেও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ, তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই সামান্য। এই বিষয়ে মন্তব্য করতে চাননি আঞ্চলিক পরিবহণ আধিকারিক সৌমিত্র বিশ্বাস।
পঞ্চায়েত ভোটের আগে মমতার জেলা সফর নিয়ে যথেষ্ট চাপে আছেন জেলার পুলিশ প্রশাসন থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। গত সফরে তিনি জেলাশাসক, পুলিশ সুপার থেকে শুরু করে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের ধমকেছিলেন। সেই স্মৃতি এখনও তাঁরা কেউ ভোলেননি। ফলে কোনও প্রকল্প পিছিয়ে থাকলে বা আশানুরূপ অগ্রগতি না হলে তিনি যে সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিকদের ছেড়ে কথা বলবেন না তা সকলের কাছেই পরিষ্কার।
প্রশাসনের এক কর্তা বলছেন, ‘‘গত বার ঠিকঠাক কাজ করার পরেও মুখ্যমন্ত্রীর সামনে বিষয়টি ঠিক মতো উপস্থাপন করতে না পেরে ধমক খেতে হয়েছিল। এ বারে সেই ভুল করতে রাজি নন কেউ। অনেকেই তাই সমস্ত প্রস্তুতির ফাঁকে বারবার রিপোর্টে চোখ বুলিয়ে নিচ্ছেন। যাতে মুখ্যমন্ত্রী কোনও প্রশ্ন করলে সঙ্গে সঙ্গে উত্তর দিয়ে দিতে পারেন।’’ জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘এ যেন চাকরির পরীক্ষার উত্তর মুখস্থ করা!”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy