—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
ডিসেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে গাড়ির বকেয়া কর আদায়ে বড়সড় ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছিল পরিবহণ দফতর। বকেয়া রোড ট্যাক্স, পারমিট এবং সার্টিফিকেট অব ফিটনেস (সিএফ) পুনর্নবীকরণের ক্ষেত্রে জরিমানা মকুবের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরিবহণ দফতরের দেওয়া সেই ছাড়ের সময়সীমা শেষ হতে চলেছে চলতি মাসের ২৯ তারিখে। কিন্তু বেসরকারি পরিবহণ সংগঠনগুলি এই সময়সীমা বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছে। সম্প্রতি পরিবহণ সচিব সৌমিত্র মোহনের কাছে এই সংক্রান্ত বিষয়ে একটি দাবিপত্র পেশ করেছে পাঁচটি বেসরকারি পরিবহণ সংগঠনের সম্মিলিত মঞ্চ ‘জয়েন্ট ফোরাম অফ ট্রান্সপোর্ট অপারেটর্স’। দাবিপত্রে পরিবহণ দফতরে ঘোষিত ওয়েভার স্কিমের সময়সীমা তিন মাস বৃদ্ধি দাবি করা হয়েছে।
১ জানুয়ারি থেকে পরিবহণ দফতরে চালু হয়েছে এই ওয়েভার স্কিম। এই নতুন স্কিমে গত বছর ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বকেয়া থাকা কর মেটানোর ক্ষেত্রে বাড়তি সুবিধা পাবেন গাড়ির মালিকেরা। ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যেই বকেয়া মিটিয়ে দিলে জরিমানার উপর ছাড় মিলবে বলে ঘোষণা করা হয়েছে। ১-৩০ জানুয়ারির মধ্যে বকেয়া সিএফ এবং পারমিট ফি মিটিয়ে দিলেও ১০০ শতাংশ জরিমানা মকুব করা হবে। কিন্তু, নতুন বছরের ৩১ জানুয়ারি থেকে ২৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সংশ্লিষ্ট দুই খাতের বকেয়া মেটালে অবশ্য ১০০ শতাংশ ছাড় মিলবে না। সে ক্ষেত্রে জরিমানার ৮০ শতাংশ মকুব করা হবে। পরিবহণ সংগঠনগুলির দাবি, এই সময়সীমা ২৯ ফেব্রুয়ারি থেকে বাড়িয়ে ৩১ মে করা হোক।
সিটি সাবারবান বাস সার্ভিসেসের সাধারণ সম্পাদক টিটু সাহা বলেন, ‘‘বিভিন্ন গাড়ি ফিটনেস সার্টিফিকেট পেতে গ্যারেজে রয়েছে। গ্যারেজগুলিতে কাজের চাপের কারণে সব গাড়ি একসঙ্গে পাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। যাতে সব গাড়িগুলির ক্ষেত্রেই আমরা ছাড়ের সুবিধা পেতে পারি, তাই আমরা তিন মাস সময় বাড়ানোর আবেদন করেছি।’’ এই দাবিকেই সমর্থন জানিয়েছেন অনলাইন ক্যাব অপারেটর্স-এর সাধারণ সম্পাদক ইন্দ্রনীল বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘‘অনেকেই ছাড় ঘোষণার পর গাড়ি রাস্তায় নামাতে চাইছেন। কিন্তু তাঁদের একটু সময়ের প্রয়োজন। তাই সংগঠনগত ভাবে আমরা গাড়ির মালিকদের থেকে এই অনুরোধ পেয়েছি। সেই মতোই আমরা পরিবহণ দফতরের কাছে আবেদন করেছি। আশা করব, পরিবহণ দফতর আমাদের এই অনুরোধ মেনে নেবে।’’
গত বছর ডিসেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে পরিবহণ দফতরের এই সিদ্ধান্তে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। নতুন বছরের প্রথম দিন থেকেই জরিমানা মকুবের কাজ শুরু করে পরিবহণ দফতর। পরিবহণ দফতরের একটি সূত্র জানাচ্ছে, বর্তমানে রাজ্যের প্রায় সাড়ে ১২ লক্ষ গাড়ির মধ্যে ৬৫ শতাংশ গাড়ির কর বকেয়া রয়েছে। সেই সব গাড়ির মোট জরিমানার পরিমাণ ধরলে কয়েক হাজার কোটি টাকা হবে। রাজ্য সরকার মনে করছে, জরিমানা মকুব করে বকেয়া কর, সিএফ এবং পারমিটের পুনর্নবীকরণের টাকা যদি পাওয়া যায়, তা হলেও সরকারি কোষাগারে কয়েক কোটি টাকা জমা পড়বে। তাতে যেমন রাজ্য সরকারের রাজস্ব আদায় হবে, তেমনি জরিমানার ভয়ে রাস্তায় না নামা গাড়িগুলিও পরিষেবা দিতে বেরোতে পারবে। তাই ‘এক ঢিলে দুই পাখি মারা’র সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এখন পরিবহণ দফতরের কাছে সময়সীমা বৃদ্ধির আবেদন জানিয়ে দফতরের কর্তাদের সিদ্ধান্তের দিকে তাকিয়ে বেসরকারি পরিবহণ সংগঠনগুলি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy