২০০৯ সাল থেকে ২০১৩ সালের এপ্রিল। এই সময়কালের মধ্যে সারদা সহ অন্তত ৪০টি বেসরকারি অর্থলগ্নি সংস্থা শুধু মালদহের চাঁচল মহকুমা থেকেই অন্তত ৩০০ কোটি টাকা তুলে নিয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এজেন্ট ও আমানতকারীরা যে যৌথ মঞ্চ তৈরি করে টাকা উদ্ধারের দাবিতে সরব হয়েছেন, তাঁরাই ওই হিসেব দিচ্ছেন। সর্বহারা এজেন্ট ও আমানতকারী যৌথ মঞ্চের দাবি, মহকুমায় অন্তত ৭ হাজার এজেন্ট ও লক্ষাধিক আমানতকারী আছেন। তাই মঞ্চের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে সারদা ছাড়াও অন্য যে সব সংস্থার বিরুদ্ধে চাঁচলে অবিযোগ হয়েছে, তার তথ্য সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিক পুলিশ-প্রশাসন। ওই মঞ্চের উত্তর মালদহের আহ্বায়ক মানুয়ার আলম বলেন, “আমি ৪৫ লক্ষ টাকা তুলে একটি সংস্থায় জমা করি। আমার মতো একই অবস্থা সকলের। এখন ঘটি-বাটি বেচলেও ওই টাকা ফেরত দেওয়ার ক্ষমতা নেই। আমরা চাই সব তথ্য সিবিআইকে দিক পুলিশ।” সিবিআই তদন্ত শুরু করলে মঞ্চের পক্ষ থেকে কলকাতায় গিয়ে লিখিতভাবে অভিযোগ জানানোর প্রস্তুতিও নিচ্ছে।
গত বছর সারদা কেলেঙ্কারির ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই বিভিন্ন সংস্থার এজেন্টরা ঘাবড়ে যান। অনেকেই আমানতকারীদের রোষের মুখে পড়ে গা ঢাকা দেন। পরে আমানতকারীদের নিয়ে যৌথ মঞ্চ তৈরি করে আন্দোলনে নামেন এজেন্টদেরই একাংশ। এজেন্টদের নিরাপত্তা সহ টাকা ফেরতের দাবিতে মঞ্চের তরফে প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপিও দেওয়া হয়। মহকুমাশাসক সঞ্জীব দে জানান, “এজেন্টদের নিরাপত্তা পুলিশকে দেখতে বলা হয়েছে।”
এজেন্টদের নিরাপত্তার দাবি সহ টাকা ফেরতের দাবিতে গঠিত ওই মঞ্চের নাম সর্বহারা এজেন্ট ও আমানতকারী মঞ্চ। মঞ্চের অভিযোগ, চাঁচল মহকুমার চাঁচল, হরিশ্চন্দ্রপুর ও রতুয়া এলাকায় সারদার পাশাপাশি গজিয়ে উঠেছিল ওই সব বেসরকারি অর্থলগ্নি সংস্থা। তাতেও কোটি কোটি টাকা লগ্নি করা হয়েছিল। যা ওই এলাকায় সারদায় লগ্নিকৃত অর্থের থেকে বহুগুণ বেশি।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, সারদা কেলেঙ্কারির আগে চাঁচলে ৪০টি, হরিশ্চন্দ্রপুর ও রতুয়ায় প্রায় ৩০টি সংস্থা তাদের শাখা খুলে ব্যবসা শুরু করেছিল। ৩টি এলাকায় তাদের মাধ্যমে সংস্থাগুলিতে বিনিয়োগের পরিমাণ ৩০০ কোটি টাকারও বেশি। আমানতকারীদের কাছ থেকে এজেন্ট ভিত্তিক টাকা তোলার হিসেব করেই মঞ্চের তরফে প্রাথমিকভাবে ওই তথ্য মিলেছে।
যদিও জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, সারদা সহ লিড ডিস্ট্রিবিউশন ও এঞ্জেল এগ্রিটেক লিমিটেড নামে মাত্র তিনটি সংস্থার বিরুদ্ধে পুলিশে আমানতকারীরা অভিযোগ জানান। ওই অভিযোগ মালদহে ইকনমিক অফেন্স সেল-এ পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তারাই ওই বিষয়ে তদন্ত করছে। তবে ওই সব ঘটনায় অফিস থেকে খানকয়েক গাড়ি বাজেয়াপ্ত করা ছাড়া এখনও গ্রেফতারের কোনও খবর নেই। হরিশ্চন্দ্রপুরের রাঘবপুরের এজেন্ট আজিজুর রহমান বলেন, “রোজই গঞ্জনা সইতে হয়। সিবিআই তদন্ত করে স্পষ্ট করুক আমানতকারীদের টাকা কোথায়। তা হলে কিছুটা রেহাই মিলবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy