পুলিশ গ্রেফতার করার আগেই আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়ে গেলেন মাথা মুড়িয়ে গ্রাম ঘোরানোর ঘটনায় জড়িত তিন অভিযুক্ত। ওই ঘটনায় অভিযুক্ত আরও ছয় জন এখনও অধরা। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মারধর, ভয় দেখানো-সহ বেআইনি ভাবে জমায়েত হয়ে হামলার অভিযোগে মামলা রজু করেছে পুলিশ। মূল অভিযুক্ত ধনঞ্জয় রায়, অনিল রায় এবং অজিত রায় এ দিন আলিপুরদুয়ারের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। বিচারপতি তাঁদের ৩ জনের জামিন মঞ্জুর করেন।
তবে এর আগে গ্রামে তল্লাশি করেও পুলিশ কেন তাঁদের ধরতে পারল না বা বাকি অন্য ছ’জন কেন এখনইও অধরা রয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে নানা মহলে। কেন জামিনযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের হল সে প্রশ্ন তুলে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে নানা সংগঠন। আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার আকাশ মেঘারিয়া বলেন, “যে অভিযোগ করা হয়েছে, তার ভিত্তিতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।”
এদিকে অভিযুক্তরা জামিন পেয়ে যাওয়ায় আতঙ্ক তৈরি হয়েছে অভিযোগকারীর পরিবারে। আলিপুরদুয়ারের সরকারি আইনজীবি সমীর দত্ত বলেছেন, “যে সমস্ত ধারায় মামলা করা হয়েছে। তার সবকটি ধারা জামিন যোগ্য স্বাভাবিক কারণে জামিনের বিরোধিতা করা হয়নি।” অভিযুক্তদের আইনজীবী ভাস্কর রায় বলেছেন, “যেহেতু জামিনযোগ্য ধারায় মামলা হয়েছে, জামিন না পাওয়ার প্রশ্ন নেই।”
অভিযোগ, জমি হাতানোর মতলব করে গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা বৌদির সঙ্গে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগ তুলে যুবক ও তাঁর বৌদির পরিবারকে গ্রাম ছাড়া করাবার ফন্দি আটে বলে অভিযোগ। গ্রামের সিপিএম পঞ্চায়েতের উপস্থিতিতে গত রবিবার সালিশি বসে। সেখানে মাথা মুড়িয়ে যুবককে গ্রাম ঘোরানোর ফরমান জারি হয়। ওই যুবক তা না মেনে নিলে গ্রাম ছাড়ার হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। সোমবার যুবককে মাথা ন্যাড়া করে গ্রাম ঘোরানো হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার পুলিশ গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে। মোট নয় জনের বিরুদ্ধে যুবক মাদারিহাট থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
তবে গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যের উপস্থিতিতে সালিশি বসলেও তার নাম উল্লেখ ছিল না। সে দিন সন্ধ্যায় পঞ্চায়েত সদস্যের হাতেই তাদের তুলে দেয় পুলিশ। তবে নয় গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে থানায় যে নালিশ করা হয়েছে তা তোলার জন্য ওই সদস্য চাপ দেন বলে অভিযোগ যুবক ও তার বৌদির পরিবারের। তাদের দলের পঞ্চায়েত সদস্যের ভূমিকা খতিয়ে দেখছে বলে সিপিএম নেতারা জানিয়েছেন। এদিকে, বিষয়টি নিয়ে আলাদা ভাবে খোঁজ খবর শুরু করেছে তৃণমূল নেতৃত্ব। জেলা তৃণমূলের সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, “ব্লক সভাপতিকে ঘটনাটি নিয়ে খোঁজ করে রিপোর্ট দিতে বলেছি। রিপোর্ট হাতে আসার পর প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy