Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

বিক্ষোভের মুখে পর্ষদ-কর্মীরা

বিদ্যুত্‌ বিভ্রাটে বাসিন্দাদের সঙ্গে বিদ্যুত্‌ বণ্টন কোম্পানির কর্মীদের গোলমাল চলছেই কোচবিহারে। গত মঙ্গলবার কোচবিহারের ৩টি এলাকায় পরিষেবা নিয়ে ভোগান্তির অভিযোগকে কেন্দ্র করে ওই গোলমালের ঘটনা ঘটেছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ০১ মে ২০১৪ ০৩:২১
Share: Save:

বিদ্যুত্‌ বিভ্রাটে বাসিন্দাদের সঙ্গে বিদ্যুত্‌ বণ্টন কোম্পানির কর্মীদের গোলমাল চলছেই কোচবিহারে। গত মঙ্গলবার কোচবিহারের ৩টি এলাকায় পরিষেবা নিয়ে ভোগান্তির অভিযোগকে কেন্দ্র করে ওই গোলমালের ঘটনা ঘটেছে। তার মধ্যে কোচবিহার কোতোয়ালির আক্রারহাটে বামনিডাঙার আনন্দবাজার এলাকায় মেরামতিতে যাওয়া বিদ্যুত্‌ বণ্টন কোম্পানির গাড়ি-সহ কর্মীদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখালেন বাসিন্দারা। বিকেলে ঘোকসাডাঙা ও রাতে খোল্টা কালিবাড়ি এলাকাতেও বাসিন্দাদের সঙ্গে সংস্থার কর্মীদের গোলমাল হয়। সংস্থার তরফে আনন্দবাজার এলাকার ঘটনা নিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। গত মাসেই এরকম একটি ঘটনা নিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানান হয়।

এনিয়ে গত দু’মাসে লোডশেডিং, লো-ভোল্টেজের মত বিভ্রাটের জেরে বিদ্যুত্‌ বণ্টন দফতরে বিক্ষোভ, কর্মী হেনস্থার মত শতাধিক ঘটনা ঘটেছে। ফেব্রুয়ারি মাসে ৪৪টি গোলমাল আর হেনস্তার অভিযোগ রয়েছে। পরপর এমন ঘটনায় নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে কর্মীদের। সরব হয়েছেন বণ্টন কোম্পানির ডান-বাম কর্মী সংগঠনের নেতারা। পরিস্থিতির জেরে লিফলেট ছাপিয়ে বাসিন্দাদের সহযোগিতার আর্জি জানানোর কথা ভাবছেন সংস্থার কর্তারা। বিদ্যুত্‌ বণ্টন কোম্পানির কোচবিহারের ডিভিশন্যাল ম্যানেজার বিষ্ণু দত্ত বলেছেন, “অস্বাভাবিক ভাবে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় বিক্ষিপ্ত ভাবে কিছু সমস্যা হচ্ছে। স্থায়ী কর্মী, ঠিকাদার নিযুক্ত কর্মী সকলে দায়িত্বশীল ভাবে কাজ করছেন। তার পরও তাঁদের যে ভাবে বিক্ষোভ, হেনস্তার মুখে পড়তে হচ্ছে, তাতে সমস্যা বাড়ছে।”

সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহারে ১৩২ কেভি খাগরাবাড়ি সাবস্টেশন থেকে জেলার ১০টি ৩৩ কেভি সাবস্টেশনের মাধ্যমে বিদ্যুত্‌ সরবরাহ হয়। কোচবিহার, ঘুঘুমারি, আক্রারহাট, তুফানগঞ্জ, বলরামপুর, বক্সিরহাট, দিনহাটা, মাথাভাঙা, শীতলখুচি, সিতাই ও ভোগরামগুড়ি মিলিয়ে এলাকার গ্রাহক সংখ্যা ৪ লক্ষ। এক বছর আগে গ্রাহক সংখ্যা ছিল ২ লক্ষ ৮০ হাজার। এরমধ্যে আবার ২৬ হাজার শ্যালো, নলকূপ দিয়ে সেচের জল তোলা হচ্ছে। সব মিলিয়ে দুই মাস আগেও যেখানে জেলায় দৈনিক গড়ে ৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা ছিল, সেটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯০ মেগাওয়াট।

বিদ্যু সরবরাহের বিকল্প লাইন, সাবস্টেশনের পরিকাঠামোর তেমন উন্নয়ন না হওয়ায় ওই বিপুল পরিমাণ বর্ধিত চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুত্‌ সরবরাহ করা নিয়ে সমস্যা দেখা দিয়েছে। তাই বিদ্যুত্‌ ঘাটতি না হলেও বিক্ষিপ্ত ভাবে লোডশেডিং হচ্ছে। এ ছাড়াও একই সময়ে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় সরবরাহ লাইনে চাপ বেড়ে লো ভোল্টেজ সমস্যা দেখা দিয়েছে। ঝড়বৃষ্টিতে কিছু এলাকায় খুঁটি উপড়ে তার ছিঁড়ে পড়ায় সমস্যা বাড়ে।

বিদ্যুত্‌ বণ্টন কোম্পানির কয়েক জন আধিকারিক জানান, গড়ে ১০ মেগাওয়াট দৈনিক বিদ্যুতের চাহিদা বাড়লেও সমস্যা হত না। সমস্যা মেটাতে নতুন লাইন বসানো, ১৩২ কেভি সাব স্টেশন সহ অন্য সাব স্টেশনের পরিকাঠামো উন্নয়নের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। রাজ্য বিদ্যুত্‌ পর্ষদ-এর এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন-এর কোচবিহার জেলার সম্পাদক অসিত কুন্ডু বলেন, “দুই মাসে কর্মী হেনস্থা, বিক্ষোভের শতাধিক ঘটনায় উদ্বেগ বেড়েছে। মেরামতের কাজে যেতে কর্মীরা ভয় পাচ্ছেন। সমস্যা এড়াতে সচেতনতা বাড়াতে প্রচার বাড়ানো দরকার।” সিটুর বিদ্যুত্‌ পর্ষদ ওয়ার্কমেন্স ইউনিয়নের কোচবিহার জেলা সম্পাদক বিনয় ভূষণ দে জানিয়েছেন, এভাবে কর্মীদের হেনস্তা করা হলে আখেরে মেরামতের কাজই ব্যাহত হবে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE