Advertisement
৩১ জানুয়ারি ২০২৫

ডুবল পাকা ধান, ক্ষতি আনাজেরও

এখনও শীত পড়েনি। তবু বাজারে শীতের আনাজ আসা শুরু হয়ে গিয়েছে। ধীরে ধীরে নাগালে আসতে শুরু করেছিল দামও। কিন্তু বুলবুলের দাপটে দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি এবং পূর্ব মেদিনীপুরের চাষিদের মাথায় হাত পড়েছে।

সাগরদ্বীপে ক্ষতি হয়েছে ধানের। নিজস্ব চিত্র

সাগরদ্বীপে ক্ষতি হয়েছে ধানের। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:৫২
Share: Save:

আর কিছু দিন পর থেকেই আমন ধান কাটা শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু ‘মই’ দিল বুলবুল। বহু খেতের ধানগাছ শুয়ে পড়েছে। ঝরে গিয়েছে শিস। জমিতে বৃষ্টির জল জমে নষ্ট হয়েছে আনাজ, পান, ফুলচাষও।

এখনও শীত পড়েনি। তবু বাজারে শীতের আনাজ আসা শুরু হয়ে গিয়েছে। ধীরে ধীরে নাগালে আসতে শুরু করেছিল দামও। কিন্তু বুলবুলের দাপটে দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি এবং পূর্ব মেদিনীপুরের চাষিদের মাথায় হাত পড়েছে। কতটা ফসল তাঁরা বাঁচাতে পারবেন, তা নিয়ে চাষিরা দিশাহারা। ক্ষয়ক্ষতির হিসেব কষা শুরু করেছে কৃষি দফতর।

রাজ্য সরকারের শীর্ষ স্তর থেকে জানা গিয়েছে, জলে ডোবা ধান বাঁচাতে কৃষিবিজ্ঞানীদের সঙ্গে পরামর্শ করছে কৃষি দফতর। মুখ্যমন্ত্রীর কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার বলেন, “গোটা পরিস্থিতির উপরে মুখ্যমন্ত্রী নজর রাখছেন। আমাদের প্রাথমিক কাজ ক্ষয়ক্ষতি আটকানো। কৃষকদের আতঙ্কিত না-হতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।”

বুলবুলের দাপট সবচেয়ে বেশি টের পাওয়া গিয়েছে দুই ২৪ পরগনায়। যে দুই জেলা কলকাতা-সহ আশপাশের অঞ্চলে আনাজের বড় জোগানদার। ফলে, বাজারে শীতের আনাজের আকালের আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তর ২৪ পরগনায় ১ লক্ষ ৪৩ হাজার ৭৬৮ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। ধান-আনাজের সঙ্গে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে পেঁপে গাছেরও। জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত চাষির সংখ্যা প্রায় আড়াই লক্ষ। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়, ক্যানিং, বাসন্তী, গোসাবা, জয়নগর, কুলতলি-সহ বিস্তীর্ণ এলাকা থেকে বাঁধাকপি, ফুলকপি, পালং, ক্যাপসিকাম বাইরে রফতানি শুরু হয়েছিল। চাষিরা ভাল দামও পাচ্ছিলেন। কিন্তু ঝড়ের দাপটের সঙ্গে ব্যাপক বৃষ্টিতে আনাজের জমি জলের তলায় চলে গিয়েছে। কাকদ্বীপ, নামখানা ব্লক এলাকায় ৬০ শতাংশ পান বরজ নষ্ট হয়েছে বলে কৃষি দফতর সূত্রের খবর।

রাজ্যের অন্যতন ধান উৎপাদক জেলা হুগলি। এ বার এখানে ১ লক্ষ ৮০ হাজার হেক্টর জমিতে আমন চাষ হয়েছিল। জলের অভাবে শুরুর দিকে ধান চাষ মার খেয়েছিল। ফলে, চাষে বাড়তি খরচও হয়েছিল। ধান উঠলে সেই বাড়তি খরচের টাকা উঠে আসবে বলে আশায় ছিলেন চাষিরা। দু’দিনের বৃষ্টি তাঁদের সেই আশায় জল ঢালল। পাশের জেলা হাওড়ায় চাষ হয়েছে ৫৫ হাজার হেক্টর জমিতে। কৃষিকর্তারা জানিয়েছেন, ঝড়বৃষ্টিতে হুগলির চারটি মহকুমার অধিকাংশ চাষিরই ধান ও আনাজে ক্ষতি হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানতে আরও একটু সময় লাগবে। জমিতে কতটা জল জমেছে তার উপরেই নির্ভর করবে ক্ষতির পরিমাণ। তবে জমিতে নিকাশির ব্যবস্থা থাকলে জল বার করে কিছু ধান বাঁচানো সম্ভব। চাষিরা ইতিমধ্যে ধান বাঁচাতে মাঠে নেমেছেন।

একই ছবি পূর্ব মেদিনীপুরেও। কাঁথিতে ধান এবং পানের মতোই শোচনীয় পরিস্থিতি আনাজ চাষে। কারণ, জমিতে জল দাঁড়িয়ে গিয়েছে। পাঁশকুড়া ব্লকের মাইশোরা, কেশাপাট, গোবিন্দনগর, চৈতন্যপুর ১ ও ২, হাউর, ঘোষপুর, পাঁশকুড়া ১ ব্লক এলাকায় ফুল চাষও ক্ষতির মুখে পড়েছে। শনিবারের বৃষ্টিতে সব থেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে চন্দ্রমল্লিকা, দোপাটি ও গাঁদার বাগানে। ফুলের বাগানগুলিতে জল জমে থাকায় গাছের গোড়া পচে যাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Calamity Agriculture Paddy Field Vegetable Cyclone Bulbul
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy