সবলা প্রকল্পের আওতাধীন স্কুলছুট কিশোরীদের আর্থিক স্বনির্ভরতার পথ দেখাতে উদ্যোগী হয়েছে কোচবিহার জেলা প্রশাসন। গত ১৭-২০ ডিসেম্বর ওই প্রকল্পের তালিকাভুক্ত ৪৩ জন কিশোরীকে নিয়ে চারদিনব্যাপী পরীক্ষামূলক আবাসিক প্রশিক্ষণ শিবির করা হয়। তুফানগঞ্জ মহকুমার বলরামপুরে আয়োজিত ওই প্রশিক্ষণ শিবিরে অংশগ্রহণকারীদের আগ্রহ দেখে প্রশাসনের আধিকারিকরাও উত্সাহী হয়েছেন।
পর্যায়ক্রমে সবলা প্রকল্পের তালিকায় থাকা জেলার সমস্ত স্কুলছুট কিশোরীকে উদ্যানপালন থেকে খাদ্যপ্রক্রিয়াকরণের মত কাজের মাধ্যমে সাবলম্বী করে তুলতেও উদ্যোগ শুরু হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। কোচবিহারের অতিরিক্ত জেলাশাসক দেবযানী ভট্টাচার্য বলেন, “সবলায় তালিকাভুক্ত স্কুলছুট মেয়েদের স্বনির্ভর করতে পাইলট প্রজেক্ট হিসাবে ওই প্রশিক্ষণের বন্দোবস্ত করা হয়। সেখানে যোগদানকারীদের আগ্রহ দেখে জেলা জুড়েই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এ জন্য আগ্রহীদের নামের তালিকা-সহ তাঁদের কোন বিষয়ে প্রশিক্ষণের ঝোঁক রয়েছে তা জানতে চাওয়া হয়েছে।”
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহার জেলায় সবলা প্রকল্পের আওতাধীন ১১-১৮ বছর বয়সীদের সংখ্যা প্রায় ১ লক্ষ। তাদের একাংশ স্কুলছুট। প্রাথমিকভাবে স্কুলের আওতার বাইরে থাকা ওই কিশোরীদের আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করে তোলার ব্যাপারে জোর দেওয়া হয়েছে। ওই কাজে ১৬-১৮ বছর বয়সীদের প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে বলেও জানানো হয়েছে। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, ওই বয়সীদের মধ্যে সবলার আওতাধীন অন্তত তিন হাজার কিশোরী স্কুলছুট। জেলার ৫টি ব্লক থেকে সেরকম ৪৩ জন কিশোরীকে বাছাই করে নিয়ে পরীক্ষামূলক প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করা হয়। হাতেকলমে চারাগাছ তৈরি থেকে মাশরুম চাষ, মাছ চাষ, জ্যাম, জেলি, আচার তৈরির মত নানা কাজের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। খাগরাবাড়ি এলাকার বাসিন্দা এক কিশোরী দোলন মণ্ডলের কথায়, “বাবা চায়ের দোকান সামলান। অভাবের সংসারে মাধ্যমিকের পরে পড়াশোনা করা হয়নি। প্রশিক্ষণের সুযোগ পেয়েছি, ভবিষ্যতে স্বাবলম্বী হয়ে সংসার চালাতে বাবাকে সাহায্য করতে পারব।”
বলরামপুরের ওই প্রশিক্ষণ শিবিরের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন জেলা উদ্যান পালন দফতরের কর্তারাও। ওই দফতরের কোচবিহারের আধিকারিক খুরশিদ আলম বলেন, “স্কুলছুট কিশোরীদের মধ্যে ১৬ বছরের বেশিদের বিয়ে দেওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে। তাই ওদের বিষয়টিই প্রাথমিকভাবে ভাবা হয়েছে।” প্রশাসন সূত্রের খবর, প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে স্বনির্ভরতার পদক্ষেপে ওই কিশোরীদের ব্যাঙ্ক ঋণের বন্দ্যোবস্ত করার চেষ্টা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy