Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Sandeshkhali Incident

ছিলেন পরিচিত আন্দোলন কর্মী, গ্রেফতারও হন, দুই মন্ত্রীর সঙ্গে সন্দেশখালি ঘুরলেন সেই সুজয় মাস্টার

সুজয় জানিয়েছেন, তিনি তৃণমূলের সদস্য। তার পরেও কেন গ্রেফতার হয়েছিলেন, সে কারণও জানিয়েছেন নিজের মুখে। দাবি, শিবুর ‘অত্যাচার’ নিয়ে মুখ খুলেই গ্রেফতার হয়েছিলেন তিনি।

image of master

সুজয় মণ্ডল। — নিজস্ব চিত্র।

সারমিন বেগম
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৯:৩৭
Share: Save:

শাহজাহান শেখ, শিবু হাজরা, উত্তম সর্দারদের বিরুদ্ধে সন্দেশখালিতে যে প্রতিবাদ শুরু হয়েছিল, তাঁর অন্যতম মুখ ছিলেন তিনি। তৃণমূলের সদস্য হয়েও নেতৃত্বের একাংশের বিরুদ্ধে গিয়েছিলেন। গ্রেফতারও হয়েছেন মাস্টারমশাই সুজয় মণ্ডল। সেই তিনিই শনিবার রাজ্যের মন্ত্রী সুজিত বসু এবং পার্থ ভৌমিকের সঙ্গে ঘুরলেন সন্দেশখালিতে। আশাপ্রকাশ করেছেন, ‘‘নেতৃত্ব যখন কথা দিয়েছেন, তখন কথা রাখবেন।’’ সেই প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

শনিবার সন্দেশখালি পরিদর্শনে গিয়েছেন সুজিত এবং পার্থ। সঙ্গে ছিলেন সন্দেশখালির বিধায়ক সুকুমার মাহাতো। শনিবার সকালে প্রথমে ধামাখালিতে পৌঁছন দুই মন্ত্রী। সেখান থেকে যান সন্দেশখালি। সেখানে পৌঁছে টোটো নিয়ে তাঁরা যান মাস্টারমশাইয়ের কাছে। মন্ত্রীদের সঙ্গে ছিল সংবাদমাধ্যমও। অনেকের মনেই প্রশ্ন ওঠে, কে এই মাস্টারমশাই? কেন সন্দেশখালি পৌঁছে প্রথম তাঁর কাছে গেলেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী?

উত্তরটা দিলেন প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান সঞ্জিত দাস। ২০০৯ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত পঞ্চায়েত প্রধান ছিলেন তিনি। সঞ্জিত জানান, সন্দেশখালিতে জমি কেড়ে নেওয়ার বিরুদ্ধে যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল, তার অন্যতম মুখ ছিলেন সুজয়। যিনি পেশায় রাজ্য সরকারি স্কুলে প্যারাটিচার। সঞ্জিতের অভিযোগ, শাহাজাহান, শিবু, উত্তম জমি দখল করেন। তা নিয়ে আন্দোলন শুরু হয়। তাঁর কথায়, ‘‘প্রথমে ঝামেলা শুরু হয়। যাঁরা গ্রেফতার হন, তাঁদের মধ্যে ছিলেন মাস্টার। প্রায় এক মাস আগে। পরে জামিন পান। তার পর থেকে আর এলাকায় আসেননি।’’

মাস্টারমশাই নিজেও তৃণমূলের সদস্য। সে কথা নিজের মুখেই জানিয়েছেন। তার পরেও কেন গ্রেফতার হলেন সুজয়? আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি বলেন, ‘‘অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গেলে হবেই। শিবু স্থানীয়দের উপর যে অত্যাচার করতেন, সেটা নিয়ে মুখ খুলেছিলাম। সে কারণেই গ্রেফতার।’’

তবে সুজয় শুধু নিজেকে আন্দোলনের মুখ ভাবতে নারাজ। তিনি বলেন, ‘‘জনগণের আন্দোলন ছিল। স্বতস্ফূর্ত আন্দোলন। তাঁদের অভাব-অভিযোগের আন্দোলন ছিল। শাহজাহান, শিবু, উত্তমের বিরুদ্ধে ১০০ শতাংশ অভিযোগ ছিল। তা এখনও রয়েছে।’’

শনিবার তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে সন্দেশখালি ঘুরেছেন মাস্টারমশাই। অভাব-অভিযোগ শুনেছেন দুই মন্ত্রী। ব্যবস্থার আশ্বাস দিয়েছেন। তা নিয়ে আশাবাদী সুজয়। তিনি বলেন, ‘‘ওঁরা বলেছেন, যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রতিকারের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। দেখা যাক। আশা রাখি, কথা দিয়েছেন, কথা রাখবেন।’’

ফেব্রুয়ারির শুরু থেকে ফের উত্তপ্ত হয় সন্দেশখালি। শাহজাহানদের গ্রেফতারির দাবি তোলেন গ্রামবাসীদের একাংশ। সামনের সারিতে ছিলেন মহিলারা। তাঁদের একাংশ হেনস্থার অভিযোগও করেন। আঙুল তৃণমূল নেতাদের একাংশের দিকে। গ্রামবাসীদের একাংশের অভিযোগ, তাঁদের চাষজমিতে নোনা জল ঢুকিয়ে দেওয়া হত। অভিযোগের আঙুল শাহজাহান এবং তাঁর ভাই সিরাজের দিকে। আরও অভিযোগ, তাঁদের জন্য এলাকার জমির চরিত্র বদলে গিয়েছে। পাশাপাশি, জোর করে রায়ত (কৃষি) জমি দখল করে অনুগতদের নামে লিখিয়ে নেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে বলে অভিযোগ। এই নিয়ে প্রশাসনের কাছে অভিযোগও জানিয়েছেন গ্রামবাসীদের একাংশ। এই পরিস্থিতিতে শনিবার সন্দেশখালিতে যান রাজ্যের দুই মন্ত্রী সুজিত এবং পার্থ। তাঁরা সঙ্গে নেন সেই মাস্টারমশাইকে, যাঁকে এক মাস আগে জমি আন্দোলনে শামিল হওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল। যিনি জানিয়েছেন, তৃণমূল হওয়া সত্ত্বেও গ্রেফতার হয়েছিলেন কারণ শিবুদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিলেন। সেই মাস্টারই শনিবার আশা প্রকাশ করলেন নেতৃত্বের আশ্বাসে। জানালেন, প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আশা রাখছেন, কথা রাখবেন নেতৃত্ব।

অন্য বিষয়গুলি:

Sandeshkhali Incident Shahjahan Sheikh TMC arrest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy