পুরবোর্ডের দখল নিয়ে দলের মধ্যে তৈরি হওয়া ‘অশান্তি’ মেটাতে নির্দেশ দিলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার কলকাতায় তৃণমূলের সব বিধায়ক, সাংসদ সহ জেলা নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী তথা দলনেত্রী। সেই বৈঠকেই দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা নেতাদের বালুরঘাট পুরবোর্ডের রাশ হাতে রাখা নিয়ে দলের অন্দরের ‘অশান্তি’ বন্ধের নিদের্শ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। বালুরঘাটে দলের কর্মীদের মধ্যেই অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগের কথা সবই ‘মিডিয়া’র মাধ্যমে তিনি জেনেছেন বলেও বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী জানান বলে, দলের জেলা নেতারা দাবি করেছেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ, দলের কর্মীরা একে অপরের বিরুদ্ধে মামলা করবেন না। মিথ্যে অভিযোগে কাউকে ফাঁসাবেন না। দলের পুরোনো কর্মীদেরও মর্যাদা দিতে হবে।
বালুরঘাট নিয়ে আলাদা ভাবে আলোচনার পরে কৃষিমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসুকে জেলার পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। জেলায় গোষ্ঠী রাজনীতিকে নেত্রী বরদাস্ত করবেন না, এই বার্তা দিতেই পর্যবেক্ষক বসানোর সিদ্ধান্ত বলে জেলা নেতাদের একাংশ মনে করছেন। তাঁদের এক নেতা বলেন, “বৈঠকে নেত্রী বলেন, দলের উপরে কেউ নন। শঙ্করদা (পূর্তমন্ত্রী শঙ্কর চক্রবর্তী) ও বিপ্লবদা’র (জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র) নাম করে, দু’জনকে একসঙ্গে বসে সব ঠিক করে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন নেত্রী।”
এ দিন নেত্রীর নির্দেশ এবং বক্তব্য শুনে দলের এক গোষ্ঠীর মতে, এরপরে বালুরঘাট পুরসভার চেয়ারপার্সন চয়নিকা লাহাকে অপসারণ নিয়ে দলেরই কাউন্সিলরদের বিদ্রোহ, অনাস্থার সিদ্ধান্ত আপাতত স্তিমিত হয়ে যাবে। কেননা এ নিয়ে আর পদক্ষেপ না করার বার্তা এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে ছিল। যদিও, আরেক পক্ষ মনে করছেন, মন্ত্রী শঙ্কর চক্রবর্তী এবং জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র দু’পক্ষকে নিয়ে বসে আলোচনার ভিত্তিতে পুরপ্রধান বদলের সিদ্ধান্তও নিতে পারেন। তবে সে ক্ষেত্রে দলের পর্যবেক্ষক মন্ত্রী পূর্ণেন্দুবাবুকে পুরো প্রক্রিয়ায় সামিল করতে হবে বলে তাদের মতামত। চেয়ারপার্সন চয়নিকা লাহা অবশ্য কলকাতা থেকে বলেন, “এ দিন বৈঠকের পরে আমি আশ্বস্ত্য। নেত্রীর বার্তা মেনে চলব।”
গত কয়েক দিন ধরে বালুরঘাটে পুরসভার কর্তৃত্ব দখল নিয়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ থেকে রক্তপাত সবই হয়েছে। এই ঘটনায় দলনেত্রীর ক্ষোভের কথা জেলা সভাপতি তথা আইন পরিষদীয় সচিব বিপ্লববাবু স্বীকার করে নিয়েছেন। তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী বালুরঘাটের বিষয়টি নিয়ে খুব তাড়াতাড়ি মিটিয়ে সুস্থ পরিবেশ বজায় রাখতে বলেছেন। সেটাই করা হবে। পুরসভার নিয়ে শীঘ্রই আলোচনায় সমস্যা মেটানো হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy