গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মেটাতে কোচবিহারের চারটি পুরসভায় সব পক্ষের অনুগামীদের প্রার্থী করার আশ্বাস দিলেন তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব। সোমবার কলকাতায় তৃণমূল ভবনে দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় কোচবিহারের নেতৃত্বকে নিয়ে বৈঠকে বসেন। দলীয় সূত্রের খবর, ওই বৈঠকেই সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা ঠিক হয়। সেখানে দেখা যায়, জেলার তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ গোষ্ঠীর নেতা-কর্মীদের থেকে যেমন প্রার্থী বেছে নেওয়া হয়েছে। তেমন রবীন্দ্রনাথ বিরোধী গোষ্ঠীর নেতৃত্বদের অনুগামীদেরও প্রার্থী হিসেবে নাম রাখা হয়েছে।
কোচবিহার পুরসভায় যেমন রবীন্দ্রনাথ বিরোধী গোষ্ঠীর নেতা বলে পরিচিত দলের সহ সভাপতি আব্দুল জলিল আহমেদের স্ত্রী আমিনা আহমেদ, দলের নেতা ভূষণ সিংহ, দলের সাংসদের ঘনিষ্ঠ অনুগামী তথা তাঁর আপ্ত সহায়ক শিশির সরকার, দলের যুব সংগঠনের সহ সভাপতি রানা বসুর স্ত্রী অন্তরা বসু, আরেক নেতা মিহির গোস্বামীর ঘনিষ্ঠ দেবাশিস হাজরার নাম রয়েছে। তেমনই রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ঘনিষ্ঠ দলের যুব সভাপতি তথা প্রয়াত চেয়ারম্যান বীরেন কুন্ডুর ছেলে শুভজিৎ কুণ্ডু, বীরেনবাবুর স্ত্রী রেবা দেবী, কৃষক সংগঠনের নেতা পরিতোষ করের নাম রয়েছে। বিদায়ী চেয়ারম্যান দীপক ভট্টাচার্যের নামও ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী হিসেবে ঠিক হয়েছে।
দিনহাটা, মাথাভাঙা এবং তুফানগঞ্জের ক্ষেত্রেও একই চিত্র দেখা গিয়েছে। মাথাভাঙায় রবীন্দ্রনাথ বিরোধী নেত্রী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান কল্যাণী পোদ্দারের স্বামী চন্দনবাবুকে প্রার্থী হিসেবে বাছা হয়েছে। দিনহাটায় রবীন্দ্রনাথ বিরোধী অশোক মণ্ডলের নাম যেমন প্রার্থী হিসেবে রয়েছে। তেমনই রবীন্দ্রনাথ ঘনিষ্ঠ অসীম নন্দীকেও প্রার্থী হিসেবে বাছা হয়েছে। তুফানগঞ্জে বিধায়ক অর্ঘ্যরায় প্রধানের ঘনিষ্ঠ একজনের নাম রয়েছে।
ওই তালিকা নিয়ে অবশ্য কেউই এদিন মুখ খুলতে রাজি হনি। রাজ্য নেতৃত্ব বিষয়টি জানাবেন বলে জানিয়েছেন তাঁরা। তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করবেন দলের রাজ্য নেতৃত্ব। তা নিয়ে কলকাতায় বৈঠক হয়েছে। আমাদের মধ্যে কোনও বিরোধ নেই। বিরোধীরা অপপ্রচার করে বিরোধের কথা বলেন। তালিকা ঘোষণা হতেই সবাই একসঙ্গে প্রচারে ঝাপিয়ে পড়ব।” দলের সহ সভাপতি আব্দুল জলিল আহমেদও গোষ্ঠী দ্বন্দ্বের কথা অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “রাজ্য নেতৃত্ব যাকে বাছাই করবেন সেই দলের প্রার্থী এর মধ্যে আবার বিরোধ থাকবে কেন? বাম-বিজেপির বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই দলের মধ্যে কোনও লড়াই নেই।”
দলীয় সূত্রের খবর, গত এক মাস ধরে একাধিকবার পুরসভার প্রার্থী তালিকা নিয়ে বৈঠকে বসেন কোচবিহারের জেলা নেতৃত্ব। ওই বৈঠকে কোনও সমাধান সূত্র বেরোয়নি। দিন দশেক আগে শেষ বৈঠকে দুই পক্ষের অনুগামীরা বচসায় জড়িয়ে পড়েন। ওই ঘটনার পরেই রাজ্য নেতৃত্ব বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করেন দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সব পক্ষকে কলকাতায় ডেকে পাঠান। এদিনই তৃণমূল ভবনে বৈঠকে বসেন তাঁরা। ওই বৈঠকেই সব পক্ষের কাছ থেকে প্রার্থী তালিকা নিয়ে তাঁর মধ্যে থেকে প্রার্থী বাছাই করা হয়। পার্থ চট্টোপাধ্যায় সম্ভাব্য ওই তালিকা সবাইকে মেনে নিতে হবে বলে জানিয়ে দেন। বৈঠকে উপস্থিত দলের এক নেতা বলেন, “সব পক্ষের তালিকা থেকে বেছে বেছে প্রার্থী ঠিক করা হয় ।সে ক্ষেত্রে প্রার্থীদের রাজনৈতিক কেরিয়ার এবং শিক্ষাগত যোগ্যতাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy