Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
COVID-19

Covid-19: সংক্রমণের হার ক্রমেই চড়ছে, তবু নিম্নমুখী সচেতনতা

সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০ জুন কলকাতায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৯১। পর দিন সেই সংখ্যা হয় ১৩৩। ২২ জুন সংক্রমিতের সংখ্যা বেড়ে হয় ৩৩৯।

শঙ্কা: মাস্কহীন ভিড় ধর্মতলায়। শুক্রবার।

শঙ্কা: মাস্কহীন ভিড় ধর্মতলায়। শুক্রবার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০২২ ০৫:২০
Share: Save:

করোনার দাপট বেড়ে চলেছে উত্তর ২৪ পরগনায়। এ দিকে, কলকাতার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সল্টলেকেও করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান বলছে, ২৩ জুন রাজ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৬৫৭ জন। তার মধ্যে শুধু কলকাতা ও উত্তর ২৪ পরগনাতেই আক্রান্তের সংখ্যা যথাক্রমে ২৯৯ এবং ১৮০।

সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০ জুন কলকাতায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৯১। পর দিন সেই সংখ্যা হয় ১৩৩। আবার ২২ জুন সংক্রমিতের সংখ্যা বেড়ে হয় ৩৩৯। এর পর দিন, ২৩ তারিখে তা নামে ২৯৯-এ। অর্থাৎ, এক দিনে আক্রান্ত ৪০ কমে। যদিও এই অল্প কমে যাওয়া চিকিৎসকদের স্বস্তি দিতে পারছে না। যার মূল কারণ, করোনা নিয়ে জনগণের একাংশের উদাসীনতা।

করোনার সর্বশেষ অর্থাৎ ২৩ জুনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, কলকাতা পুরসভার ১০ নম্বর বরো ফের কপালে ভাঁজ ফেলছে। গত ক’দিনের তথ্য বলছে, ওই বরোয় আক্রান্ত বাড়ছে। ২২ জুন সেখানে সংক্রমিতের সংখ্যা ছিল ৪০। ২৩ জুন হয়েছে ৫০। অতিমারির দ্বিতীয় ও তৃতীয় ঢেউয়ে সর্বাধিক চিন্তা বাড়িয়েছিল এই ১০ নম্বর বরোই। সেখানকার নিউ আলিপুর, গরফা, গল্ফ গ্রিন, যাদবপুর, নেতাজিনগর, রিজেন্ট পার্কে আক্রান্ত বেড়েছে। আবার ১২ নম্বর বরোর পাটুলি, গরফার একাংশ, কসবা, পূর্ব যাদবপুর, সার্ভে পার্ক, পঞ্চসায়রে সংক্রমিতের হার যথেষ্ট। কলকাতা পুরসভা জানাচ্ছে, ১০ নম্বর বরোর পাশাপাশি ৭, ৯, ১১ এবং ১২ নম্বর বরোতেও করোনা ছড়াচ্ছে। ২২ ও ২৩ জুন ১২ নম্বর বরোয় আক্রান্ত হয়েছেন যথাক্রমে ২৯ এবং ৩২ জন।

অন্য দিকে, কলকাতার উপকণ্ঠে থাকা উত্তর ২৪ পরগনার বিধাননগরে তিন দিন আগেও করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২৮। ২৩ জুন, বৃহস্পতিবার সেই সংখ্যা হয়েছে ৭২। বিধাননগর পুরসভা সূত্রের খবর, অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা ১৬৬। পুর কর্তৃপক্ষ জানান, কী ভাবে সংক্রমণের মোকাবিলা হবে, তা জানতে তাঁরা রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশের অপেক্ষায় আছেন।

ওই জেলারই অন্তর্গত দমদমের তিনটি পুর এলাকা মিলিয়ে দিনে ১-৩ জনের সংক্রমিত হওয়ার রিপোর্ট আসছে। গত ২০-২৫ দিন ধরে এই প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। নিজেদের পুর এলাকায় সংক্রমিতের সংখ্যা জানিয়েছে দমদমের তিন পুরসভা। দক্ষিণ দমদমে এখনও পর্যন্ত আক্রান্ত ২৫। দমদমে আক্রান্তের সংখ্যা ২১। উত্তর দমদমে গত ১৫ দিনে ৬ জন সংক্রমিত হয়েছেন। দমদমের তিন পুর কর্তৃপক্ষেরই দাবি, তাঁরা সব রকম সতর্কতামূলক পদক্ষেপ করছেন। করোনা-বিধি মেনে চলার প্রচারেও জোর দেওয়া হচ্ছে। তাঁদের এ-ও দাবি, আতঙ্কিত হওয়ার পরিস্থিতি হয়নি।

কোভিড বাড়ছে গঙ্গার পশ্চিম পাড় হাওড়াতেও। গত সাত দিনের পরিসংখ্যান বলছে, সেখানে ৫২ জন সংক্রমিত হয়েছেন। তবে একটাই ভাল খবর যে, এখনও পর্যন্ত কাউকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়নি। এক পুরকর্তা বলেন, ‘‘হাওড়া পুর এলাকায় কোভিড পরিস্থিতি খুব উদ্বেগজনক নয়। তেমনটা যাতে না হয়, তার জন্য নাগরিকদের সচেতন করা হচ্ছে।’’ হাওড়া পুরসভা জানিয়েছে, কোভিড বাড়তে থাকায় ফের চালু হয়েছে কল সেন্টার। জনবহুল জায়গায় মাস্ক পরার জন্য প্রচার শুরু হয়েছে। পুর উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলিতে নিয়মিত কোভিড পরীক্ষার পাশাপাশি প্রতিষেধক দেওয়ার কাজও চলছে।

কোভিডের পরীক্ষার উপরে বরাবরের মতোই জোর দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। তাঁদের মতে, সমস্যা বুঝলেও অনেকে পরীক্ষা করাচ্ছেন না। পরীক্ষা করালে সব জায়গাতেই আক্রান্তের সংখ্যা বাড়বে। সুতরাং এই সব পরিসংখ্যান যে পরিস্থিতির চিত্র তুলে ধরছে, তা প্রকৃত চিত্র নয় বলেই মত চিকিৎসকদের বড় অংশের।

বক্ষরোগ চিকিৎসক ধীমান গঙ্গোপাধ্যায়ের পর্যবেক্ষণ, ‘‘গত চার দিনে শহরে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ওঠানামা করছে। এটা একটা ভাল দিক। কিন্তু এ জন্য আত্মতুষ্টিতে ভুগলে চলবে না। মাস্ক না পরলে, বার বার হাত না ধুলে এই রোগের সঙ্গে লড়াই করা কঠিন হয়ে যাবে।’’

অথচ পথেঘাটে, গণপরিবহণে, এমনকি হাসপাতালেও সারি সারি মাস্কহীন মুখ ঘুরে বেড়াচ্ছে। মাস্ক ছাড়াই কাশির প্রকোপ আশপাশের মানুষকেও যেন ভুলিয়ে দিয়েছে করোনার ভয়াবহ রূপ। এই নির্লিপ্ত মনোভাবেই বিপদের কালো মেঘ দেখছেন চিকিৎসকেরা।

অন্য বিষয়গুলি:

COVID-19 COVID Cases
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy