অনিয়ন্ত্রিত যান চলাচল করার জন্য নিত্য যানজটে নাজেহাল হচ্ছেন ফালাকাটা শহরের বাসিন্দারা। শহরে ছোটখাট দুর্ঘটনা মাঝেমধ্যেই ঘটছে। নেতাজি রোড থেকে মেন চৌপথীতে যে ভাবে জাতীয় ও রাজ্য সড়কের উপর গাড়ি দাঁড় করিয়ে যাত্রী ওঠানামা করানো হয় তাতেই দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে। পুলিশের পক্ষে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয় না কেন সেই প্রশ্নও উঠেছে এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে।
বেশ কয়েক বছর আগে পুরনো চৌপথীতে বাসের ধাক্কায় এক স্কুল মৃত্যুর ঘটনায় অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে গোটা শহর। এলাকা শান্ত করতে সে সময় শহরে র্যাফ মোতায়েন পর্যন্ত করা হয়। ওই ঘটনার পর কিছু দিন ট্রাফিক ব্যবস্থা ভাল করাতে এলাকায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে ছিল। ফের পুলিশের ঢিলেঢালা মনোভাবের ফলে পরিস্থিতি আবার বেহাল হয়ে পড়েছে বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ।
শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থা যে কতটা বেহাল সে কথা জানিয়েছেন খোদ তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত ফালাকাটা পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি থেকে এলাকার বিডিও পর্যন্ত সকলেই। ফালাকাটার বিডিও কৃষ্ণকান্ত ঘোষের কথায়, “শহরে তো ফুটপাত নেই। কিছু দিন আগেই আমার সামনেই এক দুর্ঘটনায় পড়েন এক জন সাইকেল আরোহী। তাঁকে আমি হাসপাতালে নিয়ে যাই। ফুটপাত তৈরি করার জন্য যেমন কর্তাদের বলব, তেমনই যাতে ভাল ভাবে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয় তা দেখতে পুলিশের সঙ্গে বৈঠক করব।” ফালাকাটা পঞ্চায়েত সতিমির সহ সভাপতি যতীন রায়ের কথায়, “যানজট আজ শহরে চরম আকার নিয়েছে। গাড়ির সংখ্যা ও লোকজনের সংখ্যা বাড়লেও শহর বড় হয়নি। তাই যান নিয়ন্ত্রণ করতে বাসস্ট্যান্ড করা দরকার। বিষয়টি আমরা দেখছি। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে ফুটপাত তৈরি করার জন্য আমরা বলব।” বাসিন্দারা জানিয়েছেন, শহরে প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র নেতাজি রোড ও মেন রোডের ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে সকাল থেকে যানজট হচ্ছে। কিছু বাস ও ছোট যাত্রিবাহী গাড়ি কোন রকম নিয়মের তোয়াক্কা না করে জাতীয় সড়কের উপর গাড়ি দাঁড় করিয়ে যাত্রী ওঠানামা করায়। গোটা শহরের যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে ৩ জন হোমগার্ড মোতায়েন হয়েছে।
পুলিশের তরফে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে যে পর্যাপ্ত সংখ্যক কর্মী নিয়োগ হচ্ছে না তা অফিসারদের অনেকেই স্বীকার করেছেন। গাড়ি চালকদের একাংশ যেখানে সেখানে দাঁড়িয়ে যাত্রী ওঠানো নামানোর কাজ করছেন। ফালাকাটা মেন রোডের পাশে রয়েছে একাধিক স্কুল। ছুটির সময় ছাত্রছাত্রীদের বিপদের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার করতে হয়। ফালাকাটা হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুভাষ সেন গুপ্ত বলেন, “ছাত্রছাত্রীদের কথা ভেবে প্রতিদিন আতঙ্কে কাটাই। যত্রতত্র গাড়ি দাঁড় করানো ও বেশি ট্রাফিক নিয়োগ করা হলে যানজটের সমস্যা কিছুটা হলেও সুরাহা হয়।”
নেতাজি রোডে কেনাকাটা করতে আসা খদ্দেররা রাস্তায় গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখেন। তাতে সড়কে যানজট তীব্র হয়। শহরের এক বাসিন্দা নির্মল চৌধুরী বলেছেন, “ফুটপাতহীন শহরে চলাফেরায় ভয় হয়। প্রশাসন কড়া হাতে যান নিয়ন্ত্রণ করুক। সুভাষপল্লি ব্যাঙ্কের রাস্তা, নতুন চৌপথীতে রাত পর্যন্ত ট্রাফিক পুলিশ ভীষণ জরুরি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy