Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪

বিজেপি প্রার্থীর গাড়িতে হামলার অভিযোগ

ভোটের মুখে রাজনৈতিক হামলার অভিযোগে উত্তেজনা ছড়াল কোচবিহারে। সোমবার রাত থেকে জেলায় তিনটি রাজনৈতিক সংঘর্ষের অভিযোগে ওঠে। সব ক্ষেত্রেই অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের কর্মী সমর্থকদের বিরুদ্ধে। সোমবার রাতে কোচবিহারের শীতলখুচিতে কর্মিসভা সেরে বাড়ি ফেরার পথে বিজেপি প্রার্থী হেমচন্দ্র বর্মনের গাড়িতে হামলার চেষ্টা হয় বলে অভিযোগ।

ভেটাগুড়িতে পরিদর্শনে ফব বিধায়ক উদয়ন গুহ।

ভেটাগুড়িতে পরিদর্শনে ফব বিধায়ক উদয়ন গুহ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৪ ০১:২৩
Share: Save:

ভোটের মুখে রাজনৈতিক হামলার অভিযোগে উত্তেজনা ছড়াল কোচবিহারে। সোমবার রাত থেকে জেলায় তিনটি রাজনৈতিক সংঘর্ষের অভিযোগে ওঠে। সব ক্ষেত্রেই অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের কর্মী সমর্থকদের বিরুদ্ধে।

সোমবার রাতে কোচবিহারের শীতলখুচিতে কর্মিসভা সেরে বাড়ি ফেরার পথে বিজেপি প্রার্থী হেমচন্দ্র বর্মনের গাড়িতে হামলার চেষ্টা হয় বলে অভিযোগ। ওই রাতেই দিনহাটায় ফরওয়ার্ড ব্লকের পার্টি অফিসে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগও ওঠে। মঙ্গলবার রাতে ঘোকসাডাঙার জয়ন্তীর হাটে সিপিএমের মিছিলে হামলার অভিযোগও উঠেছে। তৃণমূল সব অভিযোগই অস্বীকার করেছে।

কোচবিহারের পুলিশ সুপার অনুপ জায়সবাল বলেন, “পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে নজরদারি চলছে। সব ক্ষেত্রেই অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা শুরু করা হয়েছে। বিজেপি প্রার্থীর ছেলে এবং অন্যদের বিরুদ্ধে হামলায় অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশিও চলছে।”

বিজেপির অভিযোগ, সোমবার রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ শীতলখুচির ফুলবাড়ি এলাকার কর্মিসভা সেরে বাড়ি ফিরছিলেন বিজেপি প্রার্থী হেমচন্দ্রবাবু। ফেরার পথে একটি নির্জন এলাকায় হঠাৎই গাড়িতে কয়েকটি টর্চের আলো পড়তে, চালককে দ্রুত চালানোর নির্দেশ দেন তিনি। তাঁর দাবি, কিছুদূর যাওয়ার পরেই এলাকায় বিজেপি কর্মীদের উপর হামলা শুরুর খবর পান। এরপরে তিনি সরাসরি থানায় চলে যান। প্রার্থীর অভিযোগ, পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়েও কাউকে খুঁজে পায়নি বলে দাবি করে।

এরপরে তিনি নিজের গাড়ি পাঠিয়ে দু’জন কর্মীকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। আক্রান্তদের সঙ্গে ছিলেন হেমচন্দ্রবাবুর ছেলে জনকবাবু ও বিজেপির ব্লক সভাপতি নিরঞ্জন বর্মন। হাসপাতালের ভিতরে ঢুকে তাঁদেরও বেল্ট দিয়ে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। আহতদের সকলকেই প্রাথমিক চিকিৎসার পরে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। হেমচন্দ্রবাবুর অভিযোগ, “পরিকল্পিত ভাবেই আমার উপর হামলার ছক কষা হয়েছিল। আমি গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে গেলে কর্মীদের মারধর করা হয়েছে। হাসপাতালের মধ্যে আমার ছেলেকে মারধর করা হয়। পুলিশের ভূমিকা যথাযথ ছিল না।”

অভিযোগ জানাচ্ছেন হেমচন্দ্র বর্মন। —নিজস্ব চিত্র।

বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক নিখিলরঞ্জন দে দাবি করেন, “বিজেপি জেলায় শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। ২০১১ সালের নির্বাচনে তৃণমূলের হাওয়া থাকলেও জেলার বিভিন্ন বিধানসভা মিলিয়ে বিজেপি ৬১ হাজারের বেশি ভোট পায়। পঞ্চায়েত নির্বাচনেও দলের ফল যথেষ্ট ভাল হয়। বর্তমানে নরেন্দ্র মোদীকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সকলে দেখতে চাইছেন। তাই তৃণমূলের শীর্ষ নেতা নেত্রীরা ক্রমাগত বিজেপির বিরুদ্ধে প্ররোচণা দিচ্ছে। সে কারণেই দলের উপর হামলা শুরু হয়েছে।”

সোমবার রাতেই সোমবার রাতেই দিনহাটার ভেটাগুড়িতে ফরওয়ার্ড ব্লক পার্টি অফিসে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠেছে। বামেদের অভিযোগ, পার্টি অফিসের চেয়ার, টেবিল ভাঙা হয় কিছু পতাকা, ফেস্টুন, কমল গুহের একটি ছবিতেও আগুন লাগিয়ে দেয় কয়েকজন দুষ্কৃতী। দলের জেলা সম্পাদক উদয়ন গুহের অভিযোগ, “মানুষ বুঝতে পারছেন কারা হামলা চালিয়েছে।”

মঙ্গলবার রাতে ঘোকসাডাঙা থানার জয়ন্তীর হাটে সিপিএমের মিছিলে হামলার অভিযোগও উঠেছে তৃণমূলের সমর্থকদের বিরুদ্ধে। সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা প্রাক্তন বনমন্ত্রী অনন্ত রায়ের অভিযোগ, এ দিন রাতে অনুমতি নিয়েই এলাকায় মিছিল চলছিল। সে সময়ে তৃণমূলের সমর্থকরা লাঠি নিয়ে হামলা চালায়। হামলায় দলের তিন সমর্থক জখম হয়েছেন। তাঁদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।

যদিও, তৃণমূলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ পাল্টা দাবি করে বলেন, “বিজেপি কোথাও প্রচারে নেই। এই অবস্থায় যে জামানত বাজেয়াপ্ত হবে তা বুঝতে পারছে। এ জন্যই মিথ্যে অভিযোগ তুলে প্রচারে থাকার জন্য এমন চালাকি করেছেন। অন্য অভিযোগগুলিও রাজনৈতিক কারণে করা হয়েছে।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE