Advertisement
E-Paper

‘ভুয়ো’ বিবাহ শংসাপত্র দেখিয়ে বঙ্গে ভোটার বিদেশিরা, দাবি বিজেপির, পাল্টা প্রশ্ন তুলে আক্রমণে তৃণমূল

বিবাহ শংসাপত্রের প্রতিলিপি সংবাদমাধ্যমকে দেখিয়ে বিজেপির দাবি, ভুয়ো নথির মাধ্যমে এই সব শংসাপত্র তৈরি করা হয়েছে। পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ থেকে আসা মহিলাদের জন্য এই সব ‘ভুয়ো’ বিবাহ শংসাপত্র তৈরি করানো হয়েছে বলে তাঁদের অভিযোগ।

Pak-Bangladeshi citizens intruding WB voter list by generating fake marriage certificates, Claims BJP, TMC’s counter question for opposition and EC

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০২৫ ১৯:০৭
Share
Save

‘ভুয়ো’ বিবাহ শংসাপত্রের মাধ্যমে বাংলার ভোটার তালিকায় ‘ভুয়ো’ ভোটার ঢোকানো হচ্ছে বলে নতুন অভিযোগ তুলল বিজেপি। রাজ্য বিজেপির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় সাংবাদিক বৈঠক ডেকে দাবি করলেন, ‘‘পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের নাগরিকদের পশ্চিমবঙ্গে এনে, তাঁদের নামে ভুয়ো বিবাহ শংসাপত্র তৈরি করে, ভোটার তালিকায় তাঁদের অন্তর্ভুক্তি ঘটানো হচ্ছে।’’ তৃণমূল অবশ্য ফের নস্যাৎ করেছে বিজেপির এই অভিযোগ। সচিত্র ভোটার পরিচয়পত্র (এপিক) সংক্রান্ত গরমিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চিহ্নিত করার আগে পর্যন্ত বিজেপির এ সব অভিযোগ কোথায় ছিল? প্রশ্ন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের।

বৃহস্পতিবার দু’টি বিবাহ শংসাপত্রের প্রতিলিপি সংবাদমাধ্যমকে দেখিয়ে জগন্নাথ দাবি করেছেন, ভুয়ো নথি এবং ভুয়ো স্বাক্ষরের মাধ্যমে এই সব শংসাপত্র তৈরি করা হয়েছে। পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ থেকে আসা মহিলাদের জন্য এই সব ‘ভুয়ো’ বিবাহ শংসাপত্র তৈরি করানো হয়েছে বলে তাঁর অভিযোগ। ওই বিবাহ শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নথি হিসেবে তাঁরা আধার কার্ড জমা দিয়েছিলেন বলেও বিজেপি নেতার দাবি। বিজেপির প্রশ্ন, পাকিস্তান বা বাংলাদেশের পাসপোর্টধারী নাগরিকরা এ রাজ্যে এসে নিজেদের নামে আধার কার্ড জোগাড় করে ফেলছেন কী ভাবে? জগন্নাথের কথায়, ‘‘কমিশন নির্দিষ্ট ভাবে এ রাজ্যে ভোটার তালিকা স্বচ্ছ করতে পারছে না, তার কারণ এ রাজ্যের সরকারই তালিকায় ভূত ঢোকাতে বদ্ধপরিকর।’’

বিজেপির অভিযোগ, পাকিস্তান বা বাংলাদেশ থেকে পশ্চিমবঙ্গে এসে ‘ভুয়ো’ বিবাহ শংসাপত্র দেখিয়ে ভোটার তালিকায় নাম তোলানোর ঘটনা ‘হাজার হাজার’ ঘটেছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তদন্তে সে সব ধরা পড়ে। যে হেতু বিবাহ নিবন্ধন সংক্রান্ত বিষয় আইন দফতরের অধীনস্থ, তাই কেন্দ্রীয় সরকার পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আইন দফতরের কাছে এই ‘ভুয়ো’ কার্যকলাপের জবাব চেয়েছিল। ওই বিজেপি নেতার কথায়, ‘‘আইন দফতর নিজেদের পিঠ বাঁচাতে মুখ্যমন্ত্রীর নিজের হাতে থাকা স্বরাষ্ট্র দফতরকে চিঠি লিখে বিবাহ শংসাপত্রের সত্যতা খতিয়ে দেখতে বলে। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে আইন দফতর থেকে স্বরাষ্ট্র দফতরে সেই চিঠি যায়। কিন্তু এক বছর ধরে স্বরাষ্ট্র দফতর কোনও পদক্ষেপ করেনি।’’

‘ভুয়ো’ বিবাহ শংসাপত্র তৈরি করে ভোটার তালিকায় নাম তোলানোর জন্য রাজ্যে একটি চক্র সক্রিয় রয়েছে বলে বিজেপির দাবি। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং, গোসাবা, উত্তর ২৪ পরগনার বীজপুর, নদিয়ার একাংশ এবং উত্তর দিনাজপুরের বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেঁষা অঞ্চল থেকে এই সব ‘ভুয়ো’ বিবাহ শংসাপত্র সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় তৈরি হচ্ছে বলে বিজেপির দাবি। এই সব ‘ভুয়ো’ শংসাপত্র তৈরি করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ডিজিটাল সই নকল করা হচ্ছে বলেও রাজ্যের প্রধান বিরোধী দলের দাবি। জগন্নাথের অভিযোগ, ‘‘গত কালও বীজপুর থানায় এই ব্যাপারে এফআইআর হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ সেই এফআইআর চেপে দেওয়ার চেষ্টা করছে।’’

রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল এ প্রসঙ্গে পাল্টা প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে বিজেপিকে। দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণালের প্রশ্ন, ‘‘পাসপোর্ট নিয়ে বিদেশ থেকে কেউ অসদুদ্দেশ্যে আসছেন কি না, তা তো আগে থেকে বোঝা সম্ভব নয়। তার জন্য নজরদারি রাখতে হবে। পুলিশ সেই নজরদারি রাখছে। ধরাও পড়ছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা কী করছে? তারা কেন নজরদারি রাখতে পারছে না?’’ কুণালের কথায়, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এপিকের গরমিল ধরিয়ে দেওয়ার পর থেকেই বিজেপি নানা রকম ভাবে বিচিত্র কথাবার্তা বলতে শুরু করেছে। এত দিন এ সব কথা কোথায় ছিল? আসল সমস্যা থেকে নজর ঘোরানোর জন্য এ সব বলছে।’’

তৃণমূলের রাজ্য সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার প্রশ্ন তুলেছেন, বিজেপির ‘বুথ স্তরীয় প্রতিনিধি’দের ভূমিকা নিয়ে। জয়প্রকাশের কথায়, ‘‘বিজেপির পকেটে থাকা জাতীয় নির্বাচন কমিশন ভোটার তালিকা তৈরি করে। রাজ্য করে না। আর ভোটার তালিকায় সংযোজন, বিয়োজন বা সংশোধনের প্রক্রিয়ায় সরকারি আধিকারিকদের পাশাপাশি অংশীদার থাকেন সব দলের বুথ স্তরীয় প্রতিনিধিরা (বিএলএ)। কোন বাড়িতে একজন পাকিস্তানি মহিলা এসে ঢুকেছেন, কোন বাড়িতে বাংলাদেশি মহিলা এসে ঢুকেছেন, সেগুলি কি বিজেপির বিএলএ-রা বুঝতে পারছেন না? বিজেপি কি বলতে চাইছে যে, তাদের বিএলএ-রা কোনও কাজের নয়?’’

Fake Voters Fake Documents West Bengal Politics BJP Bengal TMC

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}