রায়গঞ্জের কুলিক কিংবা কোচবিহারের রসিকবিলের পরে গজলডোবায় পাখিরালয় গড়ে তোলার কথা ভাবছে বন দফতর।
তিস্তার নিম্ন অববাহিকায় প্রাকৃতিক ভারসাম্য অটুট রাখতেই ওই পক্ষিনিবাস গড়ার কথা ভাবা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন।
গজলডোবা এলাকায় প্রতি শীতে অন্তত সত্তর প্রজাতির দেশি-বিদেশের পাখির দেখা মেলে। পাখিরালয়ের ঠিকানা হিসেবে গাজলডোবাকে বেছে নেওয়ার সেটাই প্রধান কারণ। প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা খরচ করে গজলডোবায় পর্যটন হাব তৈরির কথা ইতিমধ্যেই ঘোষমা করে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। পর্যটন টানতে পাখিরালয় সেই তালিকায় নয়া সংযোজন হবে বলেই বন দফতরের দাবি।
ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক কংগ্রেসের দেবপ্রসাদ রায়। তিনি অবশ্য উত্তরবঙ্গের জঙ্গলে চোরাশিকারের ছায়া প্রসঙ্গ তুলে সতর্ক করেন বনকর্তাদের। তাঁর দাবি, ভুটান পাহাড় এবং লাগোয় অসম থেকে ক্রমান্বয়ে চোরাশিকারিদের পা পড়ছে বক্সার জঙ্গলে। আনাগোনা বেড়েছে জঙ্গিদেরও। তিনি বলেন, “বক্সা এখন প্রায় অরক্ষিত। বন পাহারায় থাকা ১৪৬ জন বনকর্মীর পদ শূন্য পড়ে রয়েছে।” তাঁর দাবি, এই অবস্থায় কর্মী নিয়োগ না হলে শুধু বক্সা নয়, উত্তরবঙ্গের জলদাপাড়া এবং গরুমারার মতো জাতীয় উদ্যানও চোরাশিকারিদের কবলে চলে যাবে। ইতিমধ্যেই ৯টি গন্ডার হত্যা তারই প্রথম ধাপ। চোরাশিকার রুখচে আধা সামরিক বাহিনীর সাহায্য চাওয়া হয়েছে বলে বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। তাদের অত্যাধুনিক অস্ত্রের কথা মাথায় রেখেঅ ওই আর্জি জানিয়েছে বন দফতর। স্থানীয় প্রকৃতিপ্রমী সংগঠন ন্যাফ-এর মুখপাত্র তথা ওয়াইল্ড লাইফ বোর্ডের সদস্য অনিমেষ বসু বলেন, “চোরা শিকারিদের দৌরাত্ম্য রুখতে আধা সামারিক বাহিনীর সাহায্যে টহলদারি এবং ক্রাইম ব্যুরোটি খোলা খুবই জরুরি হয়ে পড়েছিল। কেন্দ্রের অনুমোদনের জন্য দুটি বিষয় পাঠানো হচ্ছে।”
এ দিকে, বিশেষ প্যাকেজ চালু করে বনবস্তির বাসিন্দাদের বিকল্প জায়গায় পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে বক্সার জঙ্গলে বাঘের বংশবিস্তারের জন্য নির্বিঘ্ন পরিবেশ তৈরিরও চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী, এ ব্যাপারে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি তৈরির কথা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এলাকার জনপ্রতিনিধিরাও ছাড়াও বন দফতরের পদস্থ কর্তারা ওই কমিটিতে থাকবেন। বাসিন্দাদের সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসূ হলে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদ্যোগ শুরু হবে। বনমন্ত্রী বলেন, “বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পে বেশ কিছু বসতি গড়ে উঠেছে ফলে বাঘের বংশবিস্তারের অনুকূল পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে। বনবস্তি এলাকার আগ্রহী বাসিন্দাদের বিকল্প জায়গায় সমপরিমাণ জমি ও পরিবার পিছু ১০ লক্ষ টাকা করে আর্থিক প্যাকেজের সুবিধে দিয়ে পুর্ণবাসন দেওয়ার ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy