Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Ram Mandir Inauguration

রামের বার্তা নিয়ে দুয়ারে খিরাজরাও

গত দু’সপ্তাহ ধরে এলাকা ঘুরে এক হাজারের বেশি বাড়িতে পৌঁছেছেন খিরাজরা। মুসলিম, হিন্দু— সব পরিবারেই গিয়েছেন।

রামমন্দিরের আমন্ত্রণপত্র বিলি করছেন খিরাজ আলি খান। দক্ষিণ লাক্ষী গ্রামে।

রামমন্দিরের আমন্ত্রণপত্র বিলি করছেন খিরাজ আলি খান। দক্ষিণ লাক্ষী গ্রামে। —নিজস্ব চিত্র।

কেশব মান্না
খেজুরি শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০২৪ ০৯:২৯
Share: Save:

রামমন্দির উদ্বোধনের আমন্ত্রণপত্র নিয়ে মহল্লায় ঘুরছেন সংখ্যালঘু যুবকেরা। যে এলাকায় তাঁরা যাচ্ছেন, সেখানেও প্রধানত সংখ্যালঘুদেরই বাস। এই দৃশ্য বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর জেলা পূর্ব মেদিনীপুরের একটি গ্রাম পঞ্চায়েতে। খেজুরি-১ ব্লকের লাক্ষী গ্রামে ঘরে ঘরে যাচ্ছেন খিরাজ, আলমগির, সোহরাব, রেজাবুলরা। গত ১ জানুয়ারি থেকে। এই যুবকেরা এলাকায় বিজেপি কর্মী হিসেবেই পরিচিত। জানা গিয়েছে, আমন্ত্রণপত্রের সঙ্গে তাঁরা ওই এলাকায় বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিচ্ছেন প্রসাদী চাল এবং রামমন্দিরের ছবিও।

যাঁদের বাড়ি যাচ্ছেন খিরাজেরা, তাঁরাও মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন না। বলছেন, ‘‘মন্দির আর মসজিদ দুটোই এক। আমরা যেমন দুর্গাপুজো, কালীপুজোয় অংশ নিই, তেমনই হিন্দুরাও আমাদের ইদ এবং মহরমে শামিল হন। আমাদের মধ্যে ভেদাভেদ নেই— এই ভাবনা থেকেই রামমন্দির উদ্বোধনের আমন্ত্রণপত্র, প্রসাদী চাল নিয়ে বাড়ি বাড়ি যাচ্ছি।’’

এমন সম্প্রীতির ছবি রাজ্যের বহু জায়গাতেই আছে। অনেক ক্ষেত্রেই দুই সম্প্রদায়ের মানুষ মিলে বিভিন্ন উৎসবে মাতেন। ধর্মস্থান তৈরিতে সাহায্য করেন। সম্প্রতি পূর্ব বর্ধমানের মেমারির গ্রামে হরিবাসরের আয়োজন করতেও দেখা গিয়েছে সংখ্যালঘু মানুষদের। স্থানীয় লোকজনেরা বলছেন, লাক্ষী গ্রামেও একই ধারা।

গত দু’সপ্তাহ ধরে এলাকা ঘুরে এক হাজারের বেশি বাড়িতে পৌঁছেছেন খিরাজরা। মুসলিম, হিন্দু— সব পরিবারেই গিয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দা পেশায় গাড়িচালক শাহ আলম বলছেন, ‘‘আমন্ত্রণপত্র, প্রসাদী চাল সবই পেয়েছি। ২২ জানুয়ারি গ্রামের মন্দিরে গিয়ে পঞ্চপ্রদীপ জ্বালতে বলা হয়েছে।’’ মফিল সাহা নামে আর এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘আমন্ত্রণপত্র পেয়ে দারুণ লাগছে। তবে ওই দিন মন্দিরে যাব কি না ঠিক করিনি।’’ রাজমিস্ত্রি অশোক মল্লিকের কথায়, ‘‘এলাকায় হিন্দু ভাইয়েরা আছেন। তবু খিরাজ, রেজাবুলদের হাত থেকে রামমন্দিরের আমন্ত্রণপত্র পেয়ে ভাল লাগছে।’’

একুশের ভোটে খেজুরি বিধানসভায় পদ্ম ফুটেছিল। তবে এ বার পঞ্চায়েত ভোটে স্থানীয় লাক্ষী গ্রাম পঞ্চায়েতে জিতেছে তৃণমূল। দক্ষিণ লাক্ষী বুথেও তৃণমূল এগিয়েছিল। তবে কি লোকসভার লড়াইয়ের আগে সংখ্যালঘুদের মন জয়ে সম্প্রীতির বার্তা ছড়ানোর এই কৌশল নেওয়া হয়েছে? বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলার অন্যতম সহ-সভাপতি তাপসকুমার দোলুইয়ের দাবি, ‘‘তৃণমূল আমলে সংখ্যালঘুরা বঞ্চিত। তাঁরা বুঝতে পেরেছেন, বিজেপি বা কেন্দ্রীয় সরকার ধর্মনিরপেক্ষ।’’ তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা দলের তরফে পূর্ব মেদিনীপুরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কুণাল ঘোষের যদিও কটাক্ষ, ‘‘কেউ কেউ এ ধরনের কাজ করাচ্ছেন। যাঁরা করছেন, তাঁরাও কিছু পাওয়ার আশাতেই করছেন।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy