শিলিগুড়ি তেনজিং নোরগে বাস টার্মিনাসে বক্তৃতা করছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব। —নিজস্ব চিত্র।
উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের অফিসার-কর্মীরা চলতি মাসে মাইনে পাননি। তাই বাস টার্মিনাসের অনুষ্ঠানে সংস্থার চেয়ারম্যান তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব বকেয়া বেতন নিয়ে কিছু বলবেন বলে আশা করেছিলেন প্রায় সকলেই। কিন্তু তিনি মঞ্চের বক্তৃতায় তার উল্লেখ না করায় সংস্থার অফিসার-কর্মীদের অনেকেই ক্ষুব্ধ। বুধবার দুপুরে শিলিগুড়ি তেনজিং নোরগে বাস টার্মিনাসে রাস্তা, বসার ব্যবস্থা, জল, শৌচাগারের মত কয়েকটি প্রকল্প উদ্বোধন করেন মন্ত্রী।
এর পরেই কর্মী মহলে গুঞ্জন শুরু হয়। অনুষ্ঠানের পরে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী অবশ্য বলেন, “কর্মীদের সমস্যার কথা জানি। আমি ব্যক্তিগতভাবে কলকাতা বিভিন্ন মহলে কথা বলছি। পরিবহণ দফতর, অর্থ দফতরে কথা হচ্ছে। অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলব। আমরা সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করছি।” তিনি জানান, আসলে বাম আমলে নিয়ম না মেলে কর্মী নিয়োগ, সঠিক খাতে খরচ হয়নি, সম্পত্তি কমদামে বিক্রি হয়েছে। এতেই নিগমের এই অবস্থা হয়েছে। এর থেকে ঘুরে দাঁড়াতে তো একটু সময় লাগবে। এ দিন যে পরিষেবার সূচনা হয়েছে তাতে শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (এসজেডিএ) এবং পর্যটন দফতর মিলিয়ে প্রায় ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকা খরচ করেছে। মন্ত্রী গৌতমবাবু নিগম তো বটেই এসজেডিএ-র চেয়ারম্যানও।
নিগম সূত্রের খবর, চলতি আর্থিক বছরে নিগমের জন্য রাজ্য সরকার প্রায় ১২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করে। এতে বেতনের জন্য ভর্তুকি ৬৫ কোটি টাকার মত। সংস্থার স্থায়ী কর্মীর সংখ্যা ২২৯৬ জন। পরিবহণ সংস্থার নিজস্ব আয় মাসে ৮ কোটি টাকার মত। বেতন বাবদ মাসে লাগে ৬ কোটি ৭৭ লক্ষ টাকা। অন্যান্য খরচের জন্য মাসে আরও ৬ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা মত। কিন্তু বকেয়া, পেনশন, মামলা চালাতে গিয়ে এ বছরের বরাদ্দ ফুরিয়েছে। নতুন করে ৪৭ কোটি টাকা চাওয়া হলেও এখন তা মেলেনি। তাই সংস্থা এই বছরের প্রথম তিন মাসের বেতন নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
তেনিজং নোরগে বাস টার্মিনাস খোলনলচে পাল্টানোর ঘোষণা করেন। তিনি জানান, টার্মিনালটি ভেঙে বহুতল করা হবে বলে জানান মন্ত্রী। নিগমের দফতর, যাত্রী আবাস ছাড়াও বাণিজ্যিকভাবে তার ব্যবহার করা হবে। সামনে সমস্ত অংশ ফাঁকা করা হবে। তবে কাউকে উচ্ছেদ নয়, সকল ব্যবসায়ীদের পুর্নবাসনের ব্যবস্থা করেই তা হবে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর কাজ করবে। এদিন টার্মিনাসের দুই পাশের অ্যাপ্রোচ রোড, ট্যারমাক ম্যাস্টিক করা, যাত্রীদের বসার ব্যবস্থা, পানীয় জলের জলাধার এবং শৌচালয় সংস্কারের কাজের উদ্বোধন হয়। আগামী দুই মাসের মধ্যে সাড়ে ১৭ লক্ষ টাকা খরচ করে গোটা টার্মিনাস ভবন, সীমানা পাঁচিল রং এবং বিদ্যুতিক সংস্কারের কাজ হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy