তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল ফের প্রকাশ্যে এল মালদহে। তৃণমূলেরই একদল পঞ্চায়েত সদস্য দলের জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে ‘অভব্য আচরণে’র অভিযোগ তুলে তাঁকে পদ থেকে অপসারণের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন। মঙ্গলবার তাঁরা কালিয়াচকের নওদা-যদুপুর এলাকায় মিছিলও করেন। তৃণমূলের এই সদস্যেরা দলের প্রাক্তন জেলা সভাপতি তথা মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্রের অনুগামী বলে পরিচিত। জেলায় দলের আর এক মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরীও মোয়াজ্জেম হোসেনের আচরণ নিয়ে দলের মধ্যে আলোচনা চেয়েছেন। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কানেও গোটা বিষয়টি পৌঁছেছে বলে তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত সোমবার। কালিয়াচক ১ পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দল নেতা তৃণমূলের মহম্মদ মুসলিম শেখের দাবি সে দিন “জেলা সভাপতি বিডিও-র ঘরে ঢুকে আমাকে বার করে দিয়েছেন। কোনও দিন এত অপমানিত হইনি।” তাঁর বক্তব্য, মোয়াজ্জেমকে অবিলম্বে জেলা সভাপতির পদ থেকে সরাতে হবে, না হলে তিনি ও দলের ১২ জন পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য ও নওদা-যদুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ২২ জন সদস্য দল ছাড়তে বাধ্য হবেন। মঙ্গলবার তাঁরা নওদা-যদুপুর এলাকায় মিছিলও করেছেন।
মোয়াজ্জেমের অবশ্য দাবি, অভিযোগ ভিত্তিহীন। তাঁর বক্তব্য, ব্যক্তিগত কাজে কালিয়াচক ১ বিডিও-র ঘরে গিয়েছিলেন সে দিন। তিনি বলেন, “সেখানে বিরোধী দলনেতাকে বসে থাকতে দেখে তাঁকে বলেছিলাম, আপনি আপনার কাজ করুন। পরে আমি কথা বলব।” মোয়াজ্জেমের দাবি, মহম্মদ
মুসলিম শেখ কাজ সেরে যাওয়ার পরেই তিনি বিডিও-র সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁর কথায়, “এতে অপমানের প্রশ্ন উঠছে কেন?”
মালদহে দীর্ঘদিন ধরেই সাবিত্রীদেবী ও কৃষ্ণেন্দুবাবুর গোষ্ঠী কোন্দল চলছে। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব তাঁদের এ ব্যাপারে বারবার সতর্কও করেছেন। লোকসভা ভোটে জেলায় দলের ভরাডুবির পরে পাঁচ মাস আগে তৃণমূলের জেলা সভাপতি পদে বসানো হয় ওই নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী মোয়াজ্জেম হোসেনকে। তা নিয়েও গোড়া থেকেই দলের একাধিক শিবিরের ক্ষোভ প্রকাশ্যে এসেছে। তৃণমূল সূত্রের খবর, দলীয় রাজনীতিতে সাবিত্রীদেবী ও কৃষ্ণেন্দুবাবু দু’টি আলাদা শিবিরে থাকলেও জেলা সভাপতির কাজকর্ম নিয়ে দু’জনেই নানা সময়ে সরব হন। কালিয়াচকের ঘটনার পরেও সেই চিত্রই দেখা গিয়েছে। সাবিত্রীদেবী বলেন, “নির্বাচিত সদস্যদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ পেয়েছি। সভাপতিকে না-সরালে ওঁরা দল ছাড়বেন বলে হুমকি দিয়েছেন। দেখি কী করা যায়।” কৃষ্ণেন্দুবাবুও জানান, ওই অভিযোগ নিয়ে দলে আলোচনা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy