জলপাইগুরি হাসপাতাল সংলগ্ন ফুটপাথে পুলিশ-প্রশাসনের যৌথ অভিযান। বৃহস্পতিবার সন্দীপ পালের তোলা ছবি।
শহরের ফুটপাথ দখলমুক্ত করতে পুলিশ-প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে জলপাইগুড়ি পুরসভার যৌথ অভিযানে প্রকাশ্যে এল তৃণমূল শ্রমিক নেতৃত্বের বিরোধ। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সদর হাসপাতাল সংলগ্ন রাস্তার দু’পাশের ফুটপাথ থেকে গুমটি-দোকান তোলা শুরু হলে ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের প্রশ্নে তৃণমূল নিয়ন্ত্রিত পুর কর্মীদের সঙ্গে দলের শ্রমিক সংগঠনের বচসা বাঁধে। উচ্ছেদে বাধা দেওয়ায় দোলা সেন অনুগামী তৃণমূল ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেসের জেলা সভাপতি-সহ ১৩ জনকে কোতোয়ালি থানার পুলিশ আটক করলেও পরে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। এর প্রতিবাদে সংগঠনের সমর্থকেরা পথ অবরোধ করে আন্দোলনে নামেন। অন্য দিকে পুর কর্মীদের কাজে বাধা দেওয়ার তীব্র সমালোচনা শোনা যায় শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় অনুগামী তৃণমূল শ্রমিক নেতৃত্বের গলায়।
মহকুমাশাসক সীমা হালদার বলেন, “সামান্য বিরোধিতা হলেও ফুটপাথ দখলমুক্ত হয়েছে।” পুরসভার চেয়ারম্যান মোহন বসু বলেন, “শহরের যানজট নিয়ন্ত্রণের জন্য অন্য কোনও পথ খোলা নেই। পুলিশ-প্রশাসনের সহযোগিতায় অভিযান চলবে।” দলের শ্রমিক নেতাদের বিরোধিতা প্রসঙ্গে তাঁর সাফ জবাব, “চেয়ারে বসে রাজনীতি করতে পারব না। সাধারণ মানুষের অভিযোগকে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করেছি।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ পে-লোডার, ট্রাক, বিরাট পুলিশ বাহিনী নিয়ে পুরকর্মীরা অভিযানে নামেন। অভিযোগ, ওই সময়ে অনুগামীদের নিয়ে তৃণমূল ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেসের জেলা সভাপতি মিঠু মোহন্ত গুমটি ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের দাবি তুলে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। পুর কর্মীদের সঙ্গে বাদানুবাদের জেরে কিছু ক্ষণের জন্য কাজ থমকে যায়। মিঠুবাবু এবং তাঁর অনুগামীদের আটক করা হলে ফের কাজ শুরু হয়। এ দিন সকাল ১১টার মধ্যে ফুটপাথ দখলমুক্ত হয়। এর পর থেকেই তৃণমূল ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেসের সমর্থকেরা কদমতলায় ঘণ্টা খানেক পথ অবরোধ করেন। এর জেরে যানজটে নাকাল হতে হয় পথচারীদের। মিঠুবাবু বলেন, “গরিব গুমটি ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করে কেন উচ্ছেদ করা হচ্ছে, সেটাই কেবল জানতে চেয়েছি।”
যদিও দলের জেলা শ্রমিক নেতৃত্বের একাংশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় অনুগামী তৃণমূল ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেস অনুমোদিত নির্মাণ কর্মী সংগঠনের আহ্বায়ক বিকাশ মালাকার। তিনি বলেন, “মিঠুবাবুরা পুরসভার চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলোচনায় বসতে পারতেন। তা না করে রাস্তায় নেমে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করেছেন।”
পুরসভার কর্তারা জানান, ওই রাস্তার ফুটপাথ দখলমুক্ত করার কথা জেলা রোগী কল্যাণ সমিতি থেকে কয়েক বার জানানো হয়। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে তাঁদের কথা হয়। গুমটি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেই ফুটপাথ ফাঁকা করার সিদ্ধান্ত জানানো হয়। পুরসভার চেয়ারম্যান বলেন, “আগে এক বার গুমটি ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তার পরেও ফের দোকান বসেছে। এ ভাবে দফায় দফায় পুনর্বাসন চলতে পারে না। তবু চেষ্টা চলছে।” প্রসঙ্গত ফুটপাথ ছাড়তে বলে পুরসভার নোটিসের কথা গুমটি ব্যবসায়ীদের কেউ অস্বীকার না করলেও গোপাল মণ্ডল বলেন, “চিঠি পেয়েছি। কিন্তু এত দ্রুত উচ্ছেদ হতে হবে জানতাম না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy