পানিট্যাঙ্কি সীমান্তে হাজার তিনেক মানুষ প্রতিদিন নেপাল থেকে ভারতে আসেন সব্জি-মাছ-ফল কিনতে। আর তাঁদের জন্যই ভাল দাম পান এ দিকের চাষিরাও। অথচ জিনি কিনে ফিরে যাওয়ার পথে সীমান্ত রক্ষীদের হাতে হয়রানি নিত্য-অভিজ্ঞতা ওই পারের খদ্দেরদের। এই সমস্যা সমাধানে এ বার ‘সীমান্ত বাজার’ তৈরি করতে উদ্যোগী সশস্ত্র সীমা বল (এসএসবি)। এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে নেপাল সীমা সুরক্ষা প্রহরীও।
খড়িবাড়ির মদনজোতে সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে এই ঘোষণা করেন এসএসবির রানিডাঙ্গা ফ্রন্টিয়ারের ডিআইজি অসীমকুমার মল্লিক। বাহিনী সূত্রে খবর পশ্চিমবঙ্গ ও বিহার সীমান্তে ৪০০ কিলোমিটার সীমান্তে ২০ হাটকে ইতিমধ্যেই ‘সীমান্ত বাজার’ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে। সেখানে নির্দিষ্ট পরিচয়পত্র দেখালে দুই দেশের মানুষই নির্বিঘ্নে বাজার করতে পারবেন। তবে গ্রামীণ হাটে যে সব সামগ্রী বিক্রি হয়, সেই কাঁচা সব্জি, শস্য, মাছ প্রভৃতিই বিকিকিনি করা যাবে। ব্র্যান্ডেড জিনিস এই সব হাটে মিলবে না। সে ক্ষেত্রে শুল্ক দফতর নিয়ম মতো কর আদায় করবে।
ওই ২০টি হাটে আরও উন্নত সুবিধা দেওয়া হবে, জানান ডিআইজি। হাটগুলির ছাউনি তৈরি করা হবে, মেঝে পাকা করা হবে, নিকাশি-সহ পরিকাঠামো তৈরি হবে। নিরাপত্তার জন্য সিসিটিভিও থাকবে। সমস্তই হবে এসএসবির সীমান্ত উন্নয়ন প্রকল্পের তহবিল থেকে। বাজার তৈরির প্রস্তাব নিয়ে প্রকল্প ইতিমধ্যেই কর্তৃপক্ষের কাছে চলে গিয়েছে।
নেপালের সীমা সুরক্ষা প্রহর-র ডেপুটি পুলিশ সুপার এলএন খনল সীমান্ত বাজারের পরিকল্পনা স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেন “দুই দেশের সীমান্তের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক দৃঢ় করতে এই বাজার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে।” বাজারের পরিকল্পনায় খুশি, দু’দেশের সীমান্ত এলাকার শাক-সবজির ক্রেতা ও বিক্রেতারা। একই জায়গায় বাজার করতে পারলে তাঁদের হয়রানি যে কমবে তা স্বীকার করেছেন অনেকেই। ভারত-নেপাল সীমান্তের পানিট্যাঙ্কি এলাকার চাষি দীনেশ বর্মন বলেন, “আমাদের ফসল, সব্জির বেশিরভাগ নেপালের খদ্দেররা কিনে নিয়ে যায়। তাই তাঁদের সঙ্গে নিয়মিত একটা নির্দিষ্ট জায়গায় বসে ব্যবসা করা সম্ভব হলে, খুব সুবিধা হবে। বিশেষ করে বর্ষাকালে খুবই সমস্যা হয়।”
এক চাষি ভীষ্মদেব বর্মন জানান, আমরা পাইকারি ও খুচরো দু’ধরনের ব্যবসাই করি। তবে নির্দিষ্ট ব্যবসার জায়গা না থাকায় খুচরো ব্যবসার সমস্যা হচ্ছে। রাস্তার উপরেই ব্যবসা চলে। এসএসবি-র তরফে যদি সত্যিই এ ধরনের বাজার করা হয়, তা হলে সমস্যার অনেকটাই সুরাহা হবে। প্রতি দিন নেপালের কাঁকরভিটা হয়ে এ দেশের পানিট্যাঙ্কি আসেন নেপালের বিত্তামোড়ের ব্যবসায়ী রঞ্জন গোলে। এদেশের চাষি ও পাইকারদের কাছ থেকে শাক, সব্জি কিনে নিয়ে তিনি ও পারে বেচেন। এসএসবির পরিকল্পনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বাজার চালু হলেই এর সুফল বোঝা যাবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy