রোগাক্রান্ত রাহিল। নিজস্ব চিত্র
সাড়ে চার বছরের শিশুপুত্র ক্যানসারে আক্রান্ত। দুঃস্থ পরিবারে কী ভাবে তার চিকিৎসার অর্থের সংস্থান হবে তা ভেবেই দিশাহারা ছিলেন তরুণ দম্পতি। এই পরিস্থিতিতেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন শিশুর মা, রেশমি জামিলের নার্সিং কোর্সের সহপাঠী ও স্বাস্থ্যকর্মীরা।
বছর পাঁচেক আগে আসানসোলের জামুড়িয়া এলাকার বাসিন্দা রেশমির বিয়ে হয় হুগলির ধনেখালির বাসিন্দা শেখ জাহির আব্বাসের সঙ্গে। বছর আটত্রিশের জাহির চাষবাস করে সংসার চালান। বছর তেত্রিশের রেশমি বোলপুর মহকুমা হাসপাতাল থেকে এএনএম নার্সিং কোর্স করছেন। মাত্র চার বছর বয়সেই তাঁদের একমাত্র সন্তান রাহিলের ব্লাড ক্যানসার ধরা পড়ে। চিকিৎসকেরা ইতিমধ্যেই তার কেমোথেরাপি শুরু করছেন। তবে চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়ার জন্য যে অর্থের প্রয়োজন তা কীভাবে জোগাড় হবে তা নিয়েই দুশ্চিন্তায় ছিলেন রেশমি এবং জাহির।
রেশমির মুখে সেই দুশ্চিন্তার কথা শুনেই এগিয়ে আসেন তাঁর সহপাঠী, স্বাস্থ্যকর্মীরা। প্রত্যেকে মিলে অল্প অল্প সাহায্য করে ৪৪ হাজার টাকা তাঁরা রেশমির হাতে তুলে দিয়েছেন। এখনও তাঁরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ওই শিশুর চিকিৎসার জন্য আরও যাতে কিছু টাকা তুলে দেওয়া যায়।
রেশমির সহপাঠী অর্চিতা চট্টোপাধ্যায়, দেবী ঘোষ মুখোপাধ্যায়রা বলেন, “আমরা একসঙ্গে ট্রেনিং করছি। এই অবস্থায় বন্ধুর বিপদের দিনে পাশে দাঁড়ানোরটাই প্রধান কাজ বলে আমরা মনে করেছি। আমরা সকলেই চাই ছোট্ট রাহিল দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুক।” বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের ডেপুটি নার্সিং সুপারিনটেন্ডেন্ট সোমা রজক বলেন, “এই পরিস্থিতিতে রেশমির পরিবারের পাশে দাঁড়ানো আমাদের সকলের কর্তব্য বলে মনে করি।’’
সহপাঠীদের এমন সহমর্মিতায় আপ্লুত রেশমি। তিনি বলছেন, ‘‘আমার দুঃসময়ে যে ভাবে সকলে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তাতে আমি তাঁদের সকলের কাছে কৃতজ্ঞ। আগামী দিনেও তাঁদের সাহায্যে ভর করে আমি নিশ্চয়ই ছেলেকে সুস্থ করে তুলতে পারব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy