Advertisement
৩০ অক্টোবর ২০২৪
Srijato Bandyopadhyay

Srijato Bandhyopadhyay: হ্যাঁ, ধর্মেও আছি, লুচিতেও আছি! কবি কি শুধু ব্যারাকপুরে বেড়াতে যাবে: শ্রীজাত

এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের বিজ্ঞাপনের প্রসঙ্গও টানেন তিনি।

শ্রীজাত বন্দ্যোপাধ্যায়।

শ্রীজাত বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০২১ ১২:৫৬
Share: Save:

শ্রীজাত ধর্মেও আছেন। লুচিতেও আছেন। কবি শ্রীজাতর সঙ্গে আনন্দবাজার অনলাইনের ফেসবুক লাইভের প্রোমোতে এমন কথা বলা হয়েছিল। ফেসবুক লাইভে এসে ওই কথার সূত্র ধরে তিনি বলেন, ‘‘আমরা যখন দেখি, এক জন গায়ক বা এক জন অভিনেতা বিজ্ঞাপনে আসছেন, তখন ধরে নিই, এটাই তো স্বাভাবিক। তিনি এক জন পরিচত মুখ, তিনি কেন বিজ্ঞাপন করবেন না? সেই বিজ্ঞাপন নিয়ে কারও কোনও মাথাব্যথা নেই। কিন্তু এক জন কবিকে বিজ্ঞাপনে দেখা গেলেই তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।’’
শনিবার সন্ধ্যায় লাইভ অনুষ্ঠানের জন্য দু’দিন আগে আনন্দবাজার অনলাইনের ফেসবুক পেজে যে প্রোমো প্রকাশিত হয়েছে, তাতে শ্রীজাতর উদ্দেশে এই শব্দবন্ধের ব্যবহার নিয়ে যথেষ্ট হইচই হয়েছিল। লাইভ অনুষ্ঠান চলাকালীনও জনৈক দর্শক প্রশ্ন করেন, শ্রীজাত কি ধর্মেও আছেন, লুচিতেও আছেন? তার জবাবে তিনি বলেন, ‘‘আমরা যে চিন্তার পরিকাঠামোয় বড় হই, আমাদের মধ্যে এক ধরনের আদুরে সংকীর্ণতা কাজ করে। দীর্ঘ দিন ধরেই আমি এটা পরিলক্ষণ করছি। অনেকেই ভাবেন, এক জন কবি কবিতা লিখবেন কিন্তু তিনি খেতে পাবেন না। খেতে যদি পানও, আমার চেয়ে কম খাবেন। আমি যদি ছুটি কাটাতে উটি বা মানালি যাই, কবি যাবেন ব্যারাকপুর কিংবা অশোকনগরে। এই সমস্যাটা কিন্তু শিল্পের অন্য শাখার মানুষদের নিয়ে হয় না।’’

এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের বিজ্ঞাপনের প্রসঙ্গও টানেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘আমি দেখেছি, এটা সুনীলদার সময়েও হত। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে শেষ দিন পর্যন্ত কী অপমান সহ্য করতে হয়েছে, তা আমরা সকলেই জানি। সর্ষের তেলের বিজ্ঞাপন করে সমালোচিত হতে হয়েছে সুনীলদাকে। ওই একই বিজ্ঞাপনে কিন্তু অভিনেতা, খেলোয়াড়েরাও ছিলেন। তাঁদের নিয়ে কিন্তু এত কথা হয়নি।’’

শ্রীজাতর আরও সংযোজন, ‘‘একটা ধারণা তৈরি হয়েছে, কবি আসলে খুব নিভৃত নির্জন মানুষ। অবশ্যই তিনি নিভৃত নির্জন মানুষ। এক জন রিকশাচালকও নিভৃত নির্জন। তিনি যখন দিনের শেষে ক্লান্ত হয়ে নিজের রিকশায় ঘুমোন, কারও স্পর্ধা থাকা উচিত নয় তাঁকে গিয়ে তিতিবিরক্ত করা। সেই নির্জনতা এক জন কবিরও আছে, এক জন গায়কেরও আছে। কিন্তু কবিকে যদি কোনও বিজ্ঞাপনে দেখা যায়, তখন খুব অসুবিধা হয়ে যায়। তাঁদের মনে হয়, কবির তো আসলে ট্রামের তলায় কাটা পড়ে যাওয়ার কথা ছিল। কবির তো বিনা চিকিৎসায় মারা যাওয়ার কথা ছিল। প্রশ্ন ওঠে, কবি কেন ইওরোপ বেড়াতে যাচ্ছে? তার মানে নিশ্চয়ই কোনও সমস্যা আছে। ইনি ঠিক কবির সংজ্ঞায় পড়েন না। আমরা যখন এই পূর্ব ধারণার বশবর্তী হয়ে সমাজকে দেখব, তখন কবি হিসেবে এমন জিনিস তো সহ্য করতেই হবে। যত দিন না এই আদুরে সংকীর্ণতার বেড়াজাল ভেঙে আমরা বেরোতে পারছি। এর সঙ্গে শিল্পের কোনও যোগাযোগ নেই। আমরা মনে হয়, এক জন কবিকে তাঁর কবিতা দিয়ে বিচার করা উচিত।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Srijato Bandyopadhyay Bengali Poet
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE