টিএমসিপি-র জেলা সভাপতি নির্ণয় রায় কলকাতায় আত্মীয়ের বিয়েতে ব্যস্ত। তাই কলেজ কর্তৃপক্ষকে চাপ দিয়ে ছাত্র সংসদের কমিটি গঠন পিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে টিএমসিপি-র বিরুদ্ধে। শনিবার শিলিগুড়ি কমার্স কলেজে র ঘটনা।
টিএমসিপি-র দার্জিলিং জেলা সভাপতি নির্ণয়বাবু আত্মীয়ের বিয়েতে কলকাতায় রয়েছেন। দু’দিন ধরে অধ্যক্ষকে বার বার ফোন করে এ দিন ছাত্র সংসদ গঠনের কর্মসূচি স্থগিত রাখতে অনুরোধ করেন। সংগঠনের একাংশের অভিযোগ, তাঁর ঘনিষ্ঠ প্রার্থী নিরধৃতি হালদার নামে এক ছাত্রীকে ওই কলেজে সাধারণ সম্পাদক পদে বসাতে চাইছিলেন নির্ণয়। যদিও টিএমসিপি-র আরেক গোষ্ঠী তথা কলেজে তাঁদের সংগঠনের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের অধিকাংশের তাতে মত ছিল না। ফলে টিএমসিপি-র অন্য গোষ্ঠী অধ্যক্ষের পাশে দাঁড়ান। শেষ পর্যন্ত শনিবার নির্বিঘ্নেই ছাত্র সংসদ গঠিত হয়।
ঘটনার সূত্রপাত এ দিন সকালে। নির্বাচিত প্রতিনিধিরা সকলেই এ দিন কলেজে হাজির হন। এর পরেই এ দিন নির্ণয়বাবুর বিরুদ্ধ পক্ষের কয়েক জন বহিরাগত ছাত্রনেতা কলেজে ঢুকে অধ্যক্ষকে জানিয়ে দেন, নির্ধারিত সূচি মেনে ছাত্র সংসদ গঠন করা না-হলে কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে তাঁরা পুলিশে অভিযোগ জানাবেন। প্রয়োজনে মামলা করবেন বলে হুমকি দেন তাঁরা। ডামাডোলে শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত সময়ের আধ ঘণ্টা পরে ছাত্র সংসদ গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। নির্ণয়বাবুর পছন্দের প্রার্থীকে সাধারণ সম্পাদক পদে না-রেখেই কমিটি গঠন করা হয়। যদিও নিরধৃতিকে কোষাধ্যক্ষ পদ দেওয়া হয়েছিল। তবে তিনি ওই পদ থেকে পরে ইস্তফা দেন। ইস্তফা দিয়েছেন আরও তিন জন। তার মধ্যে একজন সদ্য গঠিত কমিটির ওয়েলফেয়ার সম্পাদক, অপর দু’জন ছাত্রী মেয়েদের কমন রুমের সম্পাদক।
নির্ণয়বাবু বলেন, “আত্মীয়ের বিয়েতে কলকাতায় রয়েছি। এ দিন শিলিগুড়ি কমার্স কলেজে ছাত্র সংসদের কমিটি গঠন হবে বলে আমাকে কেউ আগে জানায়নি। কী ভাবে কী হল, ফিরে গিয়ে বিস্তারিত দেখছি।”
তিনি অধ্যক্ষকে ফোন করেছিলেন কেন? তাঁর প্রতিক্রিয়া, “এ ব্যাপারে কিছু বলতে চাই না।” নিরধৃতি বলেন, “কেন আমাকে সাধারণ সম্পাদক করা হল না বুঝতে পারছি না। এ দিন ছাত্র সংসদ গঠন হবে বলে আগে জানতামও না। বিকেল পাঁচটার কিছু আগে খবর দেওয়া হলে কলেজে যাই। দেখি প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। ততক্ষণে সব কিছু ঠিক হয়েই গিয়েছিল। আমাকে কোষাধ্যক্ষ করা হলেও তা পছন্দ নয়য বলে পদত্যাগ করেছি। আমার সঙ্গে আরও তিন জন পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন।”
তবে পদাধিকার নির্বাচনের সময় যেহেতু তাঁদের সকলের সমর্থন ছিল, তাই কিছুক্ষণ পরেই তাঁদের পদত্যাগের বিষয়টি গ্রাহ্য হবে কি না, কর্তৃপক্ষ খতিয়ে দেখছেন। এমনকী এ দিন নির্ণয়বাবুর বিরোধী পক্ষের হয়ে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী আপ্ত সহায়ক তথা এক সময় দলের ছাত্র সংসদের সভাপতি অমিত দত্তও ময়দানে নামেন বলে পাল্টা অভিযোগ তোলা হয়।
অভিযোগ, অধ্যক্ষকে ফোন করে এ দিনই সংসদ গঠন করতে তিনি অনুরোধ করেন। অমিতবাবু অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘‘মিথ্যে অভিযোগ। আমি ও সবের মধ্যে নেই।”
কলেজ সূত্রেই জানা গিয়েছে, গত ৩১ জানুয়ারি নির্বাচনে কলেজে ২৬ টি আসনের মধ্যে ২৫ টিতেই জেতে টিএমসিপি। পাঁচ দিন আগে তা নোটিস দিয়ে সংসদ গঠনের বিজ্ঞপ্তি জারি হয়। অধ্যক্ষ অসীম মুখোপাধ্যায় বলেন, “নির্ধারিত কর্মসূচি মেনেই এ দিন ছাত্র সংসদ গঠন হয়েছে। এর বাইরে কিছু বলতে পারব না।” কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, মিথিলেশ কুমার শাহ সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy