Advertisement
২০ ডিসেম্বর ২০২৪

কাজ নেই, ভিন রাজ্যে যেতেই হয়

এলাকার মানুষের দাবি, সারা বছর এখানে কাজ নেই। সারাদিন কাজ করে মেলে না যথেষ্ট টাকাও। অনেক এলাকায় একশো দিনের কাজের প্রকল্পও বন্ধ। এই অবস্থায় সংসার চালানো দায় হয়ে যায়  মানুষের।

কাজ নেই এখানে। ভিন রাজ্যে যান এঁরাই। নিজস্ব চিত্র

কাজ নেই এখানে। ভিন রাজ্যে যান এঁরাই। নিজস্ব চিত্র

সীমান্ত মৈত্র
বনগাঁ শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০১৯ ০৪:৪৮
Share: Save:

ভিন রাজ্যে কাজে গিয়ে বিভিন্ন সময়ে বাঙালি শ্রমিকদের মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। সম্প্রতি কাশ্মীরে জঙ্গিদের গুলিতে প্রাণ গিয়েছে কয়েকজনের। কিন্তু তা সত্ত্বেও ভিন রাজ্যে গিয়ে কাজ করা বন্ধ হচ্ছে না।

এলাকার মানুষের দাবি, সারা বছর এখানে কাজ নেই। সারাদিন কাজ করে মেলে না যথেষ্ট টাকাও। অনেক এলাকায় একশো দিনের কাজের প্রকল্পও বন্ধ। এই অবস্থায় সংসার চালানো দায় হয়ে যায় মানুষের। তাই বনগাঁ মহকুমার বহু মানুষ পাড়ি দিচ্ছেন ভিন রাজ্যে বা বিদেশে। এ ভাবে বেশি টাকা রোজগারও করা যায় বলে জানান তাঁরা। তাঁদের কথায়, ‘‘সংসার তো চালাতে হবে। এখানে থাকলে তো সারা বছর কাজই মেলে না। কাজ করলে আয়ও বেশি হয় না। তাই বাধ্য হয়েই ভিন রাজ্যে

ছুটতে হয়।’’ বনগাঁর মণিগ্রাম এলাকায় দুপুরে কয়েকজন যুবক সড়কের পাশে গোল হয়ে বসে তাস খেলছিলেন। তাঁরা সকলেই বছরে দু’বার করে অন্ধ্রপ্রদেশ ও কর্ণাটকে খেত মজুরির কাজ করতে যান। প্রত্যেকবার এককালীন কয়েক হাজার টাকা নিয়ে ঘরে ফেরেন। যুবকেরা জানান, তাঁদের এলাকা থেকে জনা পঞ্চাশ মানুষ প্রতি বছর অন্ধ্রপ্রদেশ ও কর্ণাটকে যান। সেখান থেকে যা আয় করেন তাতে সারা বছর সংসার চালাতে অসুবিধা হয় না। শ্যাম মণ্ডল, সৌমেন্দ্র তরফদার, মহাদেব তরফদার, গৌর দলুইরা বলেন, ‘‘আমরা অন্ধ্রপ্রদেশে আষাঢ় ও অগ্রহায়ণ মাসে খেতে ধান রোয়ার কাজ করতে যাই। থাকা খাওয়া খরচ বাদ দিয়েও একজনের পকেটে ১৬-১৭ হাজার টাকা থাকে। এখানে তো সারা বছর কাজ থাকে না। একশো দিনের কাজ বন্ধ। কাজ করলেও টাকা পেতে দীর্ঘদিন সময় লাগে। বাইরে কাজে গেলে এককালীন মোটা টাকা হাতে পাই।’’

তাঁরা ভিন রাজ্যে গিয়ে কখনও সমস্যায় পড়েননি বলেও জানান। তবে বাঙালি শ্রমিকদের মৃত্যুর কথা তাঁদের অজানা নয়। অগ্রহায়ণ মাসের শেষে ফের তাঁরা দল বেধে অন্ধ্রপ্রদেশ, রাজস্থানে পাড়ি দেবেন।

তাঁদের কথায়, ‘‘পেটের কাছে আবার ভয় করলে চলে।’’ তবে ভয় গ্রাস করেছে কাশ্মীরে কাজ করতে যাওয়া মানুষদের। বনগাঁর মধ্য ছয়ঘড়িয়া ও হরিদাসপুর এলাকার বাসিন্দা কমল সরকার ও দীপঙ্কর বিশ্বাস ২০০৪ সাল থেকে কাশ্মীরে প্লাইউড কারখানায়

কাজ করতেন। এ বার জঙ্গি হানায় শ্রমিকদের মৃত্যুর ঘটনার পর তাঁরা রাজ্য সরকারের উদ্যোগে বাড়ি ফিরেছেন। আর তাঁরা কাশ্মীর বা ভিন রাজ্যে কাজে যেতে চান না। পরিবারের লোকজনও তাঁদের আর ছাড়বেন না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন। কেন তাঁরা কাশ্মীরে কাজ করতে যান? তাঁদের কথায়, ‘‘ওখানে কাজ করে মাসে ২০-২২ টাকা একজন আয় করি। এখানে তার অর্ধেক আয় হয়। সংসার চালানো মুশকিল।’’ কমল বলেন, ‘‘দুই মেয়ে। একজন কলেজে পড়ে। অন্যজন অষ্টম শ্রেণিতে। মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ সংসার চালানোর খরচ চালাতেই কাশ্মীরে যাওয়া। এখন এখানেই বিকল্প কাজ খুঁজতে হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Job Kashmir Workers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy