সালিশি সভায় অপবাদ দিয়ে এক যুবককে মাথা ন্যাড়া করে গ্রাম ঘোরানোর অভিযোগ উঠল। জমি দখলের উদ্দেশ্যে সিপিএমের পঞ্চায়েত সদস্যের উপস্থিতিতেই এই ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ।
মঙ্গলবার বিকেলে আলিপুরদুয়ারের মাদারিহাট থানায় গ্রামবাসী অনিল রায় ও ধনঞ্জয় রায়-সহ ৯ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন উত্তর রাঙালিবাজনা গ্রামের ওই ক্ষুদ্র চাষি। তাঁর অভিযোগ, টাকা জমিয়ে অনেক কষ্টে পাঁচ কাঠা জমি কিনেছিলেন। তার পরেই জমিটি দখলের ছক কষে কয়েকজন। তারাই খুড়তুতো বৌদির সঙ্গে ওই যুবকের সম্পর্ক রয়েছে বলে রটিয়ে দেয়। লিখিত অভিযোগে তিনি জানিয়েছেন, রবিবার গ্রামে সালিশি সভা ডেকে তাঁকে ‘প্রায়শ্চিত্ত’ করার ফরমান জারি করা হয়। পুরোহিত ডেকে পুজো করে মাথা ন্যাড়া হয়ে গ্রামে না ঘুরলে ওই যুবক, তাঁর বৌদি ও পরিবারকে গ্রামছাড়া হতে হবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়। ওই যুবকের অভিযোগ, “সভায় সিপিএমের পঞ্চায়েত সদস্য সোমরা ওঁরাও হাজির ছিলেন। তাঁর সামনেই ওই ফতোয়া দেওয়া হয়। সোমবার মুজনাই নদীর ধারে আমার মাথা ন্যাড়া করে গ্রামে ঘোরানো হয়। এ-ও ফতোয়া দেওয়া হয়, যে আমি ওই জমিতে যেতে পারব না।”
পুলিশ অভিযুক্তদের কাউকে ধরতে পারেনি। শুধু তা-ই নয়, পুলিশ ওই যুবক ও তাঁর দাদা-বৌদিকে সিপিএমের পঞ্চায়েত সদস্যের সঙ্গেই গ্রামে পাঠিয়ে দেওয়ায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার আকাশ মেঘারিয়া অবশ্য বলেছেন, “জড়িতদের গ্রেফতার করা হবে। অভিযুক্তদের মূল উদ্দেশ্য কী, তাও খুঁজে বার করা হবে।”
সালিশি সভার সময়ে উপস্থিত থাকার কথা স্বীকার করলেও পঞ্চায়েত সদস্যের দাবি, “আমি বিচারে থাকলেও কোনও মন্তব্য করিনি। যা বলার গ্রামবাসী বলেছেন। জমি দখলের বিষয়টি ঠিক নয়।” তবে অভিযুক্ত অনিল ও ধনঞ্জয় তাদের দলের সমর্থক বলে স্বীকার করেছেন পঞ্চায়েত সদস্য। তবে সেখানে অন্য দলের সমর্থকেরাও ছিলেন বলে তিনি জানান। ধনঞ্জয় বা অনিলের খোঁজ করা হলে তারা বাড়িতে নেই বলে বাড়ির লোকেরা জানান। মাদারিহাটের ব্লক তৃণমূল নেতা শিবশঙ্কর দাস বলেছেন, “এই ধরনের ঘটনা মানা যায় না। তবে, আমাদের দলের কোনও কর্মী ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন।” বীরপাড়ার বাসিন্দা সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য রবিন রাই বলেন, “এই ধরনের ঘটনা সমর্থন করি না। পঞ্চায়েত সদস্যের কী ধরনের ভূমিকা ছিল তা আমরা খোঁজ নিচ্ছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy