টানা তিন মাস ডেঙ্গি আর জ্বরে ভুগেছে উত্তর ২৪ পরগনা। রোজ হাজারেরও বেশি মানুষ দেখাতে এসেছেন বারাসত জেলা হাসপাতালে। শয্যা, মেঝেও ভরে গিয়েছিল রোগীতে। দিন-রাত এক করে পরিষেবা দিয়েছেন চিকিৎসক, কর্মীরা। কিন্তু পরিকাঠামো না থাকলে এই ঝড় সামলানো যেত কি না, উঠেছে সে প্রশ্নও। অনেকেই বলছেন, নতুন যন্ত্রপাতি ও ব্যবস্থায় বদলে গিয়েছে হাসপাতাল। স্বাস্থ্য দফতরের রিপোর্ট অনুযায়ী, বারাসত জেলা হাসপাতাল ছাড়াও বিধাননগর, মধ্যমগ্রাম, হাবরা, অশোকনগর, বনগাঁ, বসিরহাট, কামারহাটির সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজও ভালই সামাল দিয়েছে জ্বরের পরিস্থতি।
বারাসত হাসপাতালের এক রোগীর আত্মীয় কুন্তল চক্রবর্তী বললেন, ‘‘বছর পাঁচেক আগে এক জনকে এখানে এনে চিকিৎসা না পেয়ে ঝগড়া করেছিলাম। এখন সে হাসপাতালকে চেনাই যাচ্ছে না।’’ নতুন রং হয়েছে বারাসত জেলা হাসপাতালে। আবর্জনা পরিষ্কার করে বাগানের মধ্য দিয়ে হয়েছে ‘গ্রিন করিডর’। তৈরি হয়েছে বার্ন ইউনিট, আধুনিক সিসিইউ (ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট), এসএনসিইউ (সিক নিওনেটাল কেয়ার ইউনিট)।
সরকারি সূত্রের বক্তব্য, বিভিন্ন হাসপাতালের এই উন্নয়নে তৃণমূলের স্থানীয় সাংসদ-বিধায়কদের তহবিলের টাকা কাজে এসেছে। বারাসত হাসপাতালের সুপার সুব্রত মণ্ডলের কথায়, ‘‘সাংসদ কোটার টাকায় এই সব কাজ ছাড়াও আলট্রাসোনোগ্রাফি মেশিন, সিটি স্ক্যান, লিফ্ট, ২৪ ঘণ্টার পুলিশ কিয়স্ক হয়েছে। একসঙ্গে অনেকের রক্ত পরীক্ষার ব্যবস্থাও চালু হচ্ছে।’’ পরিসংখ্যান বলছে, গত কয়েক বছরে বারাসত-সহ এলাকার নানা হাসপাতালের উন্নয়নে প্রায় ৫ কোটি টাকা খরচ হয়েছে বারাসতের সাংসদ কাকলি ঘোষদস্তিদারের তহবিল থেকে। বারাসত জেলা হাসপাতাল, বিধাননগর, নিউটাউন, বিষ্ণুপুর, মধ্যমগ্রাম হাসপাতালে মোবাইল ট্রমা কেয়ার ইউনিট-সহ একাধিক পরিষেবা চালু হয়েছে। হাবরায় পরিস্রুত পানীয় জল, এলইডি আলো, আরজিকরে ট্রলি, প্রতীক্ষালয়, পানীয় জল, আবসাবপত্র, এসি, শৌচাগার হয়েছে। কাকলিদেবী বলেন, ‘‘দ্রুত চিকিৎসার জন্য ৫০টির মতো অ্যাম্বুল্যান্স দেওয়া হয়েছে।’’
দেগঙ্গা ও হাবরা হাসপাতালে ডেঙ্গি পরীক্ষার এলাইজা মেশিন কেনা হয়েছে খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের বিধায়ক তহবিলের টাকায়। চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তীর বিধায়ক তহবিল থেকে প্রতীক্ষালয়, সি-আর্ম-এর মেশিন হয়েছে বারাসত হাসপাতালে। মধ্যমগ্রাম হাসপাতালে বিধায়ক তহবিলের টাকাতেই সি-আর্ম, আলট্রাসাউন্ড, এলাইজা মেশিন বসেছে। মধ্যমগ্রাম পুরসভার চেয়ারম্যান তথা বিধায়ক রথীন ঘোষ বলেন, ‘‘মাতৃসদনে আইসিসিইউ, অপারেশন থিয়েটার, মৃতদেহ সংরক্ষণ ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে।’’
জেলার মানুষ তাই চান, আরও উন্নত হোক পরিষেবা। যাতে চিকিৎসা পেতে কলকাতায় আর ছুটতে না হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy